২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মাদক অভিযানে হত্যা নিয়ে বিতর্ক

বিষয়টি রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখতে হবে

-

বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে জোরালো আপত্তি উঠতে শুরু করেছে। সর্বশেষ মাদক নিয়ন্ত্রণে অভিযানের নামে এ হত্যাকাণ্ড চলছে। শনিবার পর্যন্ত এ অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ১৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। এ ব্যাপারে দেশের ১০ বিশিষ্ট নাগরিক উদ্বেগ জানিয়েছেন। তাদের মতে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। অন্য দিকে লন্ডনের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছে, মাদকবিরোধী যুদ্ধের আড়ালে বাংলাদেশে চলছে রাজনৈতিক হত্যা। মাদকের আশঙ্কাজনক বিস্তারে সবাই আতঙ্কিত। তাই মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান একটি কাক্সিক্ষত বিষয় ছিল; কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যার সংযোগ একে বিতর্কিত করে ফেলেছে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ ১০ বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতিতে বলেন, ‘সারা দেশে যে মাদকবিরোধী অভিযান চলছে, তার যৌক্তিকতা আমরা অনুধাবন করি। দেশে খুব কম পরিবার আছে, যারা মাদকের ভয়াবহতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছে। সঙ্গত কারণে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনও এই অভিযানে প্রত্যাশিত ছিল; কিন্তু গভীর উদ্বেগের সাথে আমরা লক্ষ করছি, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। সংবিধানে প্রদত্ত জীবনের অধিকার এভাবে কেড়ে নেয়া যায় না। সোস্যাল মিডিয়ায় কিছু নিহত ব্যক্তি সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশের কথা তারা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন। টেকনাফের নিহত পৌরমেয়রের কথাও তারা উল্লেখ করেন। তার হত্যা নিয়ে ফোনালাপ প্রকাশ করার কথা তারা জানান। তারা বলেন, এটা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে অকল্পনীয়। অন্য দিকে টেলিগ্রাফ পত্রিকা একটি হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ টেনে আনে। র্যাবের ভাষায় চট্টগ্রামের হাবিবুর রহমান একজন মাদক কারবারি। হাবিবুর রহমানের পরিবার পত্রিকাটিকে জানায়, পুলিশের ভাষ্য বানোয়াট। হাবিবুর রহমান মসজিদ থেকে বেরোনোর সময় ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাদের দাবি, পুলিশ হেফাজতে তাকে হত্যা করা হয়। পরিবারের দাবি, সরকারের বিরুদ্ধে রাজনীতিতে জড়িত হওয়ায় এবং জমি নিয়ে প্রতিবাদ জানানোর কারণে তাকে এমন হত্যার শিকার হতে হয়েছে। একজন আইনজীবীকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি লিখেছে, ‘এ বছরের শেষ নাগাদ যে নির্বাচন হওয়ার কথা, এটি সম্ভবত তার আগে ভয়ভীতি দেখানোর একটি কৌশল।’ তার মতে, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে এ রকম হত্যা তত বাড়বে। এ দিকে গণমাধ্যম ও সুশীলসমাজের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের অনুসন্ধানের পর জাতিসঙ্ঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দফতর এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।
মাদকবিরোধী অভিযানের গুরুত্বের বিষয়টি সবার পক্ষ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে। এ অভিযানের মধ্যে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে আরো বেশি কথা উঠেছে। এভাবে মানুষ হত্যা চলতে থাকলে বিতর্ক আরো ঘনীভূত হবে। মাদক দমনের বদলে সরকারের অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে কথা হবে। টেলিগ্রাফ যেমন বলেছে, মাদকবিরোধী অভিযানের আড়ালে রাজনৈতিক হত্যা চলছে। খবরে প্রকাশ, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ২২২ জন। শুধু মে মাসে ঘটেছে এমন ১৪৯টি হত্যা। এরা সবাই কিন্তু মাদকের সাথে জড়িত নয়। অভিযানের উদ্দেশ্য যে মাদক দমন, সেটি সরকারকে আন্তরিকতার সাথে দেখাতে হবে। অন্যথায় মাদক দমন হবে না। আমরা মনে করি, মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে দেশে-বিদেশে যে বিতর্ক উঠেছে, সেটির জবাব দেয়া উচিত। আর এই অভিযানকে অবশ্যই রাজনৈতিক ব্যবহারের বাইরে রাখতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল