১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


আড়াই মাস ধরে বেতন বন্ধ, চা শ্রমিকদের মনবেতর জীবন যাপন

আড়াই মাস ধরে বেতন বন্ধ, চা শ্রমিকদের মনবেতর জীবন যাপন - সংগৃহীত

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া কর্মধা ইউনিয়নের কালিটি চা-বাগানের শ্রমিকরা আড়াই মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। মরণঘাতি করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও তারা মজুরী পাচ্ছেন না। করোনারভাইরাসের কারণে ক্ষুদার জ্বালায় শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন।

শ্রমিকদের অভিযোগ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বিষয়টি সমাধান হবে। কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ শুধু গড়িমসি করছেন। শ্রমিকরা মালিক ও ব্যবস্থাপকের দেখা পায় না। অভাব অভিযোগ কার কাছে জানাবে।

মৌলভীবাজার কালিটি চা-বাগানে আড়াই মাস ধরে চা-শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছেনা। এতে এ বাগানের নিয়মিত প্রায় ছয়শত পঁত্রিশ জন শ্রমিক মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। মজুরি আদায়ের দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোব্ধ হয়ে উঠছেন। তবে বাগান ব্যবস্থাপক বলছেন, চা-বাগানের মালিকানা পরিবর্তনের ফলে এ অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শীঘ্রই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা মিটিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।

জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে কালিটি চা-বাগানের অবস্থান। পুরানো এ চা-বাগানটি এক সময় চা-উৎপাদন স্বচ্ছলতায় বেশ সুনাম ছিলো। অভিযোগ আছে, সাম্প্রতিক সময়ে মালিকপক্ষের চরম উদাসিনতার ফলে বাগানটি আগেকার সুনাম ধরে রাখতে পারেনি। এ বাগানে ৬৩৫ জন নিয়মিত চা-শ্রমিক দৈনিক ১০২ টাকা মজুরিতে কাজ করছে। প্রতি সপ্তাহে এ মজুরি শ্রমিকদের হাতে তুলে দেয়ার কথা। কিন্তু আজ আড়াইমাস ধরে এ বাগানের শ্রমিক কোন মজুরি পাচ্ছেননা। একই সাথে বাগানের চৌদ্দ জন অফিস কর্মকর্তার দীর্ঘ নয়মাস ধরে বেতন নেই। এতে এ বাগানের পরিবারগুলো অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।

বাগানের শ্রমিক নেতা কৃঞ্চ নাইডু বলেন, আমাদের অনেকেরই ঘর-বাড়ি নেই। সেই সাথে বাগানে ডাক্তার নেই, নেই কোন সুষ্ঠু চিকিৎিসা ব্যবস্থা। আমরা ঠিকমত খাবার পাচ্ছি না। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে।

বাগান মালিক পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে পাওনা মজুরিসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিলেও তা দিচ্ছেন না। এতে বাগান শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে ভূখা মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছে। এদিকে মরণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এ বাগানের শ্রমিকদের নেয়া হয়নি কোন সচেতনতা মূলক ব্যবস্থা। শ্রমিকরা চরম ঝুঁকি নিয়ে সকাল সন্ধ্যা কাজ করছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বাগান মালিকের উদাসিনতাকে দায়ি করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে প্রশাসনের সাথে। তারপরও মজুরির বিষয়টি সমাধান হয়নি।

এদিকে চা-বাগান ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দাস ফোনে জানিয়েছেন, বাগানটি ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে যাওয়া এবং দেশ জুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমনের ফলে এ অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মালিকানা পরিবর্তন হলে শ্রমিক ও বাগানের স্টাফের বেতন-ভাতা পরিশোধ হবে।


আরো সংবাদ



premium cement