২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঐতিহ্য বিকিয়ে জবির নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

-

রাজধানীর ১৬০ বছরের পুরনো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বতর্মান ক্যাম্পাস বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। বুধবার একটি জাতীয় পত্রিকায় ‘একনেকে ৩২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ঢাকার কেরানীগঞ্জে নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের পর নতুন ক্যাম্পাসের বিনিময়ে বিশ্ববিদালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের জায়গা সরকারকে ছেড়ে দেয়ার সংবাদ প্রকাশ হলে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যজোট একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক একে এম মনিরুজ্জামান বলেন, কেরাণীগঞ্জের নতুন ক্যাম্পাসটি আমাদের মূল ক্যাম্পাস হবে। তবে ক্যাম্পাস আমাদের দুইটাই থাকবে এখানেও থাকবে, ওখানেও থাকবে। আজ পর্যন্ত কোন সরকারের বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নেয়ার রেকর্ড নেই। কলকতা বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক ক্যাম্পাস আছে। বৃহস্পতিবার আমরা শিক্ষক সমিতি উপাচার্যেও সাথে দেখা করে বিস্তারিত জানাবো।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের সভাপতি অধ্যাপক ড.আইনুল ইসলাম বলেন, একনেকে এ ধরনের শর্ত দিয়ে প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার কথা না। যদি শর্ত দিয়ে থাকে তবে এটি ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো ক্যাম্পাস ছেড়ে নতুন ক্যাম্পাসে যাওয়া ভাল হবে না। এই পুরনো ক্যাম্পাস রেখেই নতুন ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ হতে পারত।

প্রগতিশীল ঐক্যজোটের নেতারা পুরানো ক্যাম্পাসের বিনিময়ে নতুন ক্যাম্পাস নির্মানের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে বলেন, জগন্নাথ বিশ্বাবদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাস বহাল রেখেই নতুন ক্যাম্পাসে আবাসিক হল নির্মাণের এবং আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কার্যক্রম চালাতে হবে। তারা বলেন, পৃথিবীর বহু বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাধিক ক্যাম্পাস রয়েছে। জগন্নাথ বিশ্বাবদ্যালয়েও একই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে হবে। অনেক লড়াই , সংগ্রাম আর ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী এই ক্যাম্পাসকে জগন্নাথ বিশ্বাবদ্যালয়ের অংশ হিসেবে রেখেই নতুন ক্যাম্পাসে আবাসিক হল নির্মাণের এবং আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কার্যক্রম চালাতে হবে। তা না করে বর্তমান ক্যাম্পাসের জায়গা নিয়ে কোন ধরনের চক্রান্ত করা হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।

জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, ২৭/৪ নামক যে কালো ধারার মাধ্যমে একটি অসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় রুপ নিয়েছিল জবি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে ধারা বাতিল করে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার জন্য এই মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে এই সরকারের কোন বিকল্প নেই। তবে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল পুরাতন ক্যাম্পাস ছেড়ে নতুন ক্যাম্পাসে যাওয়ার যে কোন সিদ্ধান্ত না মেনে নেয়ার কথা জানিয়েছেন।

এবিষয়ে উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, এই মেগা প্রকল্পটি আগামী দুই বছরের মধ্যে শেষ হবে। ইতোমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। বর্তমান ক্যাম্পাস ছাড়ার শর্তের ব্যাপারে তিনি বলেন, আগে নতুন ক্যাম্পাস হউক বাকিটা পরে দেখা যাবে। সরকারের জায়গা সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।


আরো সংবাদ



premium cement