ঢাকা মহানগরীতে গণপরিবহনসঙ্কট দীর্ঘ দিনের। বিশেষত, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ এ ক্ষেত্রে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে এ নগরীর কিছু অংশে সার্কুলার রুটে বাস চালু করার পর এবার অন্য রুটে নামানো হলো ১৪টি দোতলা বাস। তবে এসব বাসের স্বল্পসংখ্যা এবং অধিক ভাড়া নিয়ে শুরুতেই ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। তাই সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ সীমিত আয়ের বিপুল সংখ্যক মানুষের কতটা কাজে আসবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।
পত্রিকার খবরে প্রকাশ, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৪টি দ্বিতল বাস নামিয়েছে বিআরটিসি। একেকটি বাসের আসন ৭০টি করে। সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা আর বিমানবন্দর থেকে মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা পর্যন্ত ভাড়া ৪৫ টাকা। বিমানবন্দর থেকে বাড্ডা-প্রগতি সরণি-রামপুরা-মালিবাগ হয়ে মতিঝিল রুটে গণপরিবহনের সংখ্যা এমনিতেই বেশি নয়। গত মার্চ মাসে এটা আরো কমে গেলে যাত্রীদের ভোগান্তি যায় বেড়ে। এই প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় হতে পারে ১৪টি দোতলা বাসের নিয়মিত চলাচল নিশ্চিত করা হলে।
তবে গণপরিবহনের অপ্রতুলতা যাত্রীরা যথাযথ সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধক হয়ে আছে। এর আগেও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা বা বিআরটিসি কয়েক দফায় অনেকগুলো একতলা ও দোতলা বাস নামিয়েছে ঢাকা শহরে; কিন্তু এগুলোর বিরাট অংশই জনগণের সেবায় না লাগিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে মুনাফার স্বার্থে। এ ছাড়াও অনেকসময় বেশ কয়েকটি বাস নানা কারণে অচল হয়ে পড়ে এবং এগুলোকে মেরামত করার জন্য সময়ের দরকার হয়। এ অবস্থায় বাসের সংখ্যা কার্যত অনেক কমে যায়। এ দিকে, আগে উত্তরা থেকে গুলিস্তান হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক এবং মতিঝিল রুটে তিনটি বেসরকারি কোম্পানির গণপরিবহন চলছিল; কিন্তু ১৯ মার্চ একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয়া এবং তার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় একটি কোম্পানির বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুরান ঢাকাগামী বাসটিও বন্ধ হয়ে গেছে। অন্য দিকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যে বাস সার্ভিস রয়েছে আবদুল্লাহপুর-মতিঝিল রুটে, তা সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয়বহুল। এই পরিবহনে সর্বনিম্ন ভাড়া ৬০ টাকা আর মতিঝিল-আব্দুল্লাহপুর ভাড়া ১০০ টাকা। স্বল্পদূরত্বের জন্য এ ভাড়া অনেক বেশি তো বটেই, তদুপরি নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পক্ষে এই পরিবহনের সেবা পাওয়া অসম্ভব।
এমন অবস্থায়, বিমানবন্দর-মতিঝিল রুটে ২৭ মার্চ ১০টি এবং এক সপ্তাহ পরে আরো চারটি দোতলা বাস চালু করা হয়েছে। বাস্তবে এতে পরিবহনসমস্যা খুব বেশি লাঘব হয়নি। যাত্রীদের মতে, অতিরিক্ত ভাড়া ছাড়াও বাসের সংখ্যা খুব কম। ফলে একটি বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয় অনেকক্ষণ। বাস শেষ অবধি এলেও ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করে অনেকেই উঠতে পারেন না। বাস থেকে যাত্রীদের নামার সঙ্কেতদানের ব্যবস্থা থাকার কথা থাকলেও তা এখনো করা হয়নি। নতুন টিকিট কাউন্টারও তৈরি হয়নি। যাত্রীদের সুবিধার্থে ভাড়ার কোনো তালিকাও থাকে না। ফলে ভাড়া নিয়ে বাগি¦তণ্ডা দেখা যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ রুটে আরো ৪০টি বাস যোগ হবে। কাউন্টার বসানোর জায়গা নির্ধারণের আশ্বাসও দেয়া হয়েছে।
আমরা মনে করি, রাজধানীর রুটগুলোর চাহিদা মোতাবেক পর্যাপ্ত বাসের সংখ্যা নির্ধারণ করে ভাড়া সহনীয় মাত্রায় রাখা উচিত। এ ছাড়া, যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধ এবং যাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যা অচিরেই দূর করা প্রয়োজন। সেই সাথে বিআরটিসি বাসের যথাযথ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা