২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ছয় দিন পর পতন থামল পুঁজিবাজারে

হারানো ২২৬ পয়েন্ট থেকে ১১০ ফিরে পেল ডিএসই

-

অবশেষে পতন থেমেছে পুঁজিবাজারের। টানা ছয় দিন পতনের পর গতকাল ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। উভয় বাজারই হারানো সূচকের একটি অংশ ফিরে পেয়েছে। এরই সাথে বাজারে ফিরেছে স্বস্তি। তবে কারো কাছেই বাজার আচরণের এ পরিবর্তনের কারণ জানতে চেয়ে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশই আশ্বস্ত হতে পারেননি। কারণ এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের পর গত ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পুঁজিবাজারগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েও তা ধরে রাখতে পারেনি। এর পর টানা পতনের শিকার ছিল পুঁজিবাজাার।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১১০ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৪ হাজার ৭১১ দশমিক ৩১ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি মঙ্গলবার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৮২১ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ ফিরে পায় ৩৪ দশমিক ২২ ও ২৭ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। এ নিয়ে গত ছয় দিনের হারানো ২২৬ পয়েন্টে ১১০ পয়েন্ট ফিরে পেল ডিএসই। অনুরূপভাবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক ফিরে পায় ২৪২ পয়েন্ট। গত ছয় দিনে বাজারটি সূচক হারায় প্রায় ৪৫০ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি দুই পুঁজিবাজারেই লেনদেনের কমবেশি উন্নতি ঘটে। ঢাকার বাজার গতকাল ৩২৮ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা ২৯ কোািট টাকা বেশি। সোমবার ২৯৯ কোটি টাকা লেনদেন হয় বাজারটিতে। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে ১৩ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন।
সংশ্লিষ্টরা পুঁজিবাজারের এ ঘুরে দাঁড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএসসির সাবেক একজন পরিচালক নয়া দিগন্তকে পাল্টা প্রশ্ন করে বিগত দিনগুলোতে সূচকের টানা পতনের কারণ জানতে চান। তিনি বলেন, বাজারে ধারাবাহিক পতনের যেমন সুনির্দিষ্ট কারণ নেই, তেমনি হঠাৎ সূচকের এত উন্নতির কারণও কারো জানা নেই। তবে তিনি মনে করেন, অতি সম্প্রতি আরো একবার বাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত ছিল, কিন্তু তা ঘটেনি। এবারো তা টেকসই হবে, তা বলা যায় না। বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গাটি এখনো নড়বড়ে। যতক্ষণ না তারা আশ্বস্ত হতে পারছেন, ততক্ষণ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে না।
সূচকের বড় ধরনের উন্নতির ফলে গতকাল দুই পুঁজিবাজারই হারানো মূলধনের একটি বড় অংশ ফিরে পায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এক দিনেই ফিরে পায় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। ৩ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা মূলধন নিয়ে দিন শুরু করা ডিএসইর মূলধন দিনশেষে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকায়। অপর দিকে, চট্টগ্রাম স্টক ফিরে পায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। ২ লাখ ৮৬ হাজার টাকার মূলধন গতকাল দিনশেষে পৌঁছে যায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৭২ কোটি টাকায়। গ্রামীণফোনসহ বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির ফলে এটি সম্ভব হয়।
দুই পুঁজিবাজারের সব খাতেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গতকাল। বেশির ভাগ খাতেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে শতভাগ কোম্পানির। ডিএসইর বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায় ৩২টি কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৯ শতাংশের বেশি। এছাড়া বাজারটির লেনদেন হওয়া ১৩৪টি কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৫ শতাংশের বেশি, যা দিনের সূচককে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখে। সব খাতেই বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। তবে কয়েকদিন ধরে যেসব কোম্পানি মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় ছিল, এ ধরনের কয়েকটি কোম্পানি দর হারায়।
ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩১১টির দাম বাড়ে, যা মোট লেনদেন হওয়ার কোম্পানির প্রায় ৯০ শতাংশ। বিপরীতে দর হারায় ২৪টি, অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির দর। অপর দিকে, চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৩৮টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ২০১টির দাম বাড়ে, ২৪টির কমে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মা। ১৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৫ লাখ ৬৩ হাজার শেয়ার এ দিন হাতবদল হয়। ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় ৬ লাখ ৫৯ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ন্যাশনাল টিউব ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে বিকন ফার্মা, সামিট পাওয়ার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড পাওয়ার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ওয়াটা কেমিক্যালস ও জেএমআই সিরিঞ্জ।

 


আরো সংবাদ



premium cement