২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কাই সত্য

একদিনও টিকল না পুঁজিবাজারের উত্থান

-

বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কাই অবশেষে সত্য হলো। একদিনও টিকল না পুঁজিবাজারের ঘুরে দাঁড়ানো। মঙ্গলবার দেশের দুই পুঁজিবাজার সূচকের বড় রকম উন্নতির পর গতকাল আবারো পতন ঘটেছে। তাই স্বস্তিতে আর ফেরা হলো না বিনিয়োগকারীদের। এখন তাদের আশঙ্কা আবারো ধারাবাহিক পতন ঘটবে বাজার সূচকের। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিনিয়োগকারীদের সাথে বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। হাওয়ায় ভাসতে থাকা কিছু গুজবকে সামনে রেখে মঙ্গলবার হঠাৎ করে দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচকের অস্বাভাবিক উল্লম্ফন ঘটে। টানা পতনের সূচকের এ উন্নতিতে বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও পরিবর্তিত অবস্থা টিকে থাকা নিয়ে সন্দেহ ছিল সবার। কারণ এর আগে গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর দু’দিন সূচকের বড় ধরনের উন্নতি ঘটলেও পরবর্তিতে তা আর ধরে রাখতে পারেনি বাজারগুলো। কারণ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ মুহূর্তে চরম আস্থাহীনতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাজার। তাই বাজার আচরণের সাময়িক এ পরিবর্তন আস্থা পুনরুদ্ধারে যথেষ্ট নয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৪০ দশমিক ০১ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৪ হাজার ৮২১ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি বুধবার দিনশেষে নেমে আসে ৪ হাজার ৭৮১ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ১৮ দশমিক ৬৫ ও ৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট। এর আগে মঙ্গলবার ১১০ পয়েন্টের বেশি উন্নতি ঘটে ডিএসইএক্স সূচকের। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ৯১ দশমিক ৮৪ ও ৫৪ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট। এখানে সিএসই শরিয়াহ সূচক হারায় ৬ দশমিক ২৪ পয়েন্ট। সূচকের পতন লেনদেনও প্রভাব ফেলে ঢাকা বাজারে। ডিএসই গতকাল ৩২৪ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ৪ কোটি টাকা কম। মঙ্গলবার বাজারটির লেনদেন ছিল ৩২৮ কোটি টাকা। তবে লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে। এখানে ১৩ কোটি টাকা থেকে ১৫ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন। মঙ্গলবার পুঁজিবাজার সূচকের বড় ধরনের উন্নতিতে বিনিয়োগকারীদের অনেকে সূচকের কমবেশি উন্নতি আশা করলেও গতকাল লেনদেনের শুরুতেই তাদের হতাশ হতে হয়। লেনদেনের শুরুতেই বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে দুই বাজার। ঢাকা স্টকে প্রধান সূচকটি ৪ হাজার ৮২১ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে দুপুর ১২টায় সূচকটি নেমে আসে ৪ হাজার ৭৭৭ পয়েন্টে। এ সময় ডিএসই সূচকের অবনতি ঘটে ৪৪ পয়েন্ট। সূচকের এ অবস্থান থেকে ফের ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা যায়। দুপুর সাড়ে ১২টায় আবার ৪ হাজার ৭৯৬ পয়েন্টে উঠে। এরপরই শুরু হয় পতন। বেলা ২টায় ডিএসই সূচক নেমে আসে ৪ হাজার ৭৬৩ পয়েন্টে। তবে শেষ আধঘণ্টায় হারানো সূচকের কিছুটা ফিরে পায় বাজারটি। দিনশেষে ৪ হাজার ৭৮১ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে স্থির হয় ডিএসই সূচক। দুই পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ খাতেই দরপতন ঘটে গতকাল। কিছুটা ভালো অবস্থানে ছিল বীমা খাত। অন্যান্য খাতে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় ছিল হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি। বেশ কয়টি খাতে দরপতনের শিকার ছিল শতভাগ কোম্পানি। এগুলোর মধ্যে ছিল সেবা, পাট, কাগজ, চামড়া ও টেলিকমিউনিকেশন। ঢাকা স্টকে লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৬৫টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ২৫৯টি, যা লেনদেন হওয়া কোম্পানির ৭৩ শতাংশের বেশি। অপরিবর্তিত ছিল ৩০টির দর। অপর দিকে, চট্টগ্রাম স্টকে লেনদেন হওয়া ২৪৭টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৫৯টির দাম বাড়ে, ১৫৯টির কমে এবং ২৯টির দর অপরিবর্তিত থাকে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। ২১ কোটি ৪১ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৪০ লাখ ৪৭ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়। ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকায় ৭ লাখ ২৮ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ন্যাশনাল টিউবস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল সামিট পাওয়ার, গ্রামীণফোন, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, ফরচুন স্যুজ, মুন্নু স্টাফলারস, স্কয়ার ফার্মা, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ও মুন্নু সিরামিকস।


আরো সংবাদ



premium cement