০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মানবাধিকার দিবসে বিএনপির সমাবেশের অধিকার হরণ

বিএনপির মানবাধিকার দিবসের র্যালি ঠেকাতে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বাইরে পুলিশের ব্যারিকেড : নয়া দিগন্ত -

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপিকে রাজধানীতে র্যালি করতে দেয়নি পুলিশ। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী র্যালিটি নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগে থেকেই বহু পুলিশ কার্যালয়ের সামনে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপি মহাসচিব কার্যালয়ে আসেন। মানবাধিকার র্যালিটি তার উদ্বোধন করার কথা ছিল। পুলিশের অবস্থানের মধ্যেই দলের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের ভেতর প্রবেশ করে। পুলিশের পক্ষ থেকে গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা নেতাকর্মীদের বলে দেয়া হয় যে, কেউ প্রধান ফটকের বাইরে আসতে পারবে না। পরে নেতাকর্মীরা গেটের ভেতরেই দাঁড়িয়ে থাকে। নিরাপত্তার বাহানায় বিএনপিকে র্যালি করতে দেয়নি পুলিশ। এ সময় ডিএমপি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার এনামুল হক বলেন, ঢাকা শহরে অনেক যানজট। সরকারি অফিস আদালত খোলা। এর মধ্যে র্যালি করলে যান চলাচলে সমস্যা হবে। জনদুর্ভোগ হবে। যেহেতু বিএনপির র্যালি করার অনুমতি নেই তাই করতে দেয়া হবে না। তারপরও করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমকে বলেন, মানবাধিকার দিবসের মতো দিনে পুলিশ র্যালির মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও করতে দিচ্ছে না। দেশের গণতন্ত্র মানবাধিকারের চিত্র এটিই।
র্যালি করতে না দেয়ায় সকাল সাড়ে ১০টায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কী একটা যুদ্ধাবস্থা তৈরি করে রেখেছে পুলিশ আমাদের অফিসের সামনে। এই অফিসের সামনে থেকে জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসটি পালনের জন্য একটা র্যালি করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেইভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম আমরা। আমাদের সরাসরি বলা হয়েছে, নিচে নামলেই আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি বলবÑ আমরা এই মুহূর্তে কোনো মুখোমুখি সঙ্ঘাতে জড়াতে চাই না। আজকের দিনটি ছিল দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে সারা বিশ্বের একটি ইস্যু। সেটা হচ্ছেÑ মানবাধিকার। যেটা গোটা পৃথিবীতে সভ্যসমাজে স্বীকৃত বিষয়। সেই মানবাধিকার রক্ষার জন্য, অধিকারের পক্ষে সোচ্চার হওয়ার জন্য দিনটি বিশ^ব্যাপী পালিত হয়। আমাদের পুলিশ সেই র্যালি করতে না দেয়ায়, আমাদের কথাগুলো বলতে না দেয়ায় আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি, আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি, নিন্দা জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের এখনো বোধোদয় হওয়া উচিতÑ অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। তাদের মনে রাখা উচিত, কখনো সব দরজা বন্ধ করে দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা যাবে না। অবশ্যই সমস্যার সমাধান করতে হলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং জনগণকে রাজনৈতিক চর্চা, ভিন্নমত পোষণ করার অধিকার দিতে হবে। অন্যথায় তারা একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরাচারের মধ্য দিয়ে দেশ শাসন করতে পারবে না। এ দেশের মানুষ কোনো দিন তা মেনে নেয়নি, এখনো মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কারাবন্দী করে প্রাপ্য জামিনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তার প্রাপ্য জামিনটুকুও দেয়া হচ্ছে না, তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এটা সম্পূর্ণভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। আজকে প্রতি মুহূর্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে গত ১০ বছরে প্রায় এক হাজার ৫৯৯ জন মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। যেটাকে তারা নাম দিয়েছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। আমাদের হিসাবে এটা প্রায় দুই হাজারের ওপরে। বাংলাদেশে আজকে শুধু রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকার কারণে ৩৫ লাখ লোককে আসামি ও এক লাখের উপরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গুম করা মানবতাবিরোধী অপরাধ, সেই অপরাধের শিকার হাজারের মতো। আমাদের দলের শুধু নয়, বাইরের অনেক মানুষও একইভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি বড় একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে ভিন্নমত যিনিই পোষণ করবেন তারই অধিকার ক্ষুণœ করা হয়, গ্রেফতার করা হয়, ভয় দেখানো হয়, হুমকি দেয়া হয়, না হলে তাকে গুম করে ফেলা হয়। এই ধরনের বিষয়গুলো অহরহ ঘটছে। আমরা জানি যে, আমাদের বেশ কিছু আইনজীবী, আমাদের ছাত্রনেতা, আমাদের শ্রমিক নেতা, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক অনেকেই নিগৃহীতের মতো নিহত এবং গুম হয়ে গেছেন। এ রকম পরিস্থিতি আমরা অতীতে কখনো লক্ষ্য করিনি। এই ১০ বছরে এনফোর্স ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স আমরা অতীতে কখনো দেখিনি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বৃহস্পতিবার স্কুল-কলেজ খোলা না বন্ধ, সিদ্ধান্ত জানায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি সকল দল-মতের মানুষকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের শফিউল বারী বাবুর জন্মদিনে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করল তার দুই শিশু সন্তান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : আফগান দলে ছয় অলরাউন্ডার কপ-২৯ সম্মেলনে জলবায়ু সহনশীলতা অ্যাডভোকেসি জোরদার করবে বাংলাদেশ : পরিবেশমন্ত্রী সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও নির্যাতন বন্ধের দাবি বিএফইউজে-ডিইউজের সব আদালতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস বাস্তবায়ন করা হবে : প্রধান বিচারপতি ভুল চিকিৎসার অজুহাতে চিকিৎসকের ওপর আক্রমণ ন্যক্কারজনক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা : অস্ট্রেলিয়ায় পর্ন সাইটেও নজরদারি গাজা যুদ্ধে আরো ৩৩ জনের মৃত্যু : নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৫৬৮

সকল