২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বন্দরে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে চরম দুর্ভোগ ওয়াসার গাড়ি এলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে মানুষ

-

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার তীব্র পানিসঙ্কটে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। পানির সঙ্কটের ফলে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তাদের গাড়ি দিয়ে পানি সরবরাহ করলেও তা অপ্রতুল হওয়ার দরুন প্রতিদিন পানিযুদ্ধ দেখা দিচ্ছে। পানির দুর্ভোগে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠছে। আর অচিরেই এই সঙ্কটের অবসান না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, এক মাস ধরে বন্দর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা যাচ্ছে। উপজেলার ছালেহ নগর এলাকা, বাবুপাড়া, সোনাকান্দাসহ অন্য আরো এলাকায় তীব্র পানিসঙ্কট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ প্রায় এক মাস এই পানিসঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যে কারণে ওয়াসার গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক মাস বন্দরের ওয়াসার তীব্র পানিসঙ্কট দেখা দিয়েছে। একপর্যায়ে এই সঙ্কট এতটাই প্রকট হয়েছে যে, এখন পানি একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ গাড়ি দিয়ে দিনে একবার পানি সরবরাহ করে থাকে বন্দরের বিভিন্ন এলাকায়। তবে সেই পানি চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়ার দরুন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী পানি সংগ্রহ করতে রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তবে এই হুড়োহুড়ির একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পানি নিয়ে লড়াই শুরু হয়ে যায়। যেকারণে প্রায়ই নানা অঘটন ঘটছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, বন্দরে পানিসঙ্কট নতুন কিছু নয়। বিগত বছরগুলোতেও দফায় দফায় ওয়াসার পানিসঙ্কট দেখা দেয়। দীর্ঘ দিনের এসব তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে বন্দরের প্রত্যেকটি এলাকায় ওয়াসার পৃথক পৃথক পানির পাম্প স্থাপনের দাবি ছিল তাদের; কিন্তু সেসব দাবির কোনোটিই পূরণ হয়নি। যদিও মধ্যখানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওয়াসার পানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে এই সঙ্কট অনেকাংশে কমে আসে। তবে বর্তমানে আবারো এই পানিসঙ্কট দেখা দিয়েছে বন্দরের বিভিন্ন এলাকায়।
ছালেহ নগর এলাকার ফাতেমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকেই পানি সংগ্রহ করতে কলসি-বালতি নিয়ে ওয়াসার পানির গাড়ির দিকে ছুটতে হয়। তবে সেখানে যতটুকু পানি দেয়া হয় তা চাহিদার তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। এ কারণে সেখানে প্রতিদিন পানি সংগ্রহ করতে দিয়ে সবাইকে লড়াই করতে হয়। এ নিয়ে নানা বাগি¦তণ্ডাসহ ঝগড়া-লড়াইয়ের ঘটনা ঘটে চলেছে; কিন্তু পানিসঙ্কট কিছুতেই মিটছে না। এই সঙ্কট স্থায়ীভাবে সমাধা করতে হলে এলাকায় ওয়াসার পাম্প স্থাপন করতে হবে, যা আমাদের প্রাণের দাবি; কিন্তু এই দাবি এখনো বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
পাশের বাবুপাড়া এলাকার রেহেনা আক্তার জানান, এখানে দীর্ঘ দিন ওয়াসার পানির স্বাভাবিক সরবরাহ নেই। তবে সম্প্রতি পানিসঙ্কট আরো তীব্র হয়েছে। তাই প্রতিদিন পানি সংগ্রহ করতে ওয়াসার গাড়ির দিকে ছুটতে হয়। আর তাতেও চাহিদা পূরণ না হলে অন্যত্র থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়।
সোনাকান্দা এলাকার সোলেমান মিয়া বলেন, কিছু দিন পর পর ওয়াসার পানির সঙ্কট দেখা দেয়। এভাবে আর কত দিন চলা যায়। আমরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চাই। এখন তো পানিসঙ্কটের কারণে একবার ছুটতে হয় ওয়াসার গাড়ির দিকে; সামান্য পানিতে চাহিদা পূরণ না হওয়ায় ফের ছুটতে হয় বিকল্প কোনো উৎসের দিকে। এভাবে জীবন অনেকটা বিষিয়ে উঠেছে।
বন্দরবাসীর দাবি, কিছু দিন পর পর ওয়াসার পানিসঙ্কট দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ইতোমধ্যে এলাকাভিত্তিক পৃথক পৃথক ওয়াসার পাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী; কিন্তু সেই দাবি আদৌ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যে কারণে এই সঙ্কট কিছু দিন পর পর বন্দরবাসীর ঘাড়ে চেপে বসছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আন্দোলন-সংগ্রাম করা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement