০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নতুন বাজেটে ১৫০০ কোটি টাকা নগদ সহায়তার প্রস্তাব

তৈরী পোশাকে প্রণোদনা বাড়ছে

তৈরী পোশাকে প্রণোদনা বাড়ছে - সংগৃহীত

তৈরী পোশাক খাতে নগদ প্রণোদনা ১ ভাগ বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে এ সহায়তা ৪ ভাগে রয়েছে। ১ জুলাই থেকে তা বাড়িয়ে ৫ ভাগে উন্নীত করা হবে। আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সহায়তা বাড়ানোর এ প্রস্তাব করা হবে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে বিভিন্ন রফতানিমুখী পণ্যে নগদ সহায়তা দেয়ার পরিমাণ বার্ষিক সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। তৈরী পোশাক খাতে নগদ সহায়তা ১ ভাগ বাড়ানোর কারণে আগামী অর্থবছরে এ খাতে অতিরিক্ত দেড় হাজার কোটি টাকা লাগবে বলে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে নগদ সহায়তা বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে রফতানিমুখী তৈরী পোশাক খাত ৪ ভাগ হারে নগদ প্রণোদনা পেয়ে আসছে। ১ শতাংশ বাড়ানোর ফলে এই খাতে নগদ সহায়তার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে দাঁড়াবে ৫ শতাংশে। বর্তমানে ৩৫টি রফতানিমুখী পণ্য নগদ সহায়তা পেয়ে আসছে। পুরো নগদ সহায়তার ৭০-৮০ ভাগ তৈরী পোশাক খাতে ব্যয় হয়।

জানা গেছে, তৈরী পোশাক রফতানিকারক সমিতি বিজেএমইএ এ খাতে নগদ সহায়তার পরিমাণ বিদ্যমান ৪ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৮ ভাগে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছিল। সংগঠনটির সভাপতি রুবানা হক জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের তৈরী পোশাক খাত সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। তাই এ খাতে নগদ প্রণোদনা আরো ৫ ভাগ বাড়ানো প্রয়োজন।

কিন্তু অর্থ অর্থমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের তৈরী পোশাক খাত নগদ রফতানি সহায়তা ছাড়াও শুল্কসহ অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে। তাই দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এখাতে এ মুহূর্তে নগদ সহায়তা ১ ভাগের বেশি বাড়ানো সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীরও সম্মতি পাওয়া যায়। ফলে আগামী অর্থবছরে তৈরী পোশাক খাতে নগদ সহায়তা ১ ভাগ বাড়ানোর বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেছেন, তৈরী পোশাক খাতে নগদ সহায়তা আট ভাগে উন্নীত করার জন্য আমাদের ওপর চাপ রয়েছে। কিন্তু আমরা হিসাব করে দেখিয়ে দিয়েছি, এ মুহূর্তে সরকারের পক্ষে এ খাতে নগদ সহায়তার পরিমাণ বিজেএমইএ দাবি অনুযায়ী ৪-৫ ভাগ বাড়ানো সম্ভব নয়। তাই এ খাতে সহায়তা ১ ভাগ বাড়ানো হচ্ছে। এতে সরকারের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।

বিজেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পোশাক খাতে প্রণোদনা পেতে হলে কয়েকটি শর্ত মেনে চলতে হবে। শর্তানুযায়ী, দেশীয় উৎপাদিত কাপড় ব্যবহার করে উৎপাদিত পোশাক রফতানি করার পর দেশে যে আয় আসবে তার ওপর ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া হয়। তবে বিদেশ থেকে কাপড় এনে পোশাক তৈরি করে রফতানি করলে কোনো প্রণোদনা পান না উদ্যোক্তারা।

আবার নতুন বাজারের জন্য একই হারে প্রণোদনা দেয়া হয়। এর বাইরে ইউরোপের বাজারে দেশীয় কাপড় ব্যবহারের শর্তে পোশাক বানিয়ে রফতানি করলে ২ শতাংশ প্রণোদনা পাওয়া যায়। বর্তমানে পোশাক খাত থেকে আসে রফতানি আয়ের ৭৮ শতাংশ। গত অর্থবছরে মোট রফতানি আয় হয় ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বা ৩৭ বিলিয়ন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ তিন লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে পোশাক খাত থেকে এসেছে দুই হাজার ৯০০ কোটি ডলার বা দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

এ দিকে দেশের তৈরী পোশাক খাত গভীর সঙ্কটে রয়েছে বলে মন্তব্য বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, এ সঙ্কট থেকে উত্তরণে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পোশাক রফতানিতে ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া প্রয়োজন। গত ২৮ মে বস্ত্র খাতের সংগঠন বিজিএমই, বিটিএমইএ, বিকেএমইএর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

রুবানা হক বলেন, সব ধরনের পোশাক রফতানিতে রফতানি মূল্যের ৫ শতাংশ হারে ভর্তুকির অর্থ একক প্রণোদনা হিসেবে বছরে ১১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা সরকার পোশাক রফতানিকারকদের দিতে পারে। একইভাবে আগামী পাঁচ বছর ৫৮ হাজার ৬২০ কোটি টাকার প্রণোদনা অব্যাহত রাখার দাবি জানান তিনি।

সরকার আরো কোন কোন খাতে ভর্তুকি দেয় তার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কৃষি খাতে ২০ শতাংশের ভর্তুকি ১০ বছরে ১৯৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৪ কোটি ৫০ ডলার। চিংড়ি রফতানিতে ৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। দশ বছরে রফতানি বেড়েছে ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ, টাকার অঙ্কে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

প্লাস্টিকে ১০ শতাংশ ভর্তুকিতে রফতানি ৮৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ফার্মাসিউটিক্যালসে ১০ শতাংশ ভর্তুকিতে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮৬ শতাংশ, বেড়েছে ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সিরামিকসে ১০ শতাংশ ভর্তুকিতে ৬৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ বা ২ কোটি ১০ লাখ ডলার রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। চামড়ায় রফতানি বেড়েছে ৫০৯ শতাংশ, ফার্নিচারে বেড়েছে ৬১১ শতাংশ।
রুবানা হক বলেছেন, সেখানে পোশাক খাতের জন্য নতুন বাজারে দেয়া হয় মাত্র ৪ শতাংশ। এ খাতে ১০ বছরে রফতানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৫০ শতাংশ। আয় বেড়েছে ৩৮০ কোটি ডলার। রফতানির পণ্যগুলো থেকে আয়ের পরিমাণ সবারই মিলিয়নে। একমাত্র পোশাক খাতই বিলিয়ন ডলারে।

দেশের পোশাক খাত একটি ক্রান্তিলগ্নে এসে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের জন্য এ প্রণোদনা দেয়া হলে পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াবে। সরকার যদি সব বাজারের জন্য ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়, তাহলে বর্তমানে যেটুকু পাই তা বাদ দিলে সরকারের ১১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা লাগবে বছরে। পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেটে এই অর্থ খুব বেশি নয়।

উল্লেখ্য, ৩৫টি পণ্যে যে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয় তার হার হচ্ছে ২ থেকে ২৫ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, রিমান্ডে নেয়া হবে : ডিবি বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসকের কপাল ফাটিয়ে দিলেন ইউপি সদস্য ‘পঞ্চপল্লীর ঘটনা পাশবিক, এমন যেন আর না ঘটে’ টি২০ বিশ্বকাপের পিচ পৌঁছেছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে বৃদ্ধের ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার

সকল