২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
শ্রমবাজারের সঙ্কট গভীর হচ্ছে

দায়িত্বশীলদের জবাবদিহি চাই

-

বাংলাদেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সর্বপ্রধান দু’টি খাত হলোÑ তৈরী পোশাক শিল্প আর প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। প্রবাসে কর্মসংস্থানের মাত্রা নির্ভর করে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের পরিসরের ওপর।
পত্রিকার খবর, আমাদের দেশের জন্য শ্রমবাজার বিদেশে ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। একটি সহযোগী দৈনিকের লিড নিউজে উল্লেখ করা হয়েছে, এ সমস্যার কারণ অনেক গভীরে প্রোথিত। কোনো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় না বিভিন্ন দেশে আমাদের জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে দেশের প্রায় সব কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। অথচ আজো জনশক্তির মতো এত গুরুত্বপূর্ণ খাতটির কাজ চলছে পুরনো দিনের অ্যানালগ পদ্ধতিতে। এতে দালালসহ কায়েমি স্বার্থবাদী চক্রের ফায়দা তোলার পথ সুগম হয়েছে। এ ছাড়া, অভিবাসনবাবদ ব্যয় হচ্ছে বেশি। তদুপরি, অতিরিক্ত টাকা খরচ করে প্রবাসে গিয়েও বাংলাদেশী নাগরিকেরা অতিরিক্ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা হয় না। ওয়াকিবহাল সূত্র জানিয়েছে, এহেন অনভিপ্রেত পরিস্থিতি বদলাতে সমন্বিত অনলাইন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা অপরিহার্য।
আলোচ্য প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সৌদি আরব হচ্ছে বাংলাদেশের বৃহত্তম শ্রমবাজার। অথচ সেখানে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি পাঠানো অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের শ্রমিক নেয়ার কোটা কমিয়ে দিয়েছেন। সে দেশে নারী-কর্মীদের চাহিদা থাকলেও তাদের অনেকের প্রতি অবাঞ্ছিত আচরণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের আরেকটি প্রধান শ্রমবাজার হচ্ছে আরব আমিরাত। কিন্তু তা বন্ধ রয়েছে বহু দিন ধরে। তবুও কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নেই এ বিষয়ে। মালয়েশিয়াতে আবার কিছু জনশক্তি নেয়ার কথা শোনা গেলেও গত বছর দেশটিতে সরকার পরিবর্তনের পর বিদেশী শ্রমিক নেয়া বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য বড় বড় শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে আছে; তবুও নতুন বাজার অনুসন্ধানের ফলপ্রসূ উদ্যোগ দেখা যায় না। কোনো কোনো দেশে বাংলাদেশের শ্রমজীবীরা নির্যাতিত হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। বিভিন্ন দেশে বৈধ উপায়ে যাওয়া বাংলাদেশী কর্মীরাও ‘অবৈধ’ হয়ে পড়ছেন বিধায় তাদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ দিকে, কিছু বাংলাদেশী নাগরিক পর্যটক বা শিক্ষার্থী হিসেবে ভিসা নিয়ে বিদেশে গিয়ে থেকে যাচ্ছেন। এতে বাংলাদেশ সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, লাগামছাড়া অভিবাসন ব্যয় একটা বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নিয়োগকারীরা ‘বিনা পয়সা’য় এ দেশ থেকে কর্মী নেয়ার কথা শুনে থাকেন। পরে তারা জানতে পারেন, বাংলাদেশী শ্রমিকদের মাথাপিছু পাঁচ-ছয় লাখ টাকা দিয়ে বিদেশ যেতে হচ্ছে। সৌদি আরবের মতো কোনো কোনো দেশে জনবল প্রেরণের জন্য আরো বেশি অর্থ আদায় করা হচ্ছে। অনেক নিয়োগকর্তা শ্রমিকদের পারমিটের মেয়াদ বাড়াচ্ছেন না। কিছু শ্রমিক বিদেশে গিয়ে নির্ধারিত ফি না দেয়া এবং নির্ধারিত স্থানে কাজ না করে অন্যত্র অবৈধভাবে চলে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বৈধ পাসপোর্ট অবৈধ শ্রমিকের কাছে বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো এত কিছু সত্ত্বেও নির্বিকার থাকে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার স্বার্থে একক সিস্টেম চালু করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, জনশক্তি প্রেরক এজেন্সিগুলোর সংগঠন ‘বায়রা’র প্রায় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা।
বেকারত্ব দূরীকরণ এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ আমাদের জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রবাসী শ্রমজীবীদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা সবার জানা। বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজারে বিরাজমান সমস্যাগুলো শতভাগ সমাধান করা হয়তো সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশের সরকার এবং জনশক্তি ব্যবসায়ী মহলসহ সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ববোধ থাকলে তারা অবশ্যই তৎপর হবেন। তখন জনশক্তি রফতানি পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতির আশা করা যায়। এ জন্য সর্বাগ্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইলি হামলায় আহত শিশুর মুখে ২০০ সেলাই বিষখালীতে মৎস্য বিভাগের অভিযান : জেলে নিখোঁজ, আহত ২ দক্ষিণ এশিয়ার যে শহরগুলোর তাপমাত্রা এখন সর্বোচ্চ গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানে অটোরিকশার ধাক্কায় হতাহত ৫

সকল