২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জেএসসিতে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে ফি আদায় টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজে বাধ্যতামূলক কোচিং

-

গাজীপুরের টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়মিত ক্লাস শেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলকভাবে প্রায় আধা ঘণ্টার কোচিংয়ের নামে মাসে এক হাজার টাকা করে ফি দিতে হচ্ছে। মাসিক বেতনের সাথে অতিরিক্ত এই টাকা গুনতে হওয়ায় অভিভাবকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে।
অভিভাবকেরা জানান, প্রতিদিন ক্লাস শেষে ৫ম, ৮ম ও ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বেলা ১২:৫০টা থেকে ১৩:১৫টা পর্যন্ত প্রায় ২৫ মিনিটের বাধ্যতামূলক কোচিং করানো হয়। এজন্য প্রভাতী শাখার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০০ হাজার এবং দিবা শাখার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হয় ৫০০ টাকা করে। প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীর মাসিক কোচিং ফি বাবদ প্রায় ১০ লাখ টাকার মধ্যে অধ্যক্ষ নিজে আশি ভাগ এবং বাকি ২০ ভাগ টাকা যেসব শিক্ষক কোচিং ক্লাস নেন তাদের মধ্যে বণ্টন করা হয় বলে সূত্র জানায়।
এ ছাড়া জেএসসির নিবন্ধন, ফরম ফিলাপ, অ্যাডমিট কার্ড ইত্যাদির অজুহাতে বছরে তিন কিস্তিতে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিনা রশিদে মোট ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা করে আদায় করা হয়। অথচ এ ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে বোর্ড নির্ধারিত ফি সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা। এবারের জেএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৭০০ টাকা করে গত এপ্রিল মাসে প্রথম পার্বিক পরীক্ষা সময়ে আদায় করা হয়েছে। পরবর্তী দুই কিস্তি যথাক্রমে ফরম ফিলাপ ও অ্যাডমিডকার্ড বিতরণের অজুহাতে নেয়া হয়। আর এসব টাকা আদায় করা হয় বিনা রশিদে সরাসরি শ্রেণিকক্ষ থেকে। এমনকি জেএসসি পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষার নামেও প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করা হয়। অথচ জেএসসিতে ব্যবহারিক পরীক্ষার কোনো অস্তিত্বই নেই।
এ দিকে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বারো মাসের বেতন নেয়ার নিয়ম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত অতিরিক্ত আরো চার মাসের বেতন নেয়া হয়। এ ছাড়া মডেল টেস্ট, একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ বা ইয়ার চেঞ্জ, ব্যবহারিক পরীক্ষা, সেশন ফি, রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপ ইত্যাদি নানা অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এসএসসি ও এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র বাবদ বিনা রশিদে এক হাজার টাকা করে, মূল সনদপত্র ২০০ টাকা করে এবং অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট (নম্বরপত্র) ৫০০ টাকা করে নেয়া হয়। অথচ এসব খাতে কোনো টাকা নেয়ারই নিয়ম নেই। একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হলেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সেশন ফির নামে গুনতে হয় সাত থেকে নয় হাজার টাকা। নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রত্যেক অকৃতকার্য বিষয়ে জরিমানার নামে আদায় করা হয় পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা করে। এ ছাড়া প্রতি বছরই নিবন্ধন ও ফরম ফিলাপের নামে সরকার নির্ধারিত ফির দুই থেকে চার গুণ বর্ধিত হারে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়ে থাকে। ইতঃপূর্বে উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রায় ১৬ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার পর বর্তমানে অভিনব কায়দায় আবার অতিরিক্ত ফি নেয়া হচ্ছে।
এ দিকে প্রতি বছরই বিভিন্ন প্রকাশনা কোম্পানি তাদের বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অধ্যক্ষকে সেলামির নামে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে থাকে। অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অধ্যক্ষ বই থেকেও কমিশন খান। যার ফলে অভিভাবকদের বাধ্য হয়ে বেশি মূল্যে বই কিনতে হয়।
অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, সরকার শিক্ষকদের বেতন ও প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও আমরা এর কোনো সুফল ভোগ করতে পারছি না। এমপিও বা সরকারি অংশের বেতন, শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন, সেশন ফি ইত্যাদি ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির মার্কেট তাদের একটি বড় আয়ের উৎস। এর পরও তারা অতিরিক্ত বেতনসহ নানা অজুহাতে অভিভাবকদের ওপর এক ধরনের জুলুম চালিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে থাকে।
এসব ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো: আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, আমরা বাধ্যতামূলকভাবে কোনো কোচিং করাই না। অন্যান্য বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ‘সরাসরি সাক্ষাৎ’ এর প্রস্তাব দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা জানান, এভাবে গণহারে ও বাধ্যতামূলকভাবে কোচিং করানোর কোনো বিধান নেই। তবে পড়ালেখায় দুর্বল এমন শিক্ষার্থীর অভিভাবক যদি বিশেষ কোচিং কারানোর লিখিত আবেদন জানান; সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ টাকার মাসিক কোচিং ফি নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে কোচিং করানো যেতে পারে। এসব বিষয়ে অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায় আরো ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট তাপপ্রবাহ মে পর্যন্ত গড়াবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ গ্যাসের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্পে ঋণ বিতরণ করা যাবে না

সকল