০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


২ হুজি সদস্যসহ ১৪ জন গ্রেফতার

ডাকাতির ৩০ শতাংশ টাকা নিয়ে যেত তারা

ডাকাতির ৩০ শতাংশ টাকা নিয়ে যেত তারা - সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত রোববার রাতে যাত্রাবাড়ীর ধোলাইপাড়ে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে । গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যমতে রামপুরা থেকে আরো ২ হুজি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বলে দাবি করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত হুজি সদস্যের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি পুলিশ গতকাল জানান, উগ্রবাদী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি) এর ফান্ড যোগাতে ডাকাতির পথ বেছে নিয়েছে। এ জন্য তারা ডাকাতির পরিকল্পনা করে পেশাদার ডাকাতদের দিয়ে তা বাস্তবায়ন করায়। পরে ডাকাতির মোট টাকার ৩০ শতাংশ সংগঠনের কাজে ব্যয় করে। পাশাপাশি সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তারা কাশিমপুর কারাগারে বন্দি মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী উজ্জ্বলকে যেকোন উপায়ে মুক্ত করার পরিকল্পনা করেছিলো। উজ্জল ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী। গ্রেফতারকৃত হুজির দুই সদস্য হলেন, হাফিজ ওরফে খালিদ ওরফে ইব্রাহীম গাজী ও মামুনুর রশিদ ওরফে বাচ্চু মোল্লা। অন্য ১২ ডাকাত হচ্ছেন, মোফাজ্জল হোসেন ওরফে বড় ভাই ওরফে দাদু (ডাকাত সর্দার), জহির উদ্দিন ভূঁইয়া ওরফে চৌধুরী, আতিকুর রহমান, মনিরুজ্জামান ওরফে নয়ন, লাড্ডু মোল্লা, কাইয়ুম শিকদার, আলাউদ্দিন শেখ, মুন্সি খসরুজ্জামান ওরফে মেজর , জাহাঙ্গীর হাওলাদার, সুব্রত দাস, মিন্টু কর্মকার ও অলিউল্লাহ হাওলাদার অলি।

গ্রেফতারের সময় ২ হুজি সদস্যের কাছ থেকে একটি বিদেশি একে- ২২ বোরের রাইফেল, একটি পাইপগান, ৪১ রাউন্ড গুলি, ১২টি জিহাদি বই, গান পাউডার, ককটেল, পাঁচটি কালো রঙের মুখোশ ও সংগঠন পরিচালনা করার কাজে ব্যবহৃত ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। এছাড়া ডাকাত দলের কাছ থেকে ৪ টি বিদেশি পিস্তল, ৩৩ রাউন্ড গুলি, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ, মুখোশ, চাপাতি, ছুরি, কাটার, হেক্সো ব্লেড, স্লাইড রেঞ্জ ও স্কচটেপ উদ্ধার হয় বলে দাবি গোয়েন্দাদের।

সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহাগনর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, গ্রেফতার হওয়া ডাকাতদের মূল টার্গেট ছিলো নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে এমন ব্যক্তিদের বাড়ীতে ডাকাতি করা। এই কাজের মূল পরিকল্পনা করতো হুজি সদস্যরা। পরিকল্পনা মোতাবেক তারা এ পর্যন্ত ৯টি ডাকাতি করে ৫ কোটি টাকা লুটের কথা স্বীকার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, ধোলাইপাড় পূবালী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডকে জিম্মি করে ডাকাতির পরিকল্পনায় জড়ো হয়েছিল।

আব্দুল বাতেন আরো জানান, এ বছরের ১৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহের ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানিতে ডাকাতির চেষ্টাকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে এক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে তারা পালায়। ডাকাত দলের সদস্যরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের বিভিন্নস্থানে ডাকাতি করে জেল খেটেছে। গ্রেফতার আতিকুর রহমানের দেয়া তথ্য মতে, রামপুরার বাসা থেকে অস্ত্রসহ ২ হুজি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে হুজি সদস্যরা জানিয়েছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি উজ্জলের নির্দেশে ও সংগঠন পরিচালনা করার লক্ষ্যে কাশিমপুর কারাগারে অবস্থানরত উজ্জ্বলকে যেকোনো উপায়ে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তারা আরো জানায়, বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে এই সংগঠনগুলো পরিচালনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে আর্থিক সক্ষমতা ছিল তা আগের মতো নেই। ফলে তারা ডাকাত দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ডাকাতি থেকে লুণ্ঠিত অর্থের ৩০ শতাংশ সংগঠনের কাজে ব্যয় করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ি থানায় ২টি ও রামপুরা থানায় ১টি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement