২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাহমুদউল্লাহ-ইমরুল যেভাবে উড়িয়ে দিলেন রশিদ খানকে

মাহমুদউল্লাহ-ইমরুল আফগান স্পিনার রশিদ খানের বেশ চড়াও হন। তার শেষ তিন ওভারেই আসে অধিকাংশ রান। - ছবি: সংগৃহীত

প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে তৃতীয় উইকেটে বেশ ভালোভাবেই এগুচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাশ। দুজন মিলে ৬৩ রানের জুটি গড়েন। এরপরই একটা ঝড় বয়ে যায়। তিন ওভারের ছোট্ট ঝড়। এতে ২ উইকেটে ৮১ থেকে ক্ষণিকের ঝড়ে ৫ উইকেটে ৮৭ রানের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ।

রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে স্বল্প রানে অলআউটের শঙ্কা জাগে টাইগার শিবিরে। সেখান থেকেই দলকে উদ্ধার করেন ফিনিশার খ্যাত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও প্রায় ১১ মাস পরে জাতীয় দলে ফেরা ইমরুল কায়েস। তারা দুইজন ষষ্ঠ উইকেটে ইতিহাস গড়েন। দলের চাহিদা মোতাবেক খেলে দুজন মিলে উইকেটে কাটিয়ে দেন প্রায় ২৫ ওভার। স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মহামূল্যবান ১২৮ রান।

বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে ষষ্ঠ উইকেটের সর্বোচ্চ রানের জুটি হলো এটি। বোলারদের ন্যুনতম সুযোগ না দিয়েই ধীরে-সুস্থে পরিস্থিতি বুঝে খেলতে থাকেন দু‘জন। প্রায় এগারো মাস ওয়ানডে খেলতে নেমে ইমরুলও দেন দারুণ দায়িত্বশীলতার পরিচয়।

রানরেটের দিকে না তাকিয়ে দুজন মিলে যতটা সম্ভব বেশিক্ষণ ব্যাটিং করার দিকেই মনোযোগী। যার ফলশ্রুতিতে হয়ে যায় ১২৮ রানের জুটি। বাংলাদেশ পেয়ে যায় ২৪৯ রানের লড়াকু। ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছেন উইকেটে থাকাকালীন একদম শেষপর্যন্ত খেলার পরিকল্পনাই করেছিলেন দুজন।

এর মধ্যে মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল আফগান ডেঞ্জারম্যান খ্যাত রশিদ খানের উপর বেশ চড়াও হন। মাত্র চারদিন আগেই বাংলাদেশকে হারিয়ে নিজের জন্মদিন উদযাপন করেন রশিদ খান। সেই রশিদ খানের ওভারেই বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাকান। আর অধিকাংশ রানই আসে রশিদ খানের শেষ তিন ওভারে।

ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ম্যাচসেরার পুরষ্কার গ্রহণ করে মাহমুদউল্লাহ বলেন, রশিদ খান অসাধারণ বোলার কিন্তু এমন না যে তাকে খেলা যাবে না। রিয়াদ আরো বলেন, আমি এর আগে তাকে ঠিক মতো খেলতে পারি নাই। কিন্তু আমরা দুজনে ঠিক করলাম তাকে উইকেট দিব না। আমরা চেয়েছিলাম আরো গভীরে যেতে এবং এর শেষটা দেখতে। শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছি।

মাহমুদউল্লাহ রশিদ খান সম্পর্কে বলেন, তার সম্পর্কে ভাবার সময় ছিল না আমাদের কারণ শেষ চারদিনে আমরা তিনটি ম্যাচ খেলেছি। আমি তার সাথে খেলেছি কোন কিছু না জেনেই।

নিজেদের জুটি সম্পর্কে মাহমুদউল্লাহ বলেন, এটা ছিল যার যার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা। কারণ ইমরুল অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খেলোয়ার। আমরা চেয়েছিলাম আমাদের পরিকল্পনা মাফিক তাকে খেলাতে। সে মাত্র গতকালই (খেলার একদিন আগে) এসেছে এবং এই গরমে সে যেভাবে খেলল তাকে নিয়ে আমি গর্বিত। সে পূর্বে কখনো ছয় নাম্বারে ব্যাটিং করেনি, ও হলো টপঅর্ডারের ব্যাটসম্যান, তার জন্য ছয় নাম্বারের ব্যাটিং করা অন্যরকম।

পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ম্যাচসেরার পুরষ্কার গ্রহণ করে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আবহাওয়া প্রচন্ড গরম ছিল এবং উইকেটে থাকাকালীন মনে হচ্ছিল কেউ ভেতরের সকল পানি শুষে নিচ্ছে। তবে শেষপর্যন্ত আমরা ভালো করেছি, জয়ের পুরো কৃতিত্ব মোস্তাফিজের। আমরা জানতাম যে তাদের অনেক বিগ হিটার আছে এবং স্নায়ু চাপ দারুণভাবে সামাল দিতে পারে। কিন্তু শেষপর্যন্ত আমরাই জয়ীর কাতারে।’

‘দলের জন্য অবদান রাখতে পারাটা সবসময়ই আনন্দের উল্লেখ করে মাহমুদউল্লাহ বলেন, আমি ও ইমরুল দারুণ ভালো জুটি গড়েছি। আমরা চেষ্টা করছিলাম একদম শেষপর্যন্ত খেলার। তবে শেষে এই জয়ের কৃতিত্ব পুরোপুরি বোলারদের, তারা দারুণভাবে এটি ডিফেন্ড করেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে।’

ব্যাট হাতে ৭৪ রানের ইনিংস খেলা মাহমুদুল্লাহ অবদান রেখেছেন বল হাতেও। আফগান ইনিংসের ২৫তম ওভারে আক্রমণে এসে চতুর্থ বলেই ফিরিয়ে দেন ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শেহজাদকে। পাঁচ ওভার বোলিং করে খরচ করেন মাত্র ১৭ রান। 

আরো পড়ুন:  ইমরুল-মাহমু্দউল্লাহ যে রেকর্ড ভাঙলেন  

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:১৪

ইমরুল বেশ কয়েক মাস জাতীয় দলের বাইরে। দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে ডাকা হয় তাকে। তামিমের সাথে ওপেনিং জুটিতে বেশ কয়েকটি রেকর্ড রয়েছে তার। কিন্তু দলে কিছুটা অনিয়মিত ছিলেন। পজিশনসহ আরো বেশ কিছু কারণ দেখিয়ে ইমরুলকে দলের বাহিরে রাখা হয়।

বাংলাদেশ আফগানিস্তানের সাথে ৩ রানের ব্যবধানে জিতেছে। ২৪৯ রানের লড়াই করার মতো পুজিঁটা এসেছে ইমরুল-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে। বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরানো সেই লড়াইয়ের মধ্যেই ১৯ বছরের একটা রেকর্ডও ভেগেছেন তারা। গড়েছেন ১২৮ রানের জুটি। ওয়ানডেতে ষষ্ঠ উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ।

বলা হয় রেকর্ড গড়াই হয় সেটা ভাঙ্গার জন্য। ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ২৯৩ রান লক্ষ্য দেয় ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৯৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর সেদিন আল শাহরিয়ার ও খালেদ মাসুদ পাইলটের ষষ্ঠ উইকেটে যে লড়াইটা চালান, সেটি দলকে দুর্দান্ত কোনো জয় এনে দেয়নি। তবে হারের ব্যবধান কমায়। ক্যারিবীয়দের লক্ষ্যটা আরও বিশাল হয়ে যায় ৯৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে। অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেটে শাহরিয়ার-মাসুদের ১২৩ রানের সৌজন্যে পুরো ৫০ ওভার খেলে ৫ উইকেটে ২১৯ করতে পারে বাংলাদেশ।

ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সেরা পাঁচ জুটির চারটিতেই আছে মাহমুদউল্লাহর নাম। নিয়মিত ছয়-সাতে নামেন বলেই হয়তো ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে থাকে তার নাম। আজকের জুটিটা ইমরুল-মাহমুদুল্লাহর কাছে বিশেষভাবে মনে থাকবে, কারণ এশিয়া কাপে টিকে থাকার লড়াই ছিল এই ম্যাচ, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার ম্যাচ ছিল এটা।

 

আরো পড়ুন: বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ -ইমরুল
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:২৯

কাছাকাছি সময়ে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম আউট হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ শিবিরে যে হতাশা নেমে এসেছিল তাতে আশার আলো ছড়াচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস। এই রিপোর্ট  লেখা পর্যন্ত তারা দুজনে ৮৮ রানের জুটি গড়েছেন।

চলতি এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে এই আফগানিস্তানের কাছে খুবই বাজেভাবে হেরেছিল বাংলাদেশ। বলা যায় এক রকম বিধ্বস্ত হয়েছিল হয়েছিলেন মাশরাফি-সাকিবরা। সুপার ফোরের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টেস্ট ক্রিকেটে নবীন সদস্য দেশটির মুখোমুখি হয় আবার। এ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটি কিছুটা দৃঢ়তা দেখালে পরে আবার তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দল। এই চরম বিপর্যয় কাটাতে লড়ে যাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল কায়েস। 

রোববার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪০ ওভার শেষ পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান নিয়েছে।  ইমরুল কায়েস ৪১ ও মাহমুদউল্লাহ ৫০ রানে ব্যাট করছেন।

এর আগে দলীয় ১৬ রানের মাথায় ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর (৬) উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। দুই রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেন ওয়ান ডাউনে নামা মোহাম্মদ মিঠুনও (১)।  

এরপর মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস তৃতীয় উইকেট জুটিতে কিছুটা দৃঢ়তা দেখান। দুজনে মিলে ৬৩ রানের জুটি গড়েন। পরে অবশ্য লিটন ৪১ এবং মুশফিক ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন। দ্রুত ফিরে যান সাকিব আল হাসানও (০)।

এই ম্যাচের বাংলাদেশ একাদশে চমক রয়েছে। গতকালই দলের  সঙ্গে যোগ দেওয়া ইমরুল কায়েস একাদশে সুযোগ পেয়েছেন। মুমিনুল হকের জায়গায় নেওয়া হয়েছে তাঁকে।

বাদ পেড়েছেন পেসার রুবেল হোসেনও। তাঁর জায়গায় নেওয়া হয়েছে স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুকে।

আরো পড়ুন : পাঁচ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ করলেন মুশফিক
নয়া দিগন্ত অনলাইন,  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

টুর্নামেন্টের শুরুতে ওয়ানডে ক্রিকেটের পাঁচ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ করতে মুশফিকুর রহিমের প্রয়োজন ছিলো ১৭২ রান। শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করার পথে।

তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে বিশ্রাম ও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ২১ রান করে আউট হওয়ায় বেড়ে যায় অপেক্ষা। অবশেষে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে ব্যক্তিগত এ মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন মুশফিক।


রোবারের ম্যাচে নামার আগে মুশফিকের প্রয়োজন ছিল ৭ রান। ইনিংসের একাদশতম ওভারে গুলবাদিন নাইবের ওভারে ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে বাংলাদেশের তৃতীয় ও বিশ্বের ৮৪তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন মুশফিক। তার আগে বাংলাদেশের পক্ষে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান নিজেদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement