২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘বিদেশে থাকা সন্ত্রাসীদের নির্দেশেই আ’লীগ নেতা ফরহাদ খুন’

-

বিদেশে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নির্দেশেই খুন হন বাড্ডা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ আলী। ঢাকার বাড্ডা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অটোরিকশা স্ট্যান্ড ও ডিশ ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে খুন হন ফরহাদ আলী।

১৫ জুন জুমার নামাজের পর বাড্ডার পূর্বাঞ্চল ১ নম্বর লেনের বায়তুস সালাম জামে মসজিদের পাশে ফরহাদ হোসেনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।

আজ শনিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন।

তিনি জানান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ বিশেষ অভিযানে ফরহাদ হত্যা মামলার মূল হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি ম্যাগাজিনসহ ১২টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন মো. জাকির হোসেন, মো. আরিফ মিয়া, মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে অনির, মো. বদরুল হুদা ওরফে সৌরভ ও মো. বিল্লাল হোসেন ওরফে রনি।

আবদুল বাতেন বলেন, ১০ জুলাই ফরহাদ হত্যা মামলার আসামি জহিরুল ইসলাম ওরফে সুজনকে গ্রেফতার করার পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দির ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ডিবি উত্তর বিভাগের একটি দল জাকির হোসেন ও আরিফ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় জাকির হোসেনের কাছ থেকে একটি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি এবং আরিফ মিয়ার কাছে থেকে চারটি গুলি উদ্ধার করা হয়।

তাদের তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক শাহ আলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবুল কালাম আজাদ, বদরুল হুদা ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের প্রত্যেকের কাছে থেকে একটি করে বিদেশি পিস্তল এবং ছয়টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

আবদুল বাতেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অটোরিকশা স্ট্যান্ড ও ডিশ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে ফরহাদ আলী খুন হন। বিদেশে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী রমজান, মেহেদী ওরফে কলিন্স ও আশিক আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ হত্যার নির্দেশ দেন।

ফরহাদ হত্যার কয়েক দিন আগে রমজান ভারতে চলে যান। রমজান তাঁর আপন ছোট ভাই সুজন এবং অপর দুজন সহযোগী জাকির ও আরিফের ওপর হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব দেন। অন্যদিকে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদীর ‘বাংলাদেশে সামরিক কমান্ডার’ অমিত তাঁদের ভাড়াটে খুনি নুর ইসলাম, অনির, সৌরভ, সাদকে দায়িত্ব দেন।

খুনের সিদ্ধান্ত অনুসারে গত ১৫ জুন সকালের দিকে অমিতসহ খুনিরা উত্তর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে মিলিত হন। অমিতের নির্দেশনায় সিদ্ধান্ত হয়, নুর ইসলাম, কালাম আজাদ ওরফে অনির ও হুদা ওরফে সৌরভ মূল হত্যাকাণ্ডে অংশ নেবেন। আর অমিতের সঙ্গে ব্যাকআপ হিসেবে থাকবেন সাদ ওরফে সাদমান।

পরিকল্পনা অনুসারে ১৫ জুন দুপুরে আরিফ খুনিদের মসজিদের কাছে নিয়ে গিয়ে বাইরে থেকে ফরহাদকে চিনিয়ে দেন। নামাজ শেষে ফরহাদ মসজিদ থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খুনিরা জনসমক্ষে ফরহাদকে উপর্যুপরি গুলি করে পালিয়ে যান।

এ হত্যাকাণ্ডের পর অমিত তাৎক্ষণিকভাবে এক লাখ টাকা খুনিদের ভাগ করে দেন। ফরহাদ খুনের পরপরই দেশ ত্যাগ করেন রমজানের ছোট ভাই সুজন।

৪ জুলাই রাতে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাতনামা দুজন সন্ত্রাসী নিহত হন। পরে তাঁদের পরিচয় জানা যায়। তাঁরা হলেন ফরহাদ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম খুনি নুর ইসলাম ও শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদীর সামরিক কমান্ডার অমিত।


আরো সংবাদ



premium cement