০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বেহাল দশা

এখনই রাশ টেনে ধরতে হবে

-

চিকিৎসা পেশা আর দশটা পেশার সাথে তুলনীয় নয়। একেবারেই ভিন্নমাত্রার। অসুস্থ হলে মানুষ ছুটে যান চিকিৎসকের কাছে। পেতে চান সঠিক চিকিৎসাসেবা ও সহানুভূতি। একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে রোগীরা এর ব্যতিক্রম কখনোই প্রত্যাশা করেন না; কিন্তু আমাদের দেশে চিকিৎসকের কাছ থেকে রোগীরা কাক্সিক্ষত আচরণ পাচ্ছেন কি না সে ব্যাপারে রয়েছে প্রশ্ন।
চিকিৎসা পেশা সেবাধর্মী। শুধু সেবামূলক পেশা বললে কম বলা হয়, মূলত এটি সেবামূলক পেশার মধ্যেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জনস্বাস্থ্যের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। চিকিৎসকদের থাকতে হয় উঁচুমানের সেবার মানসিকতা। হতে হয় সংবেদনশীল। বাণিজ্যিক দিক তাদের কাছে কখনোই মুখ্য হয়ে উঠবে না।
দেশে তিন দশক আগেও স্বাস্থ্যসেবা খাতে আধুকিতার ছোঁয়া ছিল না বললেই চলে। গত দুই দশকে এ খাতে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে অগ্রগতির মাত্রা প্রশংসার দাবি রাখে। সরকারি পর্যায়েও যে অগ্রগতি হয়নি তা নয়, হয়েছে। তবে এখনো কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছেনি।
বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা পাওয়া ব্যয়বহুল। দেশের গরিব জনগোষ্ঠীর পক্ষে সেই ব্যয় বহন করা সামর্থ্যরে বাইরে। এ জন্য বিশাল এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল সরকারি হাসপাতাল। সারা দেশে গড়ে ওঠা সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা পেতে হাজার হাজার রোগী ভিড় করেন; কিন্তু তারা বেশির ভাগ সময় পান না চিকিৎসকদের। তাদের কর্মস্থলে পাওয়া যায় না, এমন অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।
কাজের তালিকায় ডাক্তারদের নাম আছে, অথচ কর্মস্থলে তারা অনুপস্থিত। এটি দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর চিত্র। অর্থাৎ হাসপাতালে যান না অনেক ডাক্তার। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে তারা প্রাইভেট প্র্যাকটিসে বেশি মনোযোগী। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা চরম হয়রানির শিকার ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শীর্ষ কর্মকর্তারা মাসের বেশির ভাগ সময়ই অনুপস্থিত থাকেন। এ সুযোগে কনসালট্যান্ট ও মেডিক্যাল অফিসাররাও কর্মস্থলে ঠিকমতো হাজির থাকেন না। অনেকে সপ্তাহে দু-এক দিন এসে হাজিরা খাতায় সই করে পুরো মাস অনুপস্থিত থাকেন; অথচ বেতন তোলেন পুরো মাসের।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীসহ আট জেলায় অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় হাসপাতালগুলোতে ৪০ শতাংশ চিকিৎসকই কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। উপজেলা পর্যায়ে অনুপস্থিতির হার আরো বেশিÑ ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একযোগে ১১ সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অভিযান চালায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। এর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর তিনটি, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়ার একটি করে। পাবনার রয়েছে দু’টি হাসপাতাল। বেলা ২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট দলের সমন্বয়ক ও প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী। ঢাকাসহ আট জেলার ১১টি সরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনার সময় চিকিৎসকদের কাজের সূচি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২৩০ চিকিৎসকের মধ্যে ৯২ জনই অনুপস্থিত। ঢাকার বাইরের সাত জেলার যে হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালানো হয়, সেখানে ১৩১ চিকিৎসকের মধ্যে ৮১ জনই অনুপস্থিত ছিলেন। অভিযানের সময় শুধু রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সব চিকিৎসককে উপস্থিত পাওয়া যায়।
সরকারি স্বাস্থ্য খাতের এ অবক্ষয় অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবসেবার চেতনা বেশির ভাগ চিকিৎসক পরিত্যাগ করায় এমন অবক্ষয় হয়েছে বলে আমরা মনে করি। সরকারি পর্যায়ে চিকিৎসা খাতের এমন পরিস্থিতি মেনে নেয়া যায় না। এখনই এর রাশ টেনে ধরতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, রিমান্ডে নেয়া হবে : ডিবি বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসকের কপাল ফাটিয়ে দিলেন ইউপি সদস্য ‘পঞ্চপল্লীর ঘটনা পাশবিক, এমন যেন আর না ঘটে’ টি২০ বিশ্বকাপের পিচ পৌঁছেছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে বৃদ্ধের ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার

সকল