২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পরিবেশের ওপর নির্ভর করছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের গতি ইউএনএইচসিআর

-

জাতিসঙ্ঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের আঞ্চলিক মুখপাত্র ক্যারলিন গ্লুক বলেছেন, রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির ওপর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের গতি নির্ভর করছে। প্রত্যাবাসনের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ঠিক কত দিন লাগবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে প্রত্যাবাসনের প্রথম ধাপ শুরু হলে প্রক্রিয়াটি সুগম হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন অবশ্যই স্বেচ্ছায় হতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে আমরা কাজ করছি। রোহিঙ্গারা পূর্ণ মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে রাখাইনে ফিরতে চায়।
প্রত্যাবাসন নিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ক্যারলিন গ্লুক এসব কথা বলেন। আগামী ২২ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। এ জন্য যাচাই-বাছাই শেষে প্রথম দফায় তিন হাজার ৫৪০ রোহিঙ্গার একটি তালিকার অনুমোদন দিয়েছে দেশটি।
ইউএনএইচসিআরের আঞ্চলিক মুখপাত্র বলেন, মিয়ানমার সরকারকে রাখাইনের পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে হবে, রোহিঙ্গারা যেন সেখানে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে। প্রত্যাবাসনের ধারা অব্যাহত রাখতে মিয়ানমারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
যেকোনো দিন প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে : যেকোনো দিন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক। তিনি বলেছেন, এটা চলমান প্রক্রিয়া, সরকারের পক্ষ থেকে কাজ চলছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এর অগ্রগতি হবে। আমরা মনে করি রোহিঙ্গারা সম্মানের সাথে নিজ দেশে ফিরে যাবে।
গতকাল রাজধানীর বিআইআইএসএস মিলনায়তনে ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট : উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। গ্রিন অ্যান্ড রেড রিসার্চ সেমিনারের আয়োজন করে।
আগামী ২২ আগস্ট থেকে প্রত্যাবাসন শুরু করতে মিয়ানমারের সম্মতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে আমাদের আলোচনা চলছে। আশা করছি যেকোনো দিন থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় দেইনি। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। জনবহুল হওয়ায় বাংলাদেশে এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে স্থানীয়ভাবে পুনর্বাসন করা সম্ভব না। তিনি বলেন, আমরা মনে করেছিলাম প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রগুলো এ সঙ্কটে এগিয়ে আসবে, কিন্তু তা হয়নি। একটি দেশে গণহত্যা হচ্ছে, অথচ বিশ্ব নীরব। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর কোনো উদ্যোগ নেই। কোথায় বিশ্ব, কোথায় বিশ্ব আইন-মানবাধিকার।
বিআইআইএসএসের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট তৈরি করেছে মিয়ানমার। তাদেরই এর সমাধান দিতে হবে। আমরা আশা করছি অন্তত ছোট আকারে হলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হোক, পরে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাটা যেন সম্মানের হয়, নিরাপদ হয়, সেটাও দেখতে হবে।
গ্রিন অ্যান্ড রেড রিসার্চের পরিচালক শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর পরিচালনায় আয়োজিত সেমিনারে বিভিন্ন দূতাবাস ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।


আরো সংবাদ



premium cement