০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভয়াবহ আগুন থেকে রক্ষা পেল কয়েক শতাধিক যাত্রী

দমকল বাহিনীর সদস্যরা লঞ্চকর্মীদের সহায়তায় ঘন্টাখানেকের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। - ছবি: নয়া দিগন্ত

অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল চাঁদপুরের এমভি রফরফের তিন শতাধিক যাত্রী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ার সময় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে লঞ্চটিতে ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে লঞ্চটি টার্মিনালের কাছে অবস্থান করায় যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।

অগ্নিকান্ডে যাত্রবাহী লঞ্চের ইঞ্জিন, জেনারেটর, পাওয়ার সেকশন, হাওয়ার মেশিন, ডায়াস মেশিনসহ ৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দাবী করে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় লঞ্চটি চাঁদপুর টার্মিনাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় লঞ্চে প্রায় তিন শতাধিক যাত্রী ছিলো। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে চাঁদপুর উত্তর, দক্ষিন ও নৌ-ফায়ার স্টেশনের ৩টি ইউনিট পৌনে ১ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়।

রফরফ লঞ্চের মাষ্টার মো: মামুনুর রশিদ জানান, ইঞ্জিনটি চালু করার পরপরই বিকট শব্দ হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষণিক যাত্রীদের টার্মিনালে নামিয়ে দেয়া হয়।

এরপর লঞ্চে থাকা ও আশপাশের লঞ্চের স্টাফ, নৌ-টার্মিনালে থাকা ব্যবসায়ীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। ২০ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

মেসার্স রাকিব ওয়াটার ওয়েজের কোম্পানীর ম্যানেজার মো.ফরিদ আহম্মেদ জানান, অগ্নিকান্ডে আমাদের লঞ্চের ইঞ্জিন, কেবিন ও আসবাবপত্র সহ প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

খবর পেয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির, কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লে. এনায়েত উল্লাহ, বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

চাঁদপুর ফায়ার স্টেশনের উপ-পরিচালক রতন কুমার জানান, আমাদের ৩টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তদন্ত শেষে জানানো হবে।

আরো পড়ুন: ১৪ বছরেও প্রত্যাহার হয়নি চাঁদপুর সেতুর টোল : জনমনে অসন্তোষ

শরীফ চৌধুরী, চাঁদপুর ২৭ জুন ২০১৮

চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীর ওপর নির্মিত দুই উপজেলার সংযোগস্থাপনকারী চাঁদপুর সেতুতে দীর্ঘ ১৪ বছরেও টোল প্র্রত্যাহার না করায় জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। টোল প্র্রত্যাহার দাবিতে দফায় দফায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ, অবরোধ, অবস্থান কর্মসচি পালন করেও কোনো কাজ হয়নি। মিলেছে শুধু আশ্বাস। অথচ চাঁদপুর সেতু নির্মাণ ব্যয়ের দ্বিগুণ প্ররিমাণ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হলেও এখনো টোল আদায় করা হচ্ছে।

চাঁদপুর সড়ক বিভাগের তথ্য মতে, চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীর ওপর ২০০৪ সালে ১৮ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে চাঁদপুর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চাঁদপুর সেতু। ২৪৮ মিটার দীর্ঘ এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। গত ১৪ বছরে প্র্রায় ৩৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। কিন্তু এখনো টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ সেতু থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে।

বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল বাদে যেকোনো যানবাহন সেতু পার হতে হলে প্রতিবার গুণতে হয় বিভিন্ন অঙ্কের টাকা। এর মধ্যে ট্রেইলর ২৫০ টাকা, হেভি ট্রাক ১৭০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ১০০ টাকা, বড় বাস ৯০ টাকা, মিনি ট্রাক ৭৫ টাকা, কষি কাজে ব্যবহৃত যান ৬০ টাকা, মিনি বাস ৫০ টাক, মাইক্রোবাস ৪০ টাকা, ফোর হুইল যানবাহন ৪০ টাকা, সিডানকার ২৫ টাকা, ৩-৪ চাকার মোটরাইড যান থেকে ১০ টাকা হারে টোল আদায় করা হয়। বিভিন্ন সময়ে এ হারের চেয়ে অধিক টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। এমন কি ঈদ মওসুমে প্রতিটি গরু পারাপার করা হলে পাঁচ টাকা করে আদায় করা হয়।

আবু মুছলেহ উদ্দীন, রাশেদ গাজী, ছোবহান মিজিসহ একাধিক চালক আক্ষেপ করে বলেন, আর কত? একটা অটোতে যাত্রী উঠুক আর না উঠুক তাদের প্রতিবার ১০ টাকা করে দিয়ে যেতে হয়। অনেক সময় ব্রিজের কাছে যেতে দেয় না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের টোলঘর অতিক্রম করলেই টাকা না দেয়ার উপায় থাকে না। ভবিষ্যতে যেন সেতুটি টোলমুক্ত রাখা হয় এমনটাই দাবি তাদের। ফরিদগঞ্জের চড়বড়ালী গ্রামের সোহেল হোসেন রিপন, বাগাদী এলাকার গোলাম সরোয়ার, এমরান হোসেনসহ আরো অনেকেই জানান, মানুষের মঙ্গলের জন্য সরকার এ সেতু নির্মাণ করলেও আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। সরকার জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে অন্তত এ সেতুর টোল প্রত্যাহার করে নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এ দিকে চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের টোলঘর ব্রিজের দক্ষিণ পাশে নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও আজো তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। যে কারণে ব্রিজের শহর লাগোয়া নির্বাচন অফিস, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন এমনকি পৌরসভার বিশুদ্ধ পানি শোধনাগারের কাছে কোনো যান যেতে হলে টোল দিয়ে যেতে হয়।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার জানান, সেতু দিয়েই ফরিদগঞ্জ, রায়পুর, লক্ষ্মীপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মানুষ চলাচল করে। এত বছর সেতুর টোল আদায় করায় মানুষের মনে ক্ষোভ সষ্টি হয়েছে। চাঁদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া

টোল প্রত্যাহারের বিষয়টি সংসদে উপস্থাপন করেছেন। জেলা মাসিক উন্নয়ন সভায়ও বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ করলেও টোল আদায় বন্ধ হয়নি।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, গত তিন-চার বছর ধরে একই ব্যক্তি সিন্ডিকেট করে দরপত্র জমা দেন। একই ব্যক্তি বিভিন্ন লাইসেন্সের মাধ্যমে সেতুটি ইজারা নেন। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকায় মেসার্স এম আই ট্রেডিং সেতুটি ইজারা পায়। প্রতি বছর সেতুর জন্য পাঁচ-ছয় বার দরপত্র আহ্বান করতে হয়।

দীর্ঘ ১৪ বছরে এ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ না করায় অসন্তোষ বাড়ছে পরিবহন শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। ইতোমধ্যে টোল প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও সংশ্লিষ্টরা ভ্রক্ষেপ করছেন না। আগামী অর্থ বছরে যেন আর সেতুর টোল আদায় করা না হয় এমনটাই দাবি সাধারণ মানুষের।



আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইলগামী সকল জাহাজে হামলার হুমকি হাউছিদের কংগ্রেস সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও ৫০ আসন পাবে না : মোদি প্যারিসের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলিস্তিনিপন্থী শিক্ষার্থীদের সরিয়েছে পুলিশ চুক্তিতে সম্মত হতে হামাসকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ইসরাইলের গফরগাঁওয়ে লরিচাকায় পিষ্ট হয়ে নারী নিহত রোহিঙ্গা গণহত্যা : মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার দ্রুত নিরসনে আশাবাদী বাংলাদেশ-গাম্বিয়া দোয়ারাবাজারে মইন হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে বিক্ষোভ সাংবাদিকদের সুরক্ষায় প্রতিটি দেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন জোরদারের আহ্বান এডিবি প্রেসিডেন্টের মিরসরাইয়ে তীব্র তাপদাহে মরছে মাছ : লোকসানের মুখে চাষিরা মহেশখালীতে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা, এগিয়ে জয়নাল

সকল