২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিএসইসিতে আইপিওর সংশোধিত প্রস্তাব দুই দিনে সূচকের প্রায় ১০০ পয়েন্ট হারাল ডিএসই

-

বাজেট পরবর্তী দু’টি কর্মদিবসে প্রধান সূচকের প্রায় ১০০ পয়েন্ট হারিয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এতে নতুন করে পুঁজিবাজার ফের ধারাবাহিক দরপতনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের দেয়া প্রণোদনা নিয়ে যেখানে দুই স্টক এক্সচেঞ্জই বেশ উচ্ছ্বাসিত, সেখানে বিপরীতমুখী বাজার আচরণ বেশি হতাশ করেছে দুই পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষকে।

রোববারের মতো গতকালও লেনদেন শুরু হতেই সৃষ্টি হয় বিক্রয়চাপ, যা অব্যাহত ছিল পুরো সময় ধরে। একে একে দর হারাতে থাকে দুই পুঁজিবাজারে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও ফান্ডগুলো। দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৫ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৫ হাজার ৪৩০ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ৩৭৫ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৭১ ও ১১ দশমিক ৪১ পয়েন্ট। এর আগে রোববার প্রধান সূচকটির ৪৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট হারায় ডিএসই। আর দুই দিনে ৯৯ পয়েন্টের বেশি হারাল সূচকটি।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০১৯-’২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপিত হয়। যেখানে পুঁজিবাজারের জন্য বেশ কিছু প্রণোদনার উল্লেখ ছিল। এ নিয়ে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ গত রোববার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। সংবাদ সম্মেলনে উভয় পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষকেই বেশ উচ্ছ্বাসিত দেখা যায়। উভয় পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষের পুঁজিবাজারের জন্য বাজেটে দেয়া প্রণোদনা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কিন্তু গত দু’দিনের বাজার আচরণ দেখে ব্যাপকভাবে হতাশ দুই পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে বিনিয়োগকারীরা আবার থাকেন ধারাবাহিক পতনের আশঙ্কায়।

এ দিকে ক্যাপিটাল ইস্যু রুলস তথা আইপিও আইনের সংশোধনী ও প্লেসমেন্ট শেয়ারে লক-ইনের মেয়াদসংক্রান্ত স্টেকহোল্ডারদের প্রস্তাব এখন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) তৈরি করা যৌথ প্রস্তাবনা বিএসইসিতে জমা দেয়া হয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। গতকাল দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও দুই সংগঠনের প্রতিনিধিদল বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের কাছে তাদের প্রস্তাব তুলে দেন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আইপিও প্লেসমেন্ট সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ছাড়াও প্রণোদনা বাজেটে প্রণোদনা হিসেবে বোনাস শেয়ারের ওপর ও রিটেইন্ড আর্নিং ও রিজার্ভের ওপর করারোপের অসঙ্গতি নিয়েও বিএসইসি চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করবে প্রতিনিধিদল।

গত মে মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ এর সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। স্টেকহোল্ডারদের মতামতের জন্য চলতি চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ আইনের সংশোধনীর খসড়া প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ জুন আলোচিত চার সংগঠন বৈঠকের মাধ্যমে তাদের পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব চূড়ান্ত করে। এর আলোকে গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করে তার কাছে প্রস্তাবগুলো ও মতামত জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গতকাল দুই পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ খাতেই দরপতন ঘটে। তবে পতনের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ব্যাংক, এক ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও প্রধান প্রধান খাতগুলো। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল শুধু বীমা খাত। গত দুই দিনের দরপতনের সময় এ খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। আগের দিনের মতো গতকালও দুই বাজারের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় এ খাতের প্রাধান্য ছিল। অপর দিকে বাজারগুলোপতে পতনের শিকার ছিল ৭২ শতাংশের বেশি কোম্পানি। ঢাকা স্টকে লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৭৭টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ২৫৫টি। অপরিবর্তিত ছিল ৪১টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম স্টকে লেনদেন হওয়া ২৭০টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৬৯টির দাম বাড়ে, ১৮০টির কমে ও ২১টি সিকিউরিটিজের দাম অপরিবর্তিত থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement