৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিয়ে ভাঙানো বদে আলম

-

কে বা কারা বদে আলম নামকরণ করেছিল তা জানা নেই বদিউল আলমের। জানা না থাকলে কী হবে, তার রাগটা কিন্তু এলাকার সবার ওপর। কেন তার মতো একটা ভালো মানুষের নাম হবে বদে আলম? বিষয়টা যেমন লজ্জার তেমনি মান হানিকর। রাগ হয় বদে আলমের। পাখি টি স্টলের নিয়মিত কাস্টমার এরফান বলে ওঠে, তা তুমি আকামগুলান না করলেই পারো।
এবার সত্যি সত্যি জ্বলে ওঠে বদে আলম। বলে ওঠে, মিয়া কে কইছে আমি মাইয়া পোলার বিয়া ভাঙাই?
এরফান মিয়া ছেড়ে দেয়ার পাত্র নয়। সেও একহাত দেখিয়ে বলে, সব্বাই তো কয় তুমি নাকি একাই পঁচিশ-তিরিশটা বিয়া ভাইঙ্গা দিছো।
- বিশ্বাস কর, আমি একটা বিয়াও ভাঙাইনি।
চা খেয়ে মাথা ঠাণ্ডা করতে হয় দু’জনের। এভাবেই একসময় তর্কাতর্কির সমাপ্তি ঘটে।
আগামী সপ্তাহে একটা মেয়ের বিয়ে। মেয়ের পরিবার থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে বদে আলম যেন কিছুতেই আসতে না পারে। ও যেন বিয়ে বাড়ির ত্রিসীমানা মাড়াতে না পারে। বিয়ের দিন বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের সমাগম। সবাই যার যার দায়িত্ব পালনে ব্যতিব্যস্ত। বরযাত্রীরা এসে গেছে। সাজানো গোছানো মঞ্চে বরকে ঘিরে বসে আছে জামাইয়ের নিকটাত্মীয়রা। বদে আলম সবার দৃষ্টি ফাঁকি দিয়ে বরের কাছে গিয়ে বলল, আপনারা আমাকে চিনবেন না। শালারা কয় আমি নাকি বিয়া ভাঙাই।
বদে আলম কথা শুরু করতেই সবার মনোযোগ তার দিকে গেল। বর কথা শুনছে। বরের দুলাভাইয়েরা কথা শুনছে। উপস্থিত বরপক্ষের লোকেরা কথা শুনছে। সবার দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়ে বদে আলম কথার খই ফোটায়। বললো, যার লগে আপনার বিয়া হতি চলিছে সেই মিয়াডা যে খুবই খারাপ সেই কতাখান আমি কি কুনোদিন আপনাগো কইতে গেছি?
- না
আরো কথা আছে, মিয়ার বাপ যে চড়া সুদের কারবার করে সেইডাও কি আমি কইতে গেছি?
- না
আরো কতা আছে, মিয়ার বাপ যে দুনিয়ার হারকিপটা সেইডা কি আমি কইতে গেছি?
- না
আরো কতা আছে...
বদে আলমকে দেখতে পেয়ে পড়িমরি করে ছুটে আসে কন্যাপক্ষের লোকজন। তার আরো কথা শেষ হয় না। তার আগেই বদে আলমের মুখে কাপড় গুঁজে টেনে হিঁচড়ে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এদিকে ঘটনার আকস্মিকতায় বরপক্ষ একজন আরেকজনের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে এবং বিয়ে না করেই ধীরে ধীরে অনুষ্ঠানস্থল থেকে কেটে পড়তে থাকে।

 


আরো সংবাদ



premium cement