আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার জন্য টিকটককে ব্যবহার করতে পারে চীন। এমন সতর্কবার্ত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক এভরিল হেইনেস। তিনি হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভ ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানিতে এই মন্তব্য করেন।
ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধি রাজা কৃষ্ণমুর্তির চীন টিকটককে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের কাজে ব্যবহার করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হেইনেস বলেন, 'চীন যে তা ব্যবহার করতে পারে, সেই সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করতে পারি না।'
মার্কিন রাজনৈতিক বিভাজন বাড়ানোর কাজে চীন এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারে বা জনসাধারণের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করার জন্য এটিকে কাজে লাগাতে পারে তা নিয়ে আইনপ্রণেতারা দীর্ঘ দিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষ পরিষদ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’ এমন একটি যুগান্তকারী বিল পাশ করেছে, যার ফলে দেশটিতে টিকটক নিষিদ্ধ হতে পারে।
এই বিল পাশের পর এখন জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মূল মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে অ্যাপটির মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ছয় মাস সময় বেঁধে দেয়া হতে পারে।
এই সময়ের মধ্যে মালিকানা হস্তান্তর করা না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ব্যবহার চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষ পরিষদে বিলটি বিপুল ভোটে পাশ হয়েছে। এটি আইনে পরিণত করার জন্য এখন সিনেটের অনুমোদন পেতে হবে।
সিনেট অনুমোদন দেয়ার পর বিলটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সই করবেন এবং তারপরেই এটি আইনে পরিণত হবে।
টিকটকের উপর চীনের প্রভাব নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা অনেক দিন ধরেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন।
কারণ প্রতিষ্ঠানটি চীন সরকারের কাছে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সরবরাহ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটির মূল মালিকানায় রয়েছে চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স।
বেইজিংভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি গোটা ইউরোপজুড়ে তারা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
মার্কিন সিনেট অনুমোদন দিলে দ্রুতই বিলটিতে সই করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এর ফলে চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আবারো কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
টিকটকের মালিকানা ছাড়তে হলে বাইটড্যান্সকে চীনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু এ ধরনের কোনো অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বেইজিং।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন যে, এ ধরনের পদক্ষেপ 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই উল্টা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।'
বিলটি উত্থাপনকারীদের একজন হলেন রিপাবলিকান সদস্য মাইক গ্যালাগার।
তিনি বলেছেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রণ করে কিংবা তাদের মালিকানাধীন এমন কোনো প্রভাবশালী সংবাদ প্ল্যাটফর্মের বিষয়ে ঝুঁকি নেবে না যুক্তরাষ্ট্র।
চীনা কোম্পানিগুলো মূলত দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীন কাজ করে। এর ফলে সেদেশের সরকার চাইলে তাদেরকে তথ্য সরবরাহ করতে কোম্পানিগুলো বাধ্য থাকে।
যদিও টিকটকের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য যেন সুরক্ষিত থাকে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সূত্র : গার্ডিয়ান ও বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা