২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বুলান্দ জাভির সময়ের এক উজ্জ্বল কবি

-

বাংলা কবিতার বিস্তীর্ণ দিগন্তে আশির দশকের মেধাবী কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ বুলান্দ জাভিরের কবিতা ইতোমধ্যে অজস্র তারার মতো পুঞ্জ পুঞ্জ জ্বলছে। উপমা, উৎপ্রো, চিত্রকল্প, প্যাটার্ন, এক্সপ্রেশনস এবং বিরল ডাইমেনশন বুলান্দের কবিতার ছই নৌকার উসারায় বৃষ্টির কণা হয়ে ঝরে পড়ে।
কখনো বা রাঙতাজ্বলা, স্তব্ধতাজাগা-রৌদ্রোজ্জ্বল দুপুরে বুলান্দের কবিতা যেন হয়ে ওঠে দূর কোনো মফস্বল শহরের মাইল মাইল আবছায়া বন।
ঝাউয়ের চূড়োয় থমকে থাকা এক পশলা কুয়াশার মতোই বুলান্দের কবিতায় শব্দের কুজঝটিকা পালক ছড়িয়ে নামে। অদ্ভুত এক ঘোরের ভেতর দিয়ে বুলান্দের কবিতার হীরাজহরত পাঠকের মর্মে গিয়ে গড়ে তোলে ভালোলাগার এক অভূতপূর্ব আবেশ। গীতিময়তার শব্দ তরঙ্গে নিপুণ গদ্যভঙ্গি নিয়ে বুলান্দের কবিতার অবয়বে গল্পময়তার উজ্জ্বল আবহ স্ফুরিত হয়। কমিটমেন্ট যেমন বুলান্দ জাভিরের কবিতাকে আচ্ছন্ন করে রাখেÑ তেমনি প্রেমের প্যাট্রোমেক্সও বসন্তমুখর সন্ধ্যার স্ট্রিটে জ্বলজ্বল করে জ্বলে স্বমহিমায়।
নুড়ি আর পাথর কুচির বাধা পেরিয়ে যেমন ফল্গুধারা কোনো টিলে পাহাড়ের ফুলকা ফুঁড়ে বয়ে যায় স্ব স্ব গন্তব্যের দিকে। তেমনি কোনো এক চন্দ্রহারা ভোরেÑ নিদাঘ দুপুর, নিঝুম বিকেল, জ্যোৎস্নাজ্বলা সন্ধ্যায় কবি বুলান্দ জাভিরের কবিতার মনিরতœ বোঝাই হয়ে ‘ভালোবাসার লাজুক ট্রেনও’ হৃদয়ের ফিশপ্লেট ছুঁয়ে ছুঁয়ে এগিয়ে চলেছে বাদলাঝরা স্টেশন অভিমুখে।
কবি বুলান্দ জাভির কবিতায় যেমন সাফল্যের শিরস্ত্রাণ স্পর্শ করেছেন। একইভাবে পেশাগত জীবনেও এসেছে তাঁর অপরিসীম সফলতা। বর্তমানে কবি বুলান্দ জাভির (ওবায়দুল্লাহ আল মাসুদ) রাষ্ট্রীয় ব্যাংক সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বÑ সিইও অ্যান্ড এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অঝোর ব্যস্ততার মধ্যেও কবিতার উত্তরীয় জড়িয়ে রেখেছেন আপাত অঙ্গে।
তাঁর কবিতার লোকোমোটিভ পথরেখা পরিক্রমার ভেতর দিয়ে যেতে যেতে কত না জংশন ছুঁয়ে ছুঁয়ে শেষে কিরণ ঝরা প্রকৃত গন্তব্যে পৌঁছোয়। কবিতাও ঠিক তাই। কবি বুলান্দ জাভির আশির দশকের কবি হয়েও হয়ে উঠেছেন সার্বজনীন ও সর্বকালীনতার কবি। কেননা তার কবিতাই তাকে সেই অধিকারের দ্বিমাত্রিক অটোগ্রাফটুকু দান করেছে। তার কবিতা বিগত সাড়ে তিন দশক ধরে তাকে ধীরে ধীরে এক স্বকীয় বৈশিষ্ট্য রচনার সুযোগ যেমন করে দিয়েছে, একইভাবে একজন পরিশীলিত কবিতা কর্মী হয়ে ওঠার মেঘলা পথেও জ্বেলে দিয়েছে নিরন্তর পেট্রোম্যাক্স। আর তারই আলোকে আমরা কবি বুলান্দ জাভিরের কাছ থেকে পেয়ে যাই তরতাজা সাত-সাতটি কাব্যগ্রন্থ। যথাÑ ‘টুলবেঞ্চি সময়ের জুঁই, কোথা তুমি ঘনশ্যাম, অন্তরে নির্বাক বহ্নি, তৃষ্ণা আমার বক্ষজুড়ে, অবচেতনায় মুক্ত তুমি, ভালোবাসা একটি লাজুক ট্রেন এবং তবু বিহঙ্গ বন্ধ করো না পাখা।’
কবি বুলান্দ জাভিরের উল্লিখিত কাব্য গ্রন্থগুলোর কবিতার ভেতর যে লাল ঝাউবন দুলে ওঠে। আর ওই লাল ঝাউবনের গহনে যে কবিতার লাল, নীল, হলুদ রঙের পরীরা রূপকথার গল্পকে অমরত্ব দান করে। এসবই কবি বুলান্দ জাভিরের কাব্যময়তার গভীর স্ফুরণ।
১০ ডিসেম্বর কবি বুলান্দ জাভিরের জন্মদিনে তাকে রাশি রাশি রেশমি গোলাপ ফোটা অভিবাদন। একজন পরিপূর্ণ কবি হিসেবে বুলান্দ জাভির ইতোমধ্যে কাব্য পাঠকের মর্মরে বাজিয়ে চলেছেন অনর্গল মেলোডিয়াস সিম্ফনি। তাঁর কবিতায় কত যে বৃষ্টি ভেজা দুপুর গেছে ভেসে কবিতার শব্দের লিরিকে লিরিকে। কত যে বিকেল জেগে আছে গোধূলির আরক্ত ছায়ায়। ভোরের কুয়াশা ডোবা রানওয়ে থেকে কত যে বুনোখয়েরি শালিক গেছে উড়ে দূরে দূরারণ্যেÑ শুধু কবিতার পালক গুঁজে বুকের বাদামি রোঁয়ায়।
কবি বুলান্দ জাভিরের কবিতা শুধু কবিতাই নয়, বর্ষা-শরৎ-হেমন্ত-শীত ও বসন্তের জলরঙ ছবি যেন একেকটা। আর তাই, অনস্বীকার্য রূপেই ভোরের মিহিন রোদের অফুরন্ত গুঞ্জরণে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে তার কবিতার ক্রিসেন্থিমাম। থেকে থেকে যেমন প্রকৃতির আদলটা বদলে যায়। একইভাবে ঋতু বিবর্তনের স্পর্শে কবি-আর লেখকের মর্মেও দুলে ওঠে সৃষ্টিশীলতার ফুরফুরে কাগজের নৌকোটাও।
পিয়ানোর ঝঙ্কারের মতো স্পন্দিত হয় কবির হৃৎস্পন্দন। আর অন্তরের ঝাপসা বন্দরে এসে ভিড়ে দূরাগত কুয়াশাভারানত নিঝুম স্টিমার।
দিগন্তের জংশনে যখন এসে থামে কবিতা বোঝাই গুডস ট্রেন। তখন ওই ট্রেনের কম্পার্টমেন্টের ভেন্টিলেটর থেকে সাঁই করে দূরে উড়ে যায় ফেব্রিকোর মতো নরোম খয়েরি ফারকোট পরা চঞ্চল শালিক জুটি। ফুটি ফুটি করেও ফোটে না ভোরের অলস রোদ। আর ওই রৌদ্রের বাস্কেট ভরে ওঠে মাইনাস জিরো আওয়ারের অনুষ্ণ কনকনে হাওয়ার কুচি। গগনে মেঘার্ত বিকেল নিভে আসার আগে এক ঝলক ঝিলিক দিয়েই মিলিয়ে যায় সন্ধ্যা তারার বনে।
কবি বুলান্দ জাভির আমাদের সময়ের এক উজ্জ্বলতম কবি। সঙ্গীতেও তার অপরিসীম প্রাজ্ঞতা তাকে দিয়েছে এক অনিঃশেষ বর্ষণমুখর দিন। তার শুভ জন্মদিনে তাঁকে জানাই অফুরন্ত অভিনন্দন।


আরো সংবাদ



premium cement
ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল পূর্ব আফ্রিকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা, কমপক্ষে ১৫৫ জনের প্রাণহানি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন উগ্র ইসরাইলি মন্ত্রী শেরে বাংলার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন হাত কাটা বন্দীর নেতানিয়াহুর সমালোচনা ইসরাইলের আলটিমেটাম, যা বলল হামাস রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের বিরুদ্ধে ব্লিংকেনের হুঁশিয়ারি ইতিহাস গড়া জয় পেল পাঞ্জাব শিরোপার আরো কাছে রিয়াল মাদ্রিদ গাজানীতির প্রতিবাদে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের পদত্যাগ

সকল