২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রায়হান হত্যা মামলা

আদালতে জবানবন্দি দিলেন বন্দর ফাঁড়ির ৩ পুলিশ সদস্য

আদালতে জবানবন্দি দিলেন বন্দর ফাঁড়ির ৩ পুলিশ সদস্য - ছবি : সংগৃহীত

সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশে নির্যাতনে রায়হান আহমদ (৩৩) নিহতের ঘটনায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ৩ পুলিশ সদস্য। সিলেটের অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর আদালতে বিচারক মো. জিহাদুর রহমানের আদালতে পুলিশ কনস্টেবল দেলোয়ার, সাইদুর ও শামীম ১৬৪ ধারায় এ সাক্ষ্য প্রদান করেন। এই তিনজনই সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত রয়েছেন। রায়হানকে নির্যাতনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে এই তিন কনস্টেবল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম ৩ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের তথ্য নিশ্চিত করলেও তারা আদালতে কি বলেছেন এবং কারো নাম বলেছেন কী না এ ব্যাপারে কিছু জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, সোমবার দুপুর ৩টা থেকে অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর আদালতে বিচারক মো. জিহাদুর রহমানের আদালতে বন্দর ফাঁড়ির তিন পুলিশ কনস্টেবলকে হাজির করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বিকেল ৩টার দিকে তারা রায়হান হত্যা মামলার সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি প্রদান শুরু করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা তারা জবানবন্দি দেন।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর ভোরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন রায়হান আহমদ (৩৩) নামের এক যুবক। পরে রোববার সকালে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন।

এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটুচন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর পলাতক রয়েছেন।

কোতয়ালি থানায় দায়ের করা মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে।

এদিকে, সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের (৩০) দেহে ১১১ আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ফরেনসিক রিপোর্টে। এসব আঘাতের ৯৭টি লীলাফোলা আঘাত ও ১৪টি ছিলা জখমের চিহ্ন। এসব আঘাতগুলো লাঠি দ্বারাই করা হয়েছে। আর অতিরিক্ত আঘাতের কারণে দেহের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে রক্তক্ষণে রায়হানের মৃত্যু হয়।


আরো সংবাদ



premium cement