১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


লক্ষ্যে পৌঁছাতে ভিশন থাকতে হবে : ভেনজি কোয়েটজি

ভিন দেশ
-

আফ্রিকার প্রথম অনলাইন মার্কেটপ্লেস উদ্ভাবনী ‘স্টার্টআপ ‘এম্পটি ট্রিপস’। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আফ্রিকার পণ্য পরিবহন খাতে ব্যাপক সাশ্রয় ঘটাবে এই একটি পদক্ষেপ। এতে সময় ও শ্রমের সাশ্রয় ঘটাবে। এমন একটি যুগোপযোগী কাজে হাত দিয়েছেন এম্পটি ট্রিপসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও ও এর প্রতিষ্ঠাতা বেনজি কোয়েটজি। তিনি বলেন, ‘আমার এ সংক্রান্ত কাজে বহু বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। রয়েছে তিক্ত অভিজ্ঞতাও। পণ্য পরিবহনের সাথে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যানবাহনে করে পণ্য কোনো গন্তব্যে পৌঁছাতে গেলে সেই যানবাহন তা নামিয়ে বেশির ভাগ সময় ফেরে পণ্যশূন্য অবস্থায়। এতে ব্যয় বেড়ে যায়। যা বড় ধরনের সিস্টেম লস। তা থেকে উঠে আসতে ব্যাপক সহায়তা করবে আমার এই সাম্প্রতিক উদ্ভাবনী স্টার্টআপ এম্পটি ট্রিপস বা পণ্যশূন্য যাত্রা।
বেনজি কোয়েটজির এই পদক্ষেপ পণ্য পরিবহন করে তা যাতে খালি ফিরে আসতে না হয় তারই সমাধান দিচ্ছে। অর্থাৎ ফেরত আসার সময়ও তা পণ্য বোঝাই হয়ে আসবে। অনেক সময় পরিবহনের ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক কম ওজনের পণ্য নিয়েও যাত্রা শুরু করতে হয়। তাতেও ব্যয় বা সিস্টেম লস বেড়ে যায়। তা গিয়ে বর্তায় পরিবহন মালিকের পাশাপাশি যানবাহন ভাড়াটের উপরও। এ সমস্যারও সমাধান দেবে এই এম্পটি ট্রিপস। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আফ্রিকায় পণ্য পরিবহনে স্পেস অপচয় বা সিস্টেম লস হয় সর্বোচ্চ প্রায় ৪০ শতাংশ। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, ১০ টন ধারণক্ষমতার ট্রাকে করে অনেকে পণ্য গন্তব্যে নেয় পাঁচ-ছয় টন। ফলে চার-পাঁচ টন পণ্য বা মালের জায়গা খালি পড়ে থাকে। অর্থাৎ যানবাহনের যে ধারণাক্ষমতা সেই পরিমাণ পণ্য পরিবহন করাই এম্পটি ট্রিপসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।’
এমন একটি সময়োপযোগী প্রতিষ্ঠান গড়ার বিষয়ে কোয়েটজি বলেন, আমার প্রচুর অভিজ্ঞতা আছে কনসালটিং প্রতিষ্ঠান ‘সিডপিচ’-এ কাজ করার। গ্রাহকরা প্রায়ই আমাকে পণ্য পরিবহনে প্রায় দ্বিগুণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে বলে জানান। যা আমি আগেও চিন্তা করেছি এবং ভেবেছি কিভাবে এ সংক্রান্ত সমস্যা সহসা দূর করা যায়। এর সুফল পাবে এর সাথে নানাভাবে জড়িতরাও। ভাবতাম পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বা সমন্বয় আনা গেলে তা উভয়ের জন্য ভালো। আর সে জন্যই জরুরি হয়ে পড়েছে একটি স্মার্ট মার্কেটপ্লেসের। এ জন্য দরকার এ সংক্রান্ত উন্নত প্রযুক্তি। তবে এ ক্ষেত্রে বড় বাধা উপযুক্ত শিক্ষার স্বল্পতা বা অভাব। এ ধরনের লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠানের উন্নতির ক্ষেত্রে অর্থ যেমন প্রয়োজন, তেমনি যথাযথ শিক্ষারও বড় প্রয়োজন। তাই মানুষকে এ সংক্রান্ত প্রযুক্তির নানাদিক বুঝাতে শুরু করি।
তিনি বলেন, নতুন করে কোনো কিছু করতে বা গড়তে গেলে নানা সমস্যা দেখা দেয়া অস্বাভাবিক নয়। তা অতিক্রম করার যেমন ধৈর্য থাকতে হবে, তেমনি সমাধানের পথও বের করতে হয়। অর্থাৎ হতাশ হলে চলবে না মোটেই। তা ছাড়া লজিস্টিকস শিল্প শুধু পুরনোই নয়, ঐতিহ্যবাহীও। এ ক্ষেত্রে আমরা ভালো করতে পারলে তা ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাবে বা ছড়িয়ে পড়বে বৈশ্বিক বাজারেও। বর্তমানে আমাদের ব্যবসাটা দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে আরো বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি ডিজিটালাইজড সিস্টেমও।
পণ্য শুধুই সড়কপথে নয়, রেলওয়ে, নদীপথ ও বিমানেও আনা-নেয়া হয়ে থাকে। এসবেও এ সংক্রান্ত সিস্টেম লস বা অতি ব্যয় রয়েছে। তাই সব পথেই এ সংক্রান্ত গুরুত্ব বাড়াতে হবে। বিশ্বের অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন আফ্রিকার প্রথম অনলাইন এক্সচেঞ্জ পরিবহন মার্কেটপ্লেসকে।’
কোয়েটজি তার দল বা লোকবল সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমাদের শক্তিশালী নারীশক্তি বা শ্রমও আছে এখানে। সালোম কেগোল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। যার মার্কেটিং ও ডিজাইনে রয়েছে ৯ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা। জাস্টিন লেটার্ড দেখভাল করেন কাস্টমার বা ক্লায়েন্টদের সাথে ঘনিষ্ঠতার গুরত্বপূর্ণ বিষয়। তাদের সাথে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব বজায় রাখার বিষয়ও দেখেন তিনি। আর হারমেন স্ট্রস দেখেন কারিগরি দিক। এদিকে বেনজি কোয়েটজির রয়েছে দ্য বোস্টন কনসালটিং গ্রুপ অ্যান্ড ব্রিয়ানসটন রিসোর্সেসে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা। পাশাপশি আছে ব্যাংকিং (এইচএসবিসি), ফিন্যান্সেরও (হলার্ড) অভিজ্ঞতা। আছে দুটো মাস্টার্স ডিগ্রিও। একটি হলো স্টেলেনবোসচ ইউনিভার্সিটি থেকে কমার্স অ্যান্ড ফিন্যান্সে এমফিল ডিগ্রি। অপরটি জার্মানির গোয়েথে ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলএম ডিগ্রি। তিনি বলেন, এসব ডিগ্রি আমার পেশাগত জীবনে অনেক বেশি সহায়ক হয়েছে। মাঝে মধ্যে আমি নিই ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা। এ ধরনের পরিকল্পনার নানা সফলতা-ব্যর্থতা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় আমরা এ ক্ষেত্রে কোন পর্যায়ে পৌঁছেছি। আসল কথা হলো, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে ভিশন থাকতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement