২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
শ্রুতি ও স্মৃতির সোনালি শিখা

যেমন দেখেছি তাঁকে

-

ত্রিশ.

বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠান ঢাকার মোহাম্মদপুরে। এখন নেই প্রতিষ্ঠানটি। শিল্পসাহিত্য, সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকাণ্ড ছিল এ প্রতিষ্ঠানের আয়োজন। কবিতা, গান ও নাটকবিষয়ক কর্মশালার ব্যবস্থা ছিল এখানে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের কবিতাকর্মী সঙ্গীতশিল্পী এবং নাট্যশিল্পীদের আনাগোনায় মুখর ছিল প্রতিষ্ঠানটি। গীতিকার, সুরকার আসতেন এখানে। আসতেন নাটক রচয়িতারা। খ্যাতিমান অনেক অভিনেতা এবং চিত্রপরিচালকের দেখাও মিলত এখানে।
কবিতা ও ছন্দবিষয়ক কর্মশালায় অতিথিদের অন্যতম ছিলেন আল মাহমুদ। ছিলেন শিক্ষক। নতুন লিখিয়েদের হাত পাকানোর কৌশল নিয়ে ক্লাস নিতেন তিনি। কবিতার চেহারা কেমন হবে, কেমন স্বাস্থ্যের হবে এবং কবিতার রূপ কী হবে এসবের পরিচয় দিতেন। চিনিয়ে দিতেন কবিতা ও অকবিতার ব্যবধান। চেনাতেন কোনটি কবিতা এবং কোনটি নয়। কবি হিসেবে পরিচিত একজন মানুষ অথচ তার লেখায় কবিতা নেই। কবিতা নামে তিনি যা লেখেন তার কোনোটিই কবিতা নয়। কেন? এই কেনর অসাধারণ যুক্তি উপস্থাপন করতেন আল মাহমুদ। বলতেন কবিতার আদ্যোপান্ত। কবিতা কর্মশালায় উপস্থিত থাকতেন টগবগে তারুণ্যের প্রতিনিধি। যারা কবিতার আনন্দে নিজেদের সাজিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যারা স্বপ্ন ও সম্ভাবনার সব দুয়ার কবিতা পৃথিবীর সান্নিধ্যে খুলতে চান। যারা জীবনকে কবিতায় জাগিয়ে রাখার কৌশল আয়ত্ত করতে চান। এমন তরুণেরাই কবিতার কর্মশালায় জড়ো হতেন। আল মাহমুদ ছিলেন এদের স্বপ্নের পুরুষ। এদের আকাক্সক্ষার ব্যক্তিত্ব এবং যাকে ঘিরে নতুন কল্পনার আকাশ নির্মিত হতো তিনিই আল মাহমুদ। শিখতে আসতেন যারা তাদের আগ্রহ ছিল প্রবল। বানের ঢলের মতো কলকল ছিলেন কেউ কেউ। প্রচণ্ড আবেগমথিত করে ধেয়ে আসতেন আল মাহমুদের কাছে। এ বাঁধনহারা আবেগ বোঝার মন ছিল মাহমুদের। তিনি এসব তরুণকে প্রশ্রয় দিতেন। ক্লাসের বাইরে মেতে উঠতেন আড্ডায়। কখনো কখনো বাঁধভাঙা হাসিতে ফেটে পড়তেন। আড্ডায় উঠে আসত কবি ও কবিতার নানা কাহিনী। জানা-অজানা বিস্তর ঘটনা। যেখানে কবিদের শিক্ষার ছিল অনেক কিছু। গভীরতায় প্রবেশের অধিকার ছিল সবার। যেকোনো জিজ্ঞাসা যেকোনো জানার এরাদা দ্বিধাহীন বলতেন সবাই। এভাবে কবিতার কর্মশালায় কবিতার মুখ চেনার কৌশল আলোচিত হতো। কবিতার ঘোরলাগা আনন্দে মুখর হতো আড্ডা। আলাপচারিতায় কেটে যেত অনেক সময়।
এখানে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত আড্ডা জমত। এটি ছিল অনির্ধারিত আড্ডা। কোনো দিন-ক্ষণ কিংবা আয়োজন ছাড়াই হতো আড্ডাটি। দু-চারজন পাঁচজন মিলে গেলেই ধীরে ধীরে তা বাড়ন্ত খেয়ালে চলে যেত আড্ডায়। কেন্দ্রে কর্মশালা ও কর্মশালার বাইরে কিছু অনুষ্ঠান হতো। এসব অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন যারা এদের প্রত্যেকে শিল্প-সাহিত্যের অঙ্গনে খ্যাতিমান মুখ। এদেরই অনেকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের আগে পরে জমে উঠত জম্পেস আড্ডা।
এমন অনির্ধারিত আড্ডায় যারা আসতেন তাদের একজন চলচ্চিত্র ও অভিনয় জগতের কিংবদন্তি অভিনেতা আরিফুল হক। চলচ্চিত্র জগতে তিনি পরিশীলিত অভিনেতা হিসেবে পরিচিত। এ শক্তিশালী অভিনেতা আবৃত্তিকার হিসেবেও খ্যাত ছিলেন। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করেছেন প্রচলিত আবৃত্তির কৌশলের বাইরে এসে। নজরুলের নাটক নিয়ে গবেষণাগ্রন্থ আছে তাঁর। তিনিই লিখেছেন নজরুলের নাটকের সংখ্যা একশ’রও বেশি। আল মাহমুদের সাথে এ নাট্যশিল্পীর ছিল ঘনিষ্ঠতা। দেখা হলে আহা কী প্রাণ খোলা আলাপন।
আসতেন আরেক নাট্যগুরু ড. আসকার ইবনে শাইখ। নাট্যজগতে এ নামটি বেশ শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত। বাংলা নাটকের শরীর হৃষ্টপুষ্ট যাদের হাতে আসকার ইবনে শাইখ তাদেরই একজন। তিনি নাট্য রচয়িতা ছিলেন। নির্দেশক ছিলেন। ছিলেন নাট্যাঙ্গনের আক্ষরিক অর্থে শিক্ষক। ইতিহাসভিত্তিক নাটক রচনায় তার তুলনা কম। তিনি কবিতা লিখতেন। গান রচনা করতেন এবং ঔপন্যাসিক হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। তবে সব কিছু ছাড়িয়ে তিনি নাট্যরচয়িতা হিসেবে শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের একজন। আল মাহমুদকে নাটক রচনায় প্ররোচনা দিতেন তিনি। বলতেন, আপনি নাটক লিখুন। একজন কবির হাতে রচিত হতে পারে নতুন চেহারার নাটক। হাসতেন আল মাহমুদ। বলতেনÑ গান আর নাটক এ দুটি আমার লেখা হলো না। নাটকের বিষয়ে যা-ই হোক গানের ব্যাপারে একটি আফসোস ছিল আল মাহমুদের। গান লেখার কথা উঠলেই বলতেন গান লেখা হলো না আমার। এটি ছিল আল মাহমুদের বেদনার জায়গা। এ বেদনাবোধের একটি বিন্দু ছিল। বিন্দুটি তিনিই দেখিয়েছেন। বলেছেন, রবীন্দ্র-নজরুল যত না কবিতায় তারও বেশি গানে আলোচিত। গ্রহণীয়।
এখানে আসতেন নাট্যজন ওবায়দুল হক সরকার। আহা কী যে অভিনয় ছিল তার। কী কণ্ঠ। কী উচ্চারণ। অভিনয় জীবন্ত হয়ে উঠত তার কণ্ঠের জাদুতে। দু’টি চোখে জেগে থাকত এক মায়া। কথা বলতেন দারুণ আন্তরিকতায়। চলচ্চিত্র পরিচালক হাফিজ উদ্দিন আসতেন এখানে। চলচ্চিত্র জগতের অম্লমধুর কত গল্প ফুটে উঠত তার মুখে। নায়ক-নায়িকাদের ভেতর-বাইর বলতেন তিনি।
বিখ্যাত শিল্পী আঞ্জুমান আরা বেগম আসতেন। আসতেন আনন্দের সাথে। সদা হাস্যোজ্জ্বল এক মুখ ছিল তার। ভদ্র বিনয়ী ও পরিশীলিত মনের মানুষ ছিলেন। ছিলেন নিতান্ত সরল। অথচ প্রাণবন্ত। যিনি গানের জগতে এক স্মরণীয় শিল্পী। গান যে প্রাণের সাথে জড়ানো এ কথার বাস্তব চিত্র ছিলেন তিনি। আল মাহমুদের সাথে বেশ জমিয়ে আড্ডা দিতেন তিনি।
এখানে আসতেন সৈয়দ আলী আহসান, নজরুল গবেষক শাহাবুদ্দীন আহমেদ, ড. আবদুল মাবুদ, ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, কবি রুহুল আমিন খান, কবি আবদুল হাই শিকদারসহ অনেকেই। এরা প্রত্যেকেই কর্মশালার শিক্ষক হিসেবে আসতেন। আসতেন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে।
শিল্পী খালিদ হোসেন আসতেন। একজন অসাধারণ সঙ্গীতজ্ঞ তিনি। তার কণ্ঠে নজরুলের ইসলামী গান পেয়েছে নতুন দ্যুতি। বলা হয়ে থাকে তার সুরের ভেতর ভেসে ওঠে তারই হৃদয়। অমায়িক ব্যবহারের একজন মানুষ ছিলেন তিনি। হৃদয় দিয়ে সুর যেমন তুলতেন তেমনি কথার সাথেও জড়িয়ে থাকত হৃদয়।
চলচ্চিত্র জগতে আরেকটি বিখ্যাত নামÑ খলিলুল্লাহ খান। তার খ্যাতির কথা- প্রতিভার কথা প্রায় সবার জানা। এ অঙ্গনের লোকেরা তার নামটি শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারণ করেন। তিনিও আসতেন এখানে।
এসব নাট্যজন কবি শিল্পীর সম্মিলনে আকস্মিক হয়ে যেত অনির্ধারিত আড্ডা। এদের মধ্যে আল মাহমুদ ছিলেন অন্যতম। এদের প্রত্যেকের সাথে ছিল তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক; যা অনুভব করার মতো। এরা প্রত্যেকেই ছিলেন পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। একজন অন্যজনকে সম্মান রেখে কথা বলতেন। এদের সবার কাছে আল মাহমুদ ছিলেন কবি সাহেব।
এ কবি সাহেবের একটি বিশেষ বিনয় ছিলÑ তিনি যাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন এমন ব্যক্তিত্বদের স্যার সম্বোধন করতেন। কথাও বলতেন নম্রতার সৌন্দর্যে। খ্যাতিমান ও প্রতিভাবান মানুষেরা প্রায় সবাই বিনয়ী এ কথাটি তুমুল সত্য। আল মাহমুদও বিনয়ের অলঙ্কারে মণ্ডিত ছিলেন। এসব আড্ডায় পারতপক্ষে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন না তিনি। কিন্তু যা বলার বলেই নিতেন। এ সত্য উচ্চারণে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন না তিনি। এতে কখনো কখনো ক্ষুণœ হতেন কেউ কেউ। হলেও বলতেন তিনি। এ বলা ছিল তাঁর সাহসের যেমন, তেমনি শিল্পের প্রতি দায়। কবিতা যেটুকু বুঝেছেন তিনি সেটুকু স্বচ্ছতার সাথেই বুঝেছেন। বিশ্বাসে নিয়েছেন। অনুভূতিতে জাগিয়েছেন এবং নিসঙ্কোচে বলেছেন। কবি মতিউর রহমান মল্লিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক হাসান মুর্তাজা এসব আড্ডায়, আসরে ছিলেন নিয়মিত।
এ স্থানটি বিহারি ক্যাম্পের পাশেই। ফলে আড্ডায় যখনই খাওয়ার প্রসঙ্গ উঠত বিহারি ক্যাম্পের মুখরোচক খাবারের কথা সবাই তুলতেন। বিহারি ক্যাম্পের বৈকালিক নাশতায় ছিল নানা উপাদান। বুটভাজা থেকে শুরু করে পেঁয়াজু বেগুনি আলুর চপ এসব তো থাকতই। বিশেষ আকর্ষণ ছিল গরুর গোশতের চাপ এবং লুচি। এ খাবারটি প্রায় সবারই পছন্দের। ফলে নাশতার আয়োজনে প্রায়ই থাকত চাপ ও লুচি। আল মাহমুদের খুব পছন্দ ছিল এটি। কোনো কোনো দিন এসেই বলতেন আজ চাপ খাওয়াতে হবে কিন্তু। আল মাহমুদের ইচ্ছে বলে কথা। চাপ এসে যেত সহসা। সাথে গরম লুচির সমাহার। খুব রসিয়ে খেতেন। খেতেন আগ্রহের সাথে। কখনো আবার ক্যাম্পে গিয়েই খাওয়ার আগ্রহ দেখাতেন। গিয়ে খেলে একটি নির্দিষ্ট দোকানে বসতেন। দোকানটি ক্যাম্পের পশ্চিম দিকের মাঝামাঝির দক্ষিণ ঘেঁষা। একটি ছাপড়া মতো দোকান। এখন আর ছাপড়া নেই। কাঠ আর টিনের ব্যবহারে দোকানটির চেহারা বদলে গেছে এবং হয়েছে দোতলা। দোকানটির চাপ এবং লুচির ঘ্রাণ আমাদের টেনে নিত সেখানে। আসরের পর অথবা সন্ধ্যার সাথে সাথে জমত এখানকার আসর। বিহারি দোকানিটি বেশ খাতির যতœ করতেন। আল মাহমুদ এলেই বলতেনÑ কবি ছাহাব আপকা মেহেরবানি। চেয়ার নেড়েচেড়ে দেখিয়ে বলতেনÑ বাইঠিয়ে কবি ছাহাব। প্রথম দিনই আমরা পরিচিত হলাম দোকানি বিহারিটির সাথে। আল মাহমুদকে কবি পরিচয় দিলে বললেনÑ ও আচ্ছা আচ্ছা কবি! সায়ের হ্যায়? সাথে সাথে হাত কপালে ঠেকিয়ে বললেন, সালাম জনাব। পরে যেদিনই গেছি সালামটি অবিকলই ছিল।
ছিল অন্তরের উষ্ণতা দিয়ে গ্রহণ করার আনন্দ। কোনো কোনো দিন ওই বিহারি বৃদ্ধের টানেই আমরা হাজির হয়েছি সেখানে। আমাদের জন্য ছিল খানিকটা আলাদা আয়োজন। চাপ তেলে ছেড়ে দিয়ে তেলের নাচন দেখতে অভ্যস্ত কর্মচারীও বুঝে গেছিল আমাদের আয়োজনটি আর দশটির মতো পছন্দ করবেন না তার মালিক। যার জন্য ওই কর্মচারী যাকে আমরা চাপ শিল্পী বলেই ডাকতামÑ আমাদের চাপগুলো স্পেশালি ভাজত। বেছে নিত চোখে ধরা টুকরোগুলো।
এক সন্ধ্যার কথা। আমরা চাপ খাচ্ছিলাম লুচি দিয়ে। পাঁচজন আমরা। আল মাহমুদ, আমি, মাহবুব মতিউর নামে একজন ইংরেজি সাহিত্যের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র। তিনি আল মাহমুদের একটি গল্প অনুবাদ করেছেন বলে জানিয়েছিলেন। ড. আবদুস শহীদ নামে একজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এই শিক্ষকের সাথে ছিলেন একজন তরুণ কবিÑ সাঈদ কায়সার। গল্পের আনন্দে লুচি দিয়ে চাপ মুড়িয়ে চিবুচ্ছিলাম আমরা। ঠিক এ সময় দোকানের সামনে একটি হোন্ডা এসে থামল। হোন্ডায় বসা একজন পুলিশ অফিসার। হোন্ডার ঘাড়টা বাঁকা করে চাবি ঘুরিয়ে লক করলেন। স্ট্যান্ডে বাঁকিয়ে রাখলেন হোন্ডাটি। ঢুকে বিহারি দোকানি চাচাকে কী যেন বললেন। চাচা খুব হন্তদন্ত হলেনÑ যেহেতু পুলিশ অফিসার। আমাদের পাশের টেবিলেই বসলেন অফিসারটি। বিহারি চাচা চাপ প্রস্তুতকারী কর্মচারীকে কী কী বললেন ইঙ্গিতে। কর্মচারীও ব্যস্ত হলো পুলিশ অফিসারের আগমনে। একরকম তামাশাই দেখছিলাম আমরা। কর্মচারীটির চাপ ভাজার সংখ্যা দেখে আমরা বুঝলাম পুলিশ অফিসারের অর্ডারটি বড়সড়। আমরা খাচ্ছি আর দেখছি এসব কাণ্ডের ইতিবৃত্ত।
আমাদের অনুমানই ঠিক। অফিসারের অর্ডারটি গুছিয়ে যখন প্যাকেটবন্দী হলো দেখলাম বেশ ডাঙর পরিধি। প্যাকেটটি রাখা হলো তার সামনে। তিনি চেয়ার থেকে উঠে এগিয়ে এলেন আমাদের টেবিলে। এসেই মাহমুদ ভাইকে বললেনÑ আপনি কবি আল মাহমুদ না?
মাহমুদ ভাই চকিতে চেয়ে বললেনÑ ইয়েস আল মাহমুদ। এক ধরনের স্যালুট কায়দায় সালাম দিলেন আল মাহমুদকে। সালামের জবাব দিলেন আল মাহমুদ।
হাত বাড়িয়ে অফিসারটি বললেনÑ আমি আপনার ভক্ত এ কথা বলতে আমি আপনার সামনে আসিনি। আমার স্ত্রীই আপনার ভক্ত। শুধু ভক্ত বললে কম বলা হবে। অনেক বেশি ভক্ত। আপনার ক’টি উপন্যাস তার একাধিকবার পড়া। উপন্যাসগুলো আমাকেই সংগ্রহ করে দিতে হয়েছে। ওর সবচেয়ে বেশি পছন্দ আপনার ‘আগুনের মেয়ে।’ এ ছাড়া ‘যেভাবে বেড়ে উঠি’, ডাহুকী, কাবিলের বোন খুব পছন্দের। একদিন আমার বাসায় আসবেন। আমার বাসা এখান থেকে কাছেই। তাজমহল রোড। ভীষণ খুশি হবেন আমার স্ত্রী। এক নাগাড়ে কথাগুলো বললেন অফিসার। মাহমুদ ভাইয়ের চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। নিজের লেখা বইয়ের এমন ফ্যান পেলে লেখকের আনন্দ চাগিয়ে ওঠে। মাহমুদ ভাইয়েরও হলো তাই। বললেনÑ আসব একদিন।
হ্যান্ডশেক করে বললেনÑ আজ তাড়া আছে। বেয়াদবি না নিলে বিলটি আমি দেবো। আমাদের সম্মতির অপেক্ষা না করেই আমাদের বিলটি দিয়ে দিলেন। আবার স্যালুট কায়দায় সালাম দিয়ে বেরিয়ে গেলেন তিনি। আমরা তার ছুটন্ত হোন্ডার দিকে চেয়ে রইলাম। [চলবে]

 


আরো সংবাদ



premium cement