২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঈদকার্ড

ঈদ আয়োজন
-


ঈদ মানেই নিমন্ত্রণ, নিমন্ত্রণ মানেই ঈদকার্ড। একসময় ঈদের আগে আমরা নিজেরাই বিভিন্ন নকশাকৃত ঈদকার্ড বানাতাম, তাই বিলি করতাম সমবয়সীদের। একটু বড় হয়ে তা চেঞ্জ হয়ে যায়। সারা বছর একটু একটু করে টাকা জমাতাম ঈদের সময় কার্ড কেনার জন্য। স্কুলের পাশে হেলাল চাচার একটা দোকান ছিল, তিনি শহর থেকে ঈদের আগেই কার্ড নিয়ে আসতেন। আমরা হেলাল চাচার দোকান থেকেই কার্ড কিনতাম। খবর রাখতাম কবে চাচা শহরে যান কার্ড আনতে। সবার আগে আমার কেনা চাই। কার্ডের ভেতরে দুই চার লাইনের ছন্দ কবিতা লেখা থাকত; যা পড়তে বেশ লাগত।
হেলাল চাচা চুপে চুপে বলে দিতেন কবে কার্ড আনবেন। ঠিক সময়ে গিয়ে হাজির। অবশ্য প্রথম বাছাইয়ে যে কয়েকজন কিনত তাদের থেকে একটু বেশি দাম রাখতেন চাচা। তাতে কিছু যায়-আসে না। আমার কেনা কার্ডগুলো হতে হবে সেরা। ঈদের প্রায় ৭-৮ দিন আগেই পেতাম হাতে। বাড়ি এনে কাকে কোনটা দেবো তার নাম সুন্দর করে লিখতাম রঙিন কলম দিয়ে। বিশেষ কেউ আমার কখনই ছিল না। কেউ হওয়ার সাহসও পায়নি সেনাবাহিনীতে চাকরি করা বাহারি গোঁফের বাবার ভয়ে।
কখনো কখনো কার্ডের ভেতরে কিছু লেখা থাকত না, তখন বই খুলে বই থেকে কবিতার লাইন লিখতাম। নইলে নিজেই ছন্দ মিলিয়ে দুই লাইন লিখতাম। কার জন্য কোনটা সেভাবেই লিখতাম। আবার কখনো সব লিখে টেবিলে এলোমেলো করে রেখে একেকজনের নাম করে একেকটা তুলতাম। সাথে সাথেই নাম লিখতাম। পরে খুলে খুলে দেখতাম কার ভাগ্যে কোনটা পড়েছে। চাঁদ রাতের আগেই সবাই সবাইকে বিলি করে দিতাম। চাঁদ রাতে ঘুমানোর সময় গুনতে বসতাম কে কয়টা পেয়েছে। হিসাব করে দেখতাম যতটা কিনেছি বিলি করেছি তার চেয়ে কম পেলাম নাকি বেশি পেলাম। এমনও হতো যাদের কাছ থেকে পাওয়ার বা দেবার আশায় ছিলাম না, তারা কেউ দিয়ে দিলো। তখনই নিজের কাছে জমা হওয়া দেখতে মন্দ এমনটাতে দুই কলম লিখে তাকে দিতাম। এতে মন্দ কার্ড কমই থাকত আমার কাছে।
কাকে কাকে দিলাম কার থেকে পেলাম তার একটা লিস্ট করতাম রাতেই। সকাল হলেই সবাই খোঁজ করত কার কয়টা কার্ড জমা হয়েছে। কে কয়জনের থেকে কার্ড পেয়েছে। আবার সব কার্ডের মাঝে সেরা কার্ড কারটা সেটাও পরীক্ষা নিরীক্ষা হতো। সবাইকে একই মূল্যের কার্ড কিন্তু দেয়া হতো না, যে যত কাছের বন্ধু তাকে সেভাবেই দেয়া হতো। আমরা কমন স্কুলে পড়তাম সে হিসেবে দিতাম আর পেতাম। খুব মনে পড়ে বান্ধবীর মামার থেকে পাওয়া কার্ডের কথা। সাহস ছিল বটে উজ্জ্বল মামার। কার্ডের ভেতরে লিখে দিয়েছেÑ ‘তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি সে কি মোর অপরাধ, বাকিটা বুঝে নিও- ইতি উজ্জ্বল মামা। থুক্কু মামা হবে না, শুধুই উজ্জ্বল।
তখন মাত্র অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি। উজ্জ্বল মামা আশা করেছিল আমিও কার্ড দেবো, কিন্তু দিইনি। পরে জানতে পেরেছি তিনি মনে খুব কষ্ট পেয়েছেন। ঈদের কয়েক দিন পর ছোট একটা কাগজে লিখে পাঠানÑ ‘তুমি না হয় ছোট একটা কার্ড দিতে, কিনতে না পারলে হাতে বানিয়ে দিতে। দুই চার লাইন না পারলে, এক লাইন লিখেই ঈদের দিন আসতে বলতে। আসতে না বলতে, ভালোবাসতে তাই না হয় জানাতে।’ জবাবে দিয়েছিলামÑ ‘ভালো তো বাসি না, মিথ্যে লিখি কি করে।’ খুব হাসি পায় সেসব দিনের কথা মনে হলে।


আরো সংবাদ



premium cement
জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলো ভানুয়াতু বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু

সকল