২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আবার শেকড় গজাচ্ছে হাত-পায়ে

বৃক্ষমানব আবুল বাজানদার পুনরায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি

-

বৃক্ষমানব হিসেবে পরিচিত আবুল বাজানদার হাত-পায়ে শেকড় গজানো অবস্থায় পুনরায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মা আমেনা বেগমকে সাথে করে ঢাকা মেডিক্যালে পৌঁছান তিনি। এরপরই চিকিৎসকেরা তাকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে নেন। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, চিকিৎসার মাঝপথে চলে যাওয়ায় আবার নতুন করে তার চিকিৎসা শুরু করতে হবে। তার জন্য আজ সোমবার একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হতে পারে। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে হাতে-পায়ে শেকড় গজানো এক বিরল রোগ নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এরপর প্রায় দুই বছর হাসপাতালে থাকার পর কাউকে কিছু না বলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান তিনি।
গতকাল হাসপাতালে আবুল বাজানদার সাংবাদিকদের বলেন, তার হাতে নতুন করে শেকড় গজিয়েছে। তিনি আর সহ্য করতে পারছেন না। যার কারণে আবারো ঢামেক হাসপাতালে ছুটে এসেছেন। হাসপাতাল থেকে কেন চলে গিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে আমি ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার এই বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজে সহযোগিতা করেছিলেন। তার নির্দেশনায় হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমার হাতে ও পায়ে ২৫টি অস্ত্রোপচার করেছিলেন। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু আড়াই বছর হাসপাতালে থাকার একপর্যায়ে আমি হতাশ হয়ে পড়ি। এতগুলো অপারেশনের পরেও আমি যখন সুস্থ হচ্ছিলাম না, আমার হাতে ও পায়ে আবারও শেকড় গজাচ্ছিল। তখন আমি হতাশ হয়ে পড়ি। একপর্যায়ে রাগের মাথায় কাউকে কিছু না বলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে খুলনায় গ্রামের বাড়িতে চলে যাই। কিছু দিন যাওয়ার পর আবারো নতুন করে হাতে-পায়ে শেকড় গজাতে শুরু করে। তিনি আরো বলেন, এখন আমি ভুল বুঝতে পেরেছি, হাসপাতাল থেকে আমার চলে যাওয়াটা ঠিক হয়নি। আমি বাঁচতে চাই, সাধারণ মানুষের মতো সুস্থ হয়ে কাজ করে খেতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডাক্তার সামন্ত লাল সেন জানান, বাজানদার হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই ওর সাথে আমি বার বার ফোনে যোগাযোগ করেছি। তাকে ফিরে আসতে বলেছি। কিন্তু সে আসেনি। এখন এমন সময় এসেছে যে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু চিকিৎসার মাঝে দীর্ঘ বিরতি হওয়ায় নতুন করে তার চিকিৎসা শুরু করতে হবে। তার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হবে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজ সোমবার বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে।
আবুল বাজানদার ১০ বছর ধরে হাত-পায়ে শেকড়ের মতো গজিয়ে ওঠা বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছিলেন। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সব খরচ রাষ্ট্রীয়ভাবে করার নির্দেশ দেন। সে সময় দুই বছরে তার ওপর ২৫ দফা অস্ত্রোপচার চালানো হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ এনে ঢামেক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান আবুল বাজানদার।


আরো সংবাদ



premium cement