০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চলে গেলেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ

-

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী, একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শনিবার রাত সাড়ে ১২টায় রাজধানীর বারিধারায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। স্বামী মেজর (অব:) আবুল বাশার রাহমত উল্যাহ ব্যবসায়ী, মেয়ে নাহিদ রাহমত উল্যাহ থাকেন লন্ডনে আর ছেলে এ কে এম সায়েফ রাহমত উল্যাহ যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে এখন কানাডায় থাকেন। গতকাল রোববার ( ২৪ মার্চ) বাদ জোহর বারিধারায় পার্ক মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শাহনাজ রহমতুল্লাহর কাছ থেকে জীবদ্দশায় জানা যায় তার জন্ম ১৯৫৩ সালের ২ জানুয়ারি ঢাকায়। তার বাবা এম ফজলুল হক, মা আসিয়া হক। মায়ের হাতেই ছোটবেলায় শাহনাজের গানের হাতেখড়ি। পরিবারের সবার কাছে তিনি ছিলেন আদরের শাহীন। ছোটবেলাতেই তিনি শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেন। সেই থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নিয়মিত গান করেছেন। টেলিভিশনে গান গাইতে শুরু করেন ১৯৬৪ সাল থেকে। দেশের গান যেমন তার কণ্ঠে হয়েছে জনপ্রিয় ঠিক তেমনি চলচ্চিত্রের গানও হয়েছে সমান জনপ্রিয়। শাহনাজ রহমতুল্লাহ সত্তরের দশকে অনেক উর্দু গীত ও গজল গেয়েছেন। প্রখ্যাত গজলশিল্পী মেহেদী হাসানের কাছে তিনি গজল শিখেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি আবুল বাশার রাহমত উল্যার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক মেয়ে নাহিদ রাহমত উল্যাহ ও এক ছেলে এ কে এম সায়েফ রাহমত উল্যাহ। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, জাপান বাংলাদেশ কালচারাল ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু সম্মানায় ভূষিত হয়েছেন। শাহনাজ রহমতুল্লাহ যখন গান শুনতেন, তখন মেহেদী হাসান, নূরজাহান, জগজিৎ সিংয়ের গজল ও গান শুনতেন। শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠে এ দেশের মানুষ শুনে এসেছেন কালজয়ী গান ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘আমার দেশের মাটির গন্ধে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে আমায় বল’, ‘সাগরের তীর থেকে’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘খোলা জানালা’, ‘পারি না ভুলে যেতে’, ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে’ ইত্যাদি। আরো অসংখ্য গান রয়েছে তার গাওয়া। শাহনাজ রহমতুল্লাহ প্রথম উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছে। এরপর তিনি ওস্তাদ মনির হোসেন, গজল সম্রাট মেহেদী হাসান, শহীদ আলতাফ মাহমুদের কাছেও গানে তালিম নেন। বিয়ের পরে তিনটি চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেছিলেন শাহনাজ। খান আতাউর রহমানের সুরে ‘আবার তোরা মানুষ হ’, আলাউদ্দীন আলীর সুরে ‘সাক্ষী’ ও আনোয়ার পারভেজের সুরে ‘ছুটির ফাঁদে’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেন। এর মধ্যে ‘ছুটির ফাঁদে’ চলচ্চিত্রে গাওয়া ‘সাগরের সৈকতে কে যেন দূর থেকে’ গানটির জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। পরে ‘ঘুড্ডি’ সিনেমাতে গান গাওয়ার জন্য তিনি দ্বিতীয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। শাহনাজ রহমতুল্লাহর ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন এ দেশের প্রখ্যাত একজন সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। আরেক ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন এ দেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া চারটি গান স্থান পায়। এর মধ্যে আনোয়ার পারভেজের সুর করা দু’টি গান, খান আতাউর রহমান, আবদুল লতিফের সুরে দু’টি ভিন্ন গান রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
গ্রিড লাইনের ত্রুটিতে সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ভুক্তভোগী নারী ও তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদ বাড্ডায় নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কথিত স্বামী পলাতক গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করবে খতমে নবুওয়ত ঝিনাইদহ-১ আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়েব আলী জাতীয় গ্রিডে ত্রু‌টি, সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাবিতে নিয়মিত ২০ আসন বরাদ্দ রেকর্ড গড়ে সাদিক খান আবারো লন্ডনের মেয়র আগামী ২ মাসের মধ্যে ভাঙ্গা-খুলনা-যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে : জিল্লুল হাকিম ফতুল্লায় ব্যবসায়ী অপহরণ, গ্রেফতার ৭ তাপদাহের কারণে গোসল করতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

সকল