দেশের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
- ০২ জুন ২০১৮, ০০:০০
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য রোজার ঈদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আসছে। কারণ, এই ঈদকে সামনে রেখে সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা হয় এ দেশে। ব্যবসায়ীরাও তাদের টার্গেট নির্ধারণ করেন এই ঈদের সম্ভাব্য কেনাকাটাকে ঘিরে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ক্রেতাদের একটি অংশ বিদেশে গিয়ে ঈদের কেনাকাটা করছেন। ক্রমেই তাদের সংখ্যাটা বাড়ছে। এতে করে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং এই ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে ঈদের বাজার বড় আকারে বেহাত হয়ে যেতে পারে। নয়া দিগন্ত এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, এর মধ্যেই ঈদের কেনাকাটা করতে দেড় লাখ বাংলাদেশী কলকাতায় গিয়েছেন। এ উপলক্ষে কেনাকাটা করার জন্য সিঙ্গাপুর, দুবাই, ইউরোপ ও আমেরিকা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে থাকে। সেটা সংখ্যায় সীমিত। তবে কলকাতায় যেভাবে ক্রেতাদের ভিড় জমছে তা দেশের বাজার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এমন কেনাকাটাকে বাধা দেয়া যায় না; তবে দেশের ব্যবসায়ী ও সরকার মিলে এমন কৌশল অবলম্বন করা দরকার যাতে করে ঈদের কেনাকাটা দেশেই করতে সবাই আগ্রহী হয়।
উল্লিখিত প্রতিবেদনে কলাকাতায় ক্রেতাদের ছুটে যাওয়ার কিছু ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন : ঢাকায় পোশাকের দাম বেশি। ঈদের সময় দাম আরো বেড়ে যায়। বেশি বিক্রির কারণে বিক্রেতাদের আচরণও তখন পাল্টে যায়। অন্য দিকে, ভারতের বাজারে পোশাক পাওয়া যায় লেটেস্ট মডেলের; দামও অপেক্ষাকৃত কম। ঈদ উপলক্ষে তারা বিশেষ ছাড়-অফারও দেয়। আমাদের এখানে যেসব পোশাক বিক্রি হয়, তার বড় অংশই আসে ভারত থেকে। আমাদের ব্যবসায়ীরা ওখানকার পোশাক এনে বাংলাদেশে বিক্রি করেন; কিন্তু দাম রাখেন দ্বিগুণের বেশি। ঢাকায় যে জামার দাম পাঁচ হাজার টাকা, কলকাতায় সেটি পাওয়া যায় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায়। দাম ও মান ছাড়াও আরেকটি বড় ব্যাপার হলোÑ আচরণ। ভারতে যেকোনো দোকানে ২০০ টাকার শাড়ি কিনলে ১০০টি শাড়ি দেখানো হয়; কিন্তু বাংলাদেশের দোকানিদের এ স্বভাব নেই। এখানে অনেক সময় পোশাক পছন্দ না হলে কিংবা ক্রেতারা ফিরে গেলে অনেক আজেবাজে কথাও বলেন বিক্রেতারা। ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন, আর বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। এসব যুক্তি দেখাচ্ছেন সেখান থেকে কেনাকাটা করে আসা বাংলাদেশী ক্রেতারা। এর ওপর বাড়তি সুবিধা হলোÑ ভিসা পাওয়ার জটিলতাও এখন আর তেমন নেই। বিমানের পাশাপাশি সড়ক ও রেলপথে যাতায়াত এখন অনেক সহজ। এ ব্যাপারে ভারত ব্যবসাবান্ধব কৌশল নিয়েছে। এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভারতীয় ভিসা গ্রহণকারীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। কেবল রমজানের শুরুতেই ভিসা গ্রহণ করেছেন দেড় লক্ষাধিক বাংলাদেশী। এর বাইরে বিনা ভিসায় ভারত সফরকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।
ঈদের কেনাকাটার জন্য দেশীয় বাজার ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে কাজে লাগাতে হলে নতুন করে ভাবতে হবে। বিদেশে চলে যাওয়া ক্রেতাদের হার যাতে আর না বাড়ে, সেজন্য কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কলকাতা বা অন্য জায়গায় গিয়ে ক্রেতারা যে সুযোগ পাচ্ছেন, সেটা আমাদেরকেও দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের মতে, কেনাকাটা করতে অন্য দেশে যাওয়া তখনই বন্ধ হবে, যখন দেশেই মানসম্মত পণ্য প্রতিযোগিতামূলক দামে পাওয়া যাবে। এ জন্য বাজারব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। আমদানি শুল্ক পর্যালোচনা করে যৌক্তিক করতে হবে। দেশের বাজারে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপের বিষয়ে আরো ভাবতে হবে। সর্বোপরি ব্যবসায়ীদের প্রকৃত ব্যবসায়িক মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা