২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ক্ষমতাসীনেরাও অপহৃত হচ্ছেন

অন্তত এবার অপরাধীদের শনাক্ত করুন

-

বাংলাদেশে এক রহস্যময় অপহরণ অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। যখন-তখন অপহৃত হয়ে যাচ্ছেন বিরোধী রাজনৈতিক, শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। এমনকি এখন অপহরণের শিকার হচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও। এসব অপহরণের কারণ কী, সংশ্লিষ্ট ঘটনার মধ্যে তার কিছুটা ইঙ্গিতও মেলে। সরকারবিরোধীদের অপহরণের পর অনেক সময় আর পাওয়া যায় না। তবে কেন তাকে অপহরণ করা হলো এবং কী তার ‘অপরাধ’, সেটি কিছুটা বোঝা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকারের বিরোধী অবস্থানই তাদের ‘হারিয়ে যাওয়া’র কারণ বলে জনমনে ধারণা রয়েছে। শিক্ষক, সাংবাদিক ও অন্যান্য পেশাজীবী ‘হাওয়া’ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও একই ধরনের কারণ নিহিত বলে মানুষের মনে বিশ্বাস জন্মেছে। তবে সরকারি দলের নেতাদের অপহৃত হওয়ার মধ্য দিয়ে অপহরণ সংস্কৃতি যেন একটু ভিন্ন দিকে মোড় নিলো। অর্থাৎ এই রাষ্ট্রে ক্ষমতাসীনদের নিরাপত্তাও আর রইল না। এ বিষয়ে অনেক আগেই অভিজ্ঞ মহল মন্তব্য করেছে। যা হোক, এবার অপহৃত হওয়ার পর ছাড়া পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান পারভেজ সরকার। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর লালমাটিয়ায় বাসার গেট থেকে তাকে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) সদস্য পরিচয়ে একদল লোক অপহরণ করেছিল। টেনে-হিঁচড়ে জিপে তোলার পর হাতকড়া পরিয়ে, তার মুখ ঢেকে দেয়া হয়। আট ঘণ্টা ঘোরানোর পর হাতকড়া খুলে পেছনে না তাকিয়ে সোজা চলে যেতে নির্দেশ দেয় তারা। পারভেজ সরকার নিজেই সাংবাদিকদের এ অপহরণ কাণ্ডের বর্ণনা দেন। তিনি জানান, কুমিল্লার তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের সাথে তার বিরোধ চলছিল। গত বছরও তার গাড়িতে হামলা হয়েছে। নিরাপত্তার শঙ্কায় তিনি তিতাস থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এবার তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাইবেন। অপহরণের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলেই তার বিশ্বাস। তিনি নিজের নিরাপত্তার জন্য সাথে অস্ত্র রাখেন। জুমার নামাজে যাওয়ার কারণে সেদিন তার সাথে অস্ত্র ছিল না। এ দিকে, এসবির পক্ষ থেকে এ অপহরণের জন্য তাদের দায় অস্বীকার করা হয়েছে। তবে অপহরণ দৃশ্যের যে বর্ণনা এসেছে তাতে স্পষ্ট যে, একদল প্রশিক্ষিত লোক এটি ঘটিয়েছে। পারভেজ বাড়ির সামনে আসার পর এক ব্যক্তি তার সামনে এসে নিজেকে এসবির লোক বলে পরিচয় দেন। তারপরই তার হাত দুটো পিছমোড়া করে ধরে ফেলেন। কানের পেছনে পিস্তল দিয়ে আঘাত করে তাকে একটি জিপে তোলা হয়। জিপটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের তৈরি। তার ধারণা, জিপে তোলার পরপরই তাকে চেতনানাশক প্রয়োগ করা হয়েছিল। রাতের দিকে তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ৩০০ টাকার একটি স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়া হয়। তাকে অপহরণ থেকে শুরু করে ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত একটি পরিকল্পনা ও উন্নত প্রশিক্ষণের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত পারভেজ থানায় কোনো এজাহার দায়ের করেননি। ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করা’র পর তা করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান। অপহরণকারীদের একটি বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। তাদের একজন বলেছেন, ‘স্যার, এটা কী করলেন। ফুটেজ পাওয়া গেছে। আমাদের চেনা যাচ্ছে। এটা কেমন হলো?’
পারভেজের অপহরণের ঘটনার রহস্য অনেকটাই স্পষ্ট। কেবল সরকার চাইলেই এটা উদঘাটন করতে পারে। আগের অসংখ্য ঘটনাও তদন্ত করে উদঘাটনের মতো যথেষ্ট ক্লু আছে; কিন্তু সরকারি বাহিনীর নামে কারা এ ধরনের অপরাধ ঘটাচ্ছে, সেটি স্পষ্ট করার জন্য প্রশাসনের আন্তরিকতা দেখা যায়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ দায়িত্বহীন মন্তব্য করেছে। অনেক সময় পুলিশের সাথে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও সুর মিলিয়েছেন। অপহরণ করে গুম করে ফেলার যে অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে, সেটি ইতোমধ্যে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হয়ে উঠেছে। খোদ ক্ষমতাসীনদের তা গিলে খেতে বসেছে। কেবল বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ অনিরাপদ নয়, এর সাথে এখন ক্ষমতাসীনেরাও নিরাপত্তা হারাচ্ছেন। এবার যদি সরকারের টনক নড়ে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে ইয়াবাসহ গৃহবধূ গ্রেফতার জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলো ভানুয়াতু বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী

সকল