১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


উপজেলা নির্বাচনে আ’লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ

পছন্দের প্রার্থীর পক্ষেই এমপিরা
-

কৌশলগত কারণ দেখিয়ে দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারপরও মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে নির্বাচনী মাঠে এখন আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী কেবল আওয়ামী লীগই। অবশ্য এ নির্বাচনে কেন্দ্র কঠোর অবস্থানে থাকলেও মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব কিছুতেই কমছে না। তাদের আত্মীয়স্বজন ভোটের মাঠে না থাকলেও পছন্দমতো প্রার্থীকে জেতানোর জন্য জোরালো তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তৃণমূল আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, আজ ৮ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রথম ধাপের ১৩৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন। এর মধ্যে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী (ঘোড়া) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ মেহেদী হাসান সুমন (আনারস)। তৃণমূল আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই প্রার্থীকে জেতানোর জন্য জোরালোভাবে কাজ করছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনহাদুজ্জামান লিটন এবং বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি (প্রস্তাবিত) জাকির হোসেন জাকির। গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ওই তিনজনই স্থানীয় আওয়ামী লীগের পদধারী। তারা হলেন, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশরাফী মেহেদী হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আমজাদ হোসেন স্বপন। অ্যাডভোকেট আশরাফী মেহেদী হাসান গাজীপুর-৫ আসনের স্বতন্ত্র এমপি আখতারউজ্জামানের সমর্থিত এবং হাবিবুর রহমান হাবিব সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি মেহের আফরোজ চুমকির সমর্থিত। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিভক্তি লেগেই আছে।

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। তিনি স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ও কবিরহাট উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুন নাহার শিউলির ছেলে। ছেলে সাবাব চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভোট করায় এবার ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ‘ডিও লেটার’ বন্ধের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে কবিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুন নাহার শিউলির বিরুদ্ধে। চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বিরুদ্ধে ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেছেন মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী এমএ কুদ্দুস। আলী আজগর টগর এমপি তার ভাইকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী করেছেন। এমপি তার ভাইকে নির্বাচনে জেতানোর জন্য প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এসএএম জাকারিয়া আলম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমন চিত্র শুধু সুবর্ণচর, দামুড়হুদা বা মতলব উত্তর নয়, অনেক উপজেলায় ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তার করছেন ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীরা। প্রায় প্রত্যোক উপজেলায় দলীয় প্রতীকবিহীন এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ। তারপরও দলটির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এমপি-মন্ত্রীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে জোরালো তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। যদিও প্রভাবমুক্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপহার দিতে আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। তবে অনিশ্চয়তা দেখছেন দলটির এমপিদের বলয়ের বাইরের বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা। তারা বলছেন, কেন্দ্র থেকে নানা পথ অনুসরণ করেও উপজেলা নির্বাচনে এমপিদের আধিপত্য কমানো কোনোভাবেই সম্ভব হয়ে উঠছে না। কেন্দ্রের কোনো নির্দেশনা মানছেন না এমপি-মন্ত্রীরা। কেউ কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিজস্ব প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে এখনো প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন তৃণমূলের ত্যাগী ও নানা সময়ে বঞ্চিত প্রার্থীরা।

নির্বাচনে এমপিদের প্রভাব প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি নয়া দিগন্তকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে নির্দেশনা, সেটি ইতোমধ্যে আমাদের নেত্রী দিয়েছেন। তার এই বার্তাটি আমাদের এমপি-মন্ত্রীদের বুঝতে হবে। কাউকে সমর্থন নয়, তাদের জন্য শ্রেয় কাজ হবে-সবাইকে নিয়ে সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করা। আমরাও আশা করি, উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, এ নির্বাচনে জনপ্রিয়রাই নির্বাচিত হয়ে আসবেন। আমাদের নেতাকর্মীদের মাঝে নৌকা এবং নৌকার বিপক্ষের প্রতিযোগিতা বন্ধ করার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে দলের বিভেদ এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে অনৈক্য কমে আসবে।

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের নিবৃত্ত করার জন্য দলের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তাদের আরো উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এরপরও দলীয় নির্দেশ অমান্য করলে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের কোনো না কোনোভাবে শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭৩ জন এমপি বাদ পড়েছেন- এটা কি একরকম শাস্তি নয়! মন্ত্রিপরিষদে ২৫ জন নেই। সময়মতো শাস্তি হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য এবার প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করছে আওয়ামী লীগ। এটা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশল।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দাগনভূঞায় অগ্নিদগ্ধ পরিবারের মাঝে জামায়াতের উদ্যোগে গৃহ নির্মাণ উদ্বোধন ২৫ মে বঙ্গবাজার বিপণিবিতান নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী এখনো নিখোঁজ প্রেসিডেন্ট রাইসি : অনুসন্ধানে ৪০ দল ৫ দফা দাবিতে সারাদেশে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্মারকলিপি গাজীপুরে কারখানার ছাদ থেকে পড়ে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করুন : বাইডেনকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বগুড়ায় তীব্র লোড শেডিং, ২২ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে অসুস্থ গণ-অর্থায়নের মাধ্যমে যেভাবে এভারেস্টের চূড়ায় বাবর আলী ৩২ দিনে ৮ বার বাড়ল স্বর্ণের দাম ইরানি প্রেসিডেন্ট ওই হেলিকপ্টারে ছিলেন না! সফলতার সাথে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছি : মেয়র তাপস

সকল