২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুমিল্লার হত্যা মামলায় হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন

-

কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হয়েছে। গতকাল খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন। বিচারপতি মো: রেজাউল হক ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় হাইকোর্টে বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন আবেদন করা হয়েছে। বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন শুনানির জন্য থাকাবস্থায় হাইকোর্টে আবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ওখানে বিচারাধীন থাকলেও হাইকোর্টের এখতিয়ার রয়েছে আবেদন শুনানি করার। তিনি বলেন, কুমিল্লার বিচারিক আদালত এ মামলার জামিন আবেদনের শুনানি দীর্ঘায়িত করছেন। তাই এ পর্যায়ে আমরা জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছি। এখন আবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি মো: রেজাউল হক ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হবে।
বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে একটি নৈশকোচে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। আইকন পরিবহনের ওই বাসটি কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। ওই ঘটনায় আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে সাতজন নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর আরো একজন মারা যান। এ ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নূরুজ্জামান হাওলাদার বাদি হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা করেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জানুয়ারি কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: আলী আকবর শুনানি পেছানোর আদেশ দেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
১১ মামলার শুনানি ১৭ ফেব্রুয়ারি : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতা, হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা ১১ মামলার শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রাজধানীর বকশিবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস শুনানি শেষে আসামিপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে এ দিন ধার্য করেন।
গতকাল মামলাগুলো শুনানির জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু সব মামলার কার্যক্রম খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন জানিয়ে শুনানি পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া।
মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর দারুস সালাম থানার নাশকতার ৮টি, যাত্রাবাড়ী থানার ২টি ও রাষ্ট্রদ্রোহের ১টি মামলা। ১১ মামলার মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। অপর ১০ মামলা ছিল অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে গত বছর ২৫ জানুয়ারি আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি দায়ের করা হয়।
আর ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। পরে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামের এক যাত্রী। ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করা হয় এবং একই বছরের ৬ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অন্য দিকে ২০১৫ সালে দারুস সালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে আটটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়। গত বছরের বিভিন্ন সময়ে মামলাগুলোর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। সব মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। পরে খালেদা জিয়া মামলাগুলোয় আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
নাইকো মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি আজ : রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে আজ সোমবার বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা নাইকো মামলার শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো মামলার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আংশিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি অসমাপ্ত অবস্থায় আদালত ২১ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement