১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স নিয়ে ইসি

আইন স্পষ্ট নয়, তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব

-

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো: রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আইনে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইসি। বিদেশ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিছু করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে আইন স্পষ্ট নয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা বলেছেন, আমরা শুনেছি। আমাদের এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কিছু মনিটরিংয়ে নিজস্ব ক্যাপাসিটি নেই। যদি কেউ তথ্যপ্রমাণসহ আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন তাহলে আমরা আইনের মধ্যে যদি কিছু থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলব। তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া পুলিশ নির্বাচনী কর্মকর্তা কাউকে হয়রানি করতে পারবে না। কেউ করে থাকলে অতিউৎসাহী হয়ে করছে।
রাজধানীর আগারগাঁস্থ নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে গতকাল সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, কেউ যদি সুস্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ দেয়, তাহলে কমিশন বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
একজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি এটা করতে পারেন কি নাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, আর যদি আইনের ভেতর কিছু না থাকে তাহলে আমরা নিজেরা কমিশন বসে দেখব কী করতে পারিÑ সেটা পর্যালোচনা করে দেখে তারপর সিদ্ধান্ত।
এই কমিশনার বলেন, যদি কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হন তাহলে অবশ্যই তা জেলে বা পলাতক থাকার কথা। জেলে থাকলে উনি এটা করতে পারতেন না। কেউ জেলে থাকলে এ ধরনের কোনো কাজ করার কথা নয়। জেল থেকে যদি উনি জামিনে আসতেন, তাহলে কোনো অসুবিধা ছিল না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আইনের কাভারেজ কতটুকু, কী আছেÑ এগুলো দেখে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
খালেদা জিয়া নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন কি না এ বিষয়ে রিটকারিকে এক মাসের মধ্যে জানাতে আদালত থেকে বলা হয়েছে, ইসি তা জানিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে আদালত অবমাননা করব না। আমরা এক মাসের মধ্যেই জানাবো। তবে বিষয়টি ইসি সচিবালয় ভালো বলতে পারবে।
তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও গায়েবি মামলার তালিকার বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, তালিকাটি আমি দেখিনি। আমরা দেখে সত্যিকার অর্থে যদি কোনো হয়রানিমূলক মামলা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেবোÑ যেন হয়রানি না করে। কারণ হয়রানি করলে নির্বাচনের পরিবেশ কিছুটা হলেও বিনষ্ট হবে।
নির্বাচনী প্রচারণা সম্পর্কে তিনি বলেন, রোববার ১৮ নভেম্বরের মধ্যে সব ধরনের আগাম নির্বাচনী প্রচারণা সরিয়ে ফেলতে হবে। যদি কেউ সরিয়ে না ফেলেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘থ্যাংক ইউ পিএম’ ডিজিটাল প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা হলে অবস্যই ব্যবস্থা নেবো। কিন্তু এখন একটা সরকার আছে, সেই সরকারের উন্নয়নগুলো তুলে ধরছে বিভিন্নভাবে এবং বেসরকারি টেলিভিশনেও। সেখানে তারা সøট কিনে বা টিভিগুলো স্বপ্রণোদিত হয়ে করতে পারে। টেলিভিশনের একটা নিজস্ব নীতিমালা আছে, সেখানে হস্তক্ষেপ করা কি ঠিক হবে? আপনারাই বলেন।
সরকার প্রচারণা করতে পারে কি না, এখন যদি তাই হয় তাহলে কোনো নিউজই আপনারা ছাপাতে পারবেন না। যেমন রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উন্নয়নের কাজ এত শতাংশ হয়েছে এটাতো সরকারের পক্ষে প্রচারণা হয়ে যাবে। এটা কি একই বিষয়? তিনি বলেন, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ না করে অন্য রাজনৈতিক দল তাদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন, আপনারা কি সেটা সম্প্রচার করবেন না। আমরা কি সে ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি? আমরা কোনোভাবেই ডিজিটাল প্রচারণার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেইনি। আমরা শুধু বলেছি নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে না এখন। এখন আপনারা যদি মনে করেন এটা নির্বাচনী প্রচারণা তাহলে আমাদের বসতে হবে। কেউ অভিযোগ করলে আমাদের দেখতে হবে। আইন দেখে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সত্যি সত্যি নির্বাচনী প্রচারণা কি না। নির্বাচনী প্রচারণা যদি হয় তাহলে আমরা এটা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেবো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ করা হবে কি না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসির এই কমিশনার বলেন, ইউটিউবে অনেক কিছু ব্রডকাস্ট করা যায়। এটা নিয়ন্ত্রণ করার কথা বা বন্ধ করার কথা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। বন্ধ করার অনেক চেষ্টা বিভিন্ন জায়গায় নেয়া হয়েছে, আসলে পারা যায় না।
প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের পুলিশ ফোন দিয়ে হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিশন থেকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। যদি কেউ এই ধরনের কাজ করেন তাহলে অতিউৎসাহী হয়ে কাজ করছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় নির্দেশনায় কারো রাজনৈতিক কী পরিচয় সেটা আমরা জানতে বলিনি। আমাদের নির্দেশনা হলো যারা নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত হবে তাদের ব্যাপারে কোনো ধরনের আইনি সমস্যা আছে কি না। কারণ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকেও এই নির্বাচনী কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত হবে। প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ জনবল কাজ করবে দু’দিনের জন্য। তিনি বলেন, আপনারা নিউজ করতেছেন আমরা সেগুলো ভেরিফাইড করব। আপনাদের নিউজের আমরা সত্যতা পেলে অ্যাকশন নেবো। হয়রানি না করার জন্য আমরা অলরেডি সব প্রশাসনের সব লোককে বলেছি।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল