১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি : আগুন নিয়ে খেলবেন না

যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি : আগুন নিয়ে খেলবেন না - ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনার কারণে চীনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া ও চীন উভয়েই। মস্কো বলছে যে ওয়াশিংটন আগুন নিয়ে খেলছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগেই হুমকি দিয়েছিল ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকারী রাশিয়ার কাছ থেকে কোন দেশ অস্ত্র কিনলে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

সম্প্রতি চীন রাশিয়ার কাছ থেকে সুখই যুদ্ধ বিমান এবং ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে। তাই চীনের সেনাবাহিনীর ক্রয় শাখা এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন। এসবের মধ্যে রয়েছে ১০টি সুখই যুদ্ধবিমান এবং এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র।

এই বিভাগ এবং তার পরিচালক লি শাংফু এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোন রপ্তানি লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবেন না এবং মার্কিন অর্থ ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারবেন না।

ওয়াশিংটন বলছে, রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে চীন রাশিয়ার উপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে।

২০১৪ সালে ইউক্রেনে মস্কোর হস্তক্ষেপের জবাবে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞায় তখন যোগ দেয়নি চীন।

এতে ক্ষুব্ধ চীনের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেছেন, তারা ট্রাম্প প্রশাসনকে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার জন্য জোর আহ্বান জানাচ্ছেন - অন্যথায় তাদেরকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

বেইজিং-এ বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া খুবই কঠোর। কিন্তু বেইজিং কতোটা ক্ষুব্ধ হয়েছে সেটা পরিষ্কার হবে ওয়াশিংটনের সাথে তাদের সম্পর্ক কী দাঁড়াবে সেটা প্রকাশ করার পর।

চীনও এখন উন্নত মানের সামরিক অস্ত্র তৈরি করছে। কিন্তু তারপরেও তারা আমেরিকার কাছে থেকে সর্বাধুনিক সমরাস্ত্র কিনতে আগ্রহী। এবিষয়ে রাশিয়া আগে খুব একটা আগ্রহী ছিল না। কিন্তু এখন এই প্রযুক্তি বেইজিং-এর সাথে শেয়ার করতে মস্কো আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলছেন, এখানে আসল লক্ষ্য রাশিয়া - চীন নয়।

"মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে এসব বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে এমন সম্ভাবনা কম, বরং এর ফলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে - চীন ও রাশিয়ার সহযোগিতা আরো বেড়ে যেতে পারে," বলেন তিনি।

"কারণ চীন ও রাশিয়া উভয়ের সাথেই এখন মার্কিন সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে - আর এ দুটি দেশই ওয়াশিংটনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ঠেকাতে চায়।" চীন ও রাশিয়া মিলে সম্প্রতি যৌথ মহড়াও চালিয়েছে যাকে শীতল যুদ্ধ অবসানের পর সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।

রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কিনলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে
রাশিয়ার কাছ থেকে এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম কিনলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে ভারতকে। শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসনের এক আধিকারিক একথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবারই এ ধরনের একটি আদেশনামায় সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উল্লেখ্য, ওই আদেশনামায় সই করার পরেই চীনের একটি দপ্তর ও তার ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা। কারণ চীনের ইক্যুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ইডিডি) রাশিয়ার কাছ থেকে সুখোই এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও এস-৪০০ ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছিল। মূলত, রাশিয়ার উপর বিধিনিষেধ চাপাতেই ওই আইন নিয়ে এসেছে আমেরিকা। কিন্তু ভারত যেহেতু রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনবে বলে স্থির করেছে, তাই ভারতও সেই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে যাবে।

অন্যদিকে, চীনের উপর সামরিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বেইজিং। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এহেন পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেছেন, ‘আমেরিকা যা করেছে তাতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করেছে। যার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক ও দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভুল স্বীকার করে আমেরিকাকে সেই নিষেধাজ্ঞাকে প্রত্যাহার করার আর্জি জানাচ্ছি। তা না হলে ওয়াশিংটনকে যাবতীয় ফল ভুগতে হবে।’ ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ এবং অন্যান্য কার্যকলাপের জন্য রাশিয়াকে শাস্তি দিতেই উন্নয়নশীল দেশগুলিকে টার্গেট করছে আমেরিকা। এবং সেজন্য ‘কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভারসারিজ থ্রু সাংশন অ্যাক্ট অব ২০১৭’ (কাটসা)-কে হাতিয়ার করছেন ট্রাম্প।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল