২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাঘ বাঁচাতে যেসব বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত

করবেটের কোর এরিয়ার বুক চিরে গেছে এই পিচঢালা রাস্তা - ছবি : বিবিসি

১৯৭৩ সালের পহেলা এপ্রিল। দিল্লি থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কের ধিকালা রেঞ্জে ‘প্রোজেক্ট টাইগারে’র সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।

যে ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ একদিন ভারতের বনভূমি দাপিয়ে বেড়াত, এ রাজসিক প্রাণীটিকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতেই নেয়া হয়েছিল ওই মরিয়া পদক্ষেপ।

ইন্দিরা গান্ধী তার নোটে সে দিন লিখেছিলেন, ‘প্রোজেক্ট টাইগার কথাটার মধ্যেই রয়েছে বিপুল পরিহাস। হাজার হাজার বছর ধরে যে দেশটি ছিল এই অসাধারণ প্রাণীটির শ্রেষ্ঠ বিচরণভূমি। আজ তারাই বিলুপ্তির হাত থেকে ওই বাঘকে রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছে!’

মূলত বিংশ শতাব্দীর সূচনায় গোটা ভারতে কম করে হলেও ৪০ হাজারের মতো বাঘ (রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার) ছিল বলে ধারণা করা হয়।

রাজারাজড়াদের নির্বিচার শিকার, চোরাকারবার ইত্যাদি নানা কারণে সত্তরের দশকের গোড়ায় সেটা মাত্র কয়েকশোতে নেমে আসে। ওই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে মরিশাস থেকে যেভাবে একদিন ডোডো পাখি হারিয়ে গেছে, ঠিক তেমনি ভারত থেকেও বাঘের চিরতরে হারিয়ে যাওয়াও নেহাত সময়ের অপেক্ষা। এটা ইন্দিরা গান্ধী অনুধাবন করেছিলেন।

এ কারণেই গোটা দেশে মোট নয়টি টাইগার রিজার্ভকে চিহ্নিত করে। অনেকগুলো কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে সূত্রপাত হয়েছিল বাঘ সংরক্ষণ অভিযানের।

একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঠিক পর পর ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক তখন তলানিতে। কিন্তু ওই অভিযানে ইউরোপ ভারতের দিকে সর্বতোভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।

নেদারল্যান্ডসের প্রিন্স বার্নার্ড তখন ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের নেতৃত্বে। তার সংগঠন এবং জাতিসংঘের প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন। এই উভয়েই ছিল প্রোজেক্ট টাইগারে সক্রিয় অংশীদার।

তখন গোটা ভারতে এক হাজার ৮০০টির মতো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ছিল। আজ প্রোজেক্ট টাইগারের ৫০ বছর পূর্তিতে সেটাই তিন হাজার ১৬৭-তে গিয়ে ঠেকেছে। এই প্রকল্প ৫০ বছরে দেশে বাঘের সংখ্যা অনেক বাড়াতে পেরেছে ঠিকই। কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞর মতে এর জন্য দামও দিতে হয়েছে প্রচুর।

বহু জায়গায় বাঘের আবাসভূমি নিশ্চিত করতে গিয়ে স্থানীয় বনবাসীদের উচ্ছেদ হতে হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের সাফল্য দেখাতে গিয়ে বাঘের সংখ্যা বাড়িয়ে বলা হচ্ছে কি না, এ সন্দেহও আছে অনেকের। বাঘ আর মানুষের সংঘাতও কিন্তু এড়ানো যায়নি । লোকালয়ে এসে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হানা দিচ্ছে এমন ঘটনাও অহরহ ঘটছে।

করবেটের কাহিনী
রামগঙ্গা আর কোশি নদীর মাঝে সুবিস্তীর্ণ পাহাড় আর অরণ্যভূমিতেই জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক। অনেকের মতেই যেটা ভারতের শ্রেষ্ঠ টাইগার রিজার্ভ। ৫০ বছর ধরে ‘প্রোজেক্ট টাইগারে’র সুরক্ষা পেয়ে সেখানে বাঘের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বাঘ আর অরণ্যবাসী মানুষের সংঘাত।

করবেটের ধনগড়ি গেট থেকে যে পিচঢালা পাহাড়ি রাস্তাটা শৈলশহর রানিখেতের দিকে চলে গেছে, সেই পথেই কয়েক কিলোমিটার এগোলে মোহান নামে বেশ বড়সড় একটা গ্রাম। মোহানের গ্রামবাসী আনন্দ সিং বিস্ত আজন্ম এই করবেটের জঙ্গলঘেঁষা জনপদেই মানুষ।

তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, ‘আগে তো গাই বাছুর চরাতে আর ঘাস কাটতে কত জঙ্গলে যেতাম। কিন্তু এখন বাঘের ভয়ে কেউ আর যায় না।’

প্রবীণ এই মানুষটির অভিজ্ঞতা বলে, ‘বাঘ কিন্তু আগেও ছিল, কিন্তু এরকম আতঙ্ক ছিল না। আর এখন তো এই তুলে নিচ্ছে, এখানে-ওখানে ঝাঁপিয়ে পড়ছে!’

গত কয়েক বছরে নির্জন রাস্তায় মোটরবাইক আরোহীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ দেহটা জঙ্গলে টেনে নিয়ে গেছে, আশপাশে এমন ঘটনা প্রচুর ঘটেছে।

আনন্দ সিংয়ের প্রতিবেশী উষাদেবী নিয়ালেরও তাই বলতে দ্বিধা নেই, ‘চারদিকে এত ‘কাণ্ড’ ঘটছে ... পরিস্থিতি মূলত খুবই বিপজ্জনক। কারণ বাঘ এখন মানুষ মারছে, তারা মানুষখেকো হয়ে গেছে!’

গ্রামে হানা দিয়ে গরু-বাছুর তুলে নেয়া এখন তো বাঘের কাছে জলভাত। ফলে এই গরিব মানুষগুলোর দিনের অনেকটা সময় যায় পোষা জীবদের চোখে চোখে রাখতে, গোয়ালঘর আগলাতে।

আনন্দ সিংয়ের ৯০ বছর বয়সী মা বাসন্তী দেবী সেই ছোটবেলা থেকে কোনোদিন বাঘকে ভয় পাননি, কিন্তু এখন পান!

বিবিসিকে বিষণ্ণ গলায় বলছিলেন ওই বৃদ্ধা বলেন, ‘জঙ্গলে একলাই কত ঘুরেছি, কাঠ কুড়িয়েছি, কখনো বাঘের সাথে মোলাকাত হয়নি। জানেন তো, ভয়ও পেতাম না একদম ... কিন্তু আজকাল আর বেরোতে সাহস পাই না!’

মোহান থেকে উত্তরের পানে আরো প্রায় আধঘণ্টার ড্রাইভ মরচুলা। গোটা এলাকাটা জুড়ে পাহাড় আর জঙ্গলের খাঁজে, নদীর তীরে তৈরি হয়েছে অসংখ্য হোটেল আর রিসর্ট।

জঙ্গলের গ্রামগুলোতে যারা বাপ-ঠাকুর্দার আমল থেকে চাষবাস করে জীবনধারণ করতেন। তারাই এখন চাষবাস ছেড়ে বাধ্য হচ্ছেন এসব হোটেল রিসর্টে চাকরি নিতে। মালি, বেয়ারা বা ওয়েটারের কাজ – শুধু ট্যুরিস্ট সিজনেই পয়সা মেলে।

মরচুলা ছাড়িয়ে পরের পাহাড়ি বাঁকের মোড়েই দেখা হল ত্রিলোক সিং আসওয়ালের সাথে, যিনি কাজ করেন এমনই একটা রিসর্টে।
তিনি বলছিলেন, ‘অল্পস্বল্প যা মাইনে পাচ্ছি তাতেই সংসার চলছে। কিন্তু জানেন চাষাবাদ আগের মতো আর নেই, বন্ধই হয়ে গেছে বলা চলে।’

বাঘে-মানুষে এক ঘাটে?
মূলত ভারতে আবহমানকাল থেকে বন্যপ্রাণী আর বনবাসী মানুষের সম্পর্কটা যে অন্য তারে বাঁধা, প্রোজেক্ট টাইগারের নীতিনির্ধারকরা বোধহয় তা ঠিক উপলব্ধি করতে পারেননি।

বহু বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন জঙ্গল আর টাইগার রিজার্ভে ঘুরে ঘুরে অজস্র ফিল্ম বানিয়েছেন দিল্লির তথ্যচিত্র নির্মাতা কৃষ্ণেন্দু বোস।
তিনি জঙ্গলের কিনারে বাঘ আর মানুষের সংঘাত নিয়ে তৈরি তাঁর ডকুমেন্টারি ‘দ্য টাইগার হু ক্রসড দ্য লাইন’ বছরকয়েক আগে ভারতের জাতীয় পুরস্কারও জিতে নিয়েছিল।

সেই কৃষ্ণেন্দু বোস বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ’প্রোজেক্ট টাইগার রূপায়ন করার সময় মূলত অনুসরণ করা হয়েছিল আমেরিকার ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কে অনুসৃত মডেল। যেটা ভারতের ক্ষেত্রে কতটা উপযুক্ত ছিল তা তর্কসাপেক্ষ।

বোসের কথায়, ‘ভারতে চিরকাল জন্তুজানোয়ার আর মানুষ একসাথে থেকেছে। আফ্রিকা বা ইউরোপ-আমেরিকাতে কিন্তু বিষয়টা ঠিক সেরকম নয়। সেখানে বন্য প্রাণীরা বিচরণ করে একটা বিস্তীর্ণ অরণ্যভূমিতে, আর মানুষ থাকে আলাদা।’

তিনি বলছিলেন, ‘ভারতের মতো এই ওভারল্যাপিংটা সেখানে নেই। ভারতে কোথায় জঙ্গল শেষ, আর কোথায় মানুষের বাসস্থান শুরু, এটা বোঝা বা চোখে দেখে চিহ্নিত করাটাই মুশকিল।’

কিন্তু প্রোজেক্ট টাইগারে ওই বাস্তবতাটা স্বীকার করা হয়নি, বরং বন্য প্রাণীকে বাঁচানোর জন্য বনবাসী মানুষকে অরণ্য থেকে আলাদা করে দেয়া হয়েছিল।

কৃষ্ণেন্দু বোসের মতে, অরণ্যের যে আদিবাসীরা হাজার হাজার বছর ধরে ভারতে জঙ্গল আর বাঘকে টিঁকিয়ে রেখেছিলেন তাদের অরণ্য থেকে উচ্ছেদ করাটাই ছিল প্রোজেক্ট টাইগারের একটা খুব বড় ত্রুটি।

তিনি বলছিলেন, ‘আমরা বুঝেছিলাম যে মানুষ আলাদা, আর বাঘ ও জন্তুজানোয়ার আলাদা। তারা একসারেথ কখনোই থাকতে পারে না। ফলে প্রজেক্ট টাইগারের শুরুতে করবেট বা কানহার মতো ’৭২ থেকে ’৭৫ সালের মধ্যে যে নয়টা টাইগার রিজার্ভ চিহ্নিত করা হয়েছিল। পাঁচ হাজার বছর ধরে সেই জঙ্গল বাঁচিয়ে রাখা মানুষগুলোকে সেখান থেকে বের করে দিয়ে ওগুলো বাঘের জন্য সংরক্ষিত হল!’

কৃষ্ণেন্দু বোস বলেন,‘আমাদের মানতেই হবে এটা কিন্তু খুব বড় একটা দাম চোকানো।’

স্বভাবতই, ওই মানুষগুলো তখন ভাবলেন এই জঙ্গল আমরাই রক্ষা করেছি, আজ আমাদের এখানে কোনো স্টেক নেই কেন!

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জঙ্গল রাতারাতি রাষ্ট্র বা সরকারের কাছে চলে গেল, তাহলে এখানে আমাদের জায়গা কোথায়?’

ভারতে করবেট-কানহা-বান্দিপুর বা সুন্দরবনের আশপাশে এরকম অসংখ্য গ্রামের হাজার হাজার মানুষ আজো ওই প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়াচ্ছেন।

বাঘ তবুও বিপন্ন
শুরু হয়েছিল মাত্র নয়টি টাইগার রিজার্ভ দিয়ে আজ ৫০ বছর পর গোটা দেশে ৫৩টি অরণ্যকে বাঘের জন্য সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে। অনেক বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যাও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

তার পরেও অনেক বিশেষজ্ঞই ভারতে বাঘের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন। এদেরই একজন গৌরী মাওলেখি, বাঘ নিয়ে গবেষণা করতে তিনি দিনের পর দিন নানা জঙ্গলে কাটিয়েছেন।

মিস মাওলেখির মতে, ভারতে এককালে বাঘের চলাচল ছিল উত্তরাখণ্ড থেকে দেড় হাজার মাইল দূরের আসাম পর্যন্ত। কারণ জঙ্গলগুলোর মধ্যে বাঘের যাতায়াতের নিরবচ্ছিন্ন ‘করিডর’ ছিল।

নগরায়নের ফলে সেই করিডরগুলোর আজ আর অস্তিত্ত্ব নেই। তার বদলে প্রোজেক্ট টাইগারে তৈরি হয়েছে আলাদা আলাদা কতগুলো ‘ব্যাঘ্রদ্বীপ’ বা টাইগার আইল্যান্ড।

গৌরী মাওলেখি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘আসলে বাঘের বাসস্থান ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে। সেগুলো এতটাই ছোট ছোট টুকরো হয়ে গেছে যে তাদের চলাফেরা এখন খুব কম রেডিয়াসে। মিলনের জন্য তারা পরিবারের বাইরে কোনো সাথীও পাচ্ছে না। এই ইনব্রিডিংয়ের ফলে বাঘদের জিনপুলে রোগব্যাধি বাসা বাঁধছে। আগের মতো তারা আর অতোটা শক্তিশালীও নেই!’

পাশাপাশি বুনো শূকর, নীলগাইয়ের মতো বাঘের প্রিয় যে সব শিকার, সেগুলোকেও নির্বিচারে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে।

মিস মাওলেখি বলেন, ‘ফলে এই বিপদে পড়েই দুর্বল ও ক্ষুধার্ত বাঘ কিন্তু হানা দিচ্ছে গ্রামে। তখন আবার মানুষখেকো বলে তাদের গুলি করা হচ্ছে!’

ভারতে অনেক বিশেষজ্ঞই মূলত মনে করেন প্রোজেক্ট টাইগার জঙ্গলের মানুষকে একদিকে যেমন প্রান্তবাসী ও বিপন্ন করেছে, পাশাপাশি অরণ্য বা বন্যপ্রাণীকেও কিন্তু ঠিকমতো সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

গৌরী মাওলেখির মতে, বিভিন্ন রাজ্যের বনবিভাগগুলোর ‘কলোনিয়াল মন-মানসিকতা’ও এর জন্য অনেকটা দায়ী।

তিনি আরো বলছিলেন, ‘সব রাজ্যের বন দফতরেরই ফোকাস কিন্তু বনজ দ্রব্যের ওপর। জঙ্গল থেকে কাঠ পাওয়াটাই তাদের মূল লক্ষ্য। অথচ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং স্পেশাল টাইগার প্রোটেকশন ফোর্স তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় একেবারেই নিচের দিকে।’

পোচিং বা চোরাশিকার আটকাতে বনরক্ষীদের বছরের পর বছর কোনো ট্রেনিং হয় না। শহরে বন্য প্রাণীর স্মাগলিং ও চোরাবাজারি ঠেকাতেও বিশেষ নজরদারি নেই।

গৌরী মাওলেখি জানাচ্ছেন, ‘দিল্লি, পাটনা বা কলকাতার মতো শহরে এরকম হাব আছে, যেখানে আজো বাঘের শরীরের নানা অংশ অবাধে বেচাকেনা হয়!’

বাঘ জাতির গর্ব, কিন্তু ...
পরিবেশ সংরক্ষণের ইতিহাস নিয়ে বহুদিন ধরে গবেষণা করছেন মহেশ রঙ্গরাজন। প্রোজেক্ট টাইগারের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সম্প্রতি তিনি সম্প্রতি এক নিবন্ধে লিখেছেন, যে ধরনের বিরাট তহবিল ও উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নিয়ে এই অভিযান শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক স্তরেও সেটা ছিল নজিরবিহীন এক পদক্ষেপ।

পেরু যেভাবে তাদের ভিকুনা বাঁচাতে ঝাঁপিয়েছিল, কিংবা ইন্দোনেশিয়া তাদের ওরাংওটাং বা এমন কী জায়ান্ট পান্ডা বাঁচাতে চীনের উদ্যোগ। ধারে ও ভারে প্রোজেক্ট টাইগার ছিল সেগুলোর চেয়েও অনেক এগিয়ে।

সবচেয়ে বড় কথা, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাঘকে রাষ্ট্রীয় গর্বের একটা প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল। মহেশ রঙ্গরাজনের কথায়, ‘স্টেটহুডের সিম্বল হিসেবে বাঘ এর আগেও এদেশের প্রিয় প্রতীক হিসেবে দেখা দিয়েছে। যেমন সুভাষ চন্দ্র বোসের হাতে গড়া আজাদ হিন্দ ফৌজেরও প্রতীক ছিল ঝাঁপাতে উদ্যত বাঘ।’

আজো যখন সারা দেশে বাঘশুমারির পর দেখা যায় বাঘের সংখ্যা গতবারের চেয়ে বেড়েছে, জাতির সামনে সেই গর্বিত ঘোষণা করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে। দিনকয়েক আগেই যেমন দেশে নতুন বাঘশুমারির ফল প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তিনি ওই দিন বলেছিলেন, ‘আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি তিন হাজারেরও বেশি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে ভারতই হল বাঘেদের জন্য দুনিয়ার বৃহত্তম ও সবচেয়ে সুরক্ষিত আবাসভূমি!’

এটা ঠিকই যে গত দেড় দশক ধরে প্রতি বছরই ভারতে বাঘের সংখ্যা একটু একটু করে বাড়ছে। তবে তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের ভয়।

মরচুলা গ্রামের ত্রিলোক সিং যেমন বলছিলেন, ‘আজকাল এই যে এত গাড়ি, আলো, ক্যামেরা আর ট্যুরিস্ট ... বাঘদের যেন ভয়ডর সব চলে গেছে। গাড়ির সামনে পড়ে গেলেও তারা কেউ সরে না! আগে ওরা মানুষকে ভয় পেত, কিন্তু এখন আর পায় না!’

ফলে প্রোজেক্ট টাইগার প্রজন্মের এসব বাঘ ক্রমশ যেন বেপরোয়া হচ্ছে। আর বনবাসীরা দিন কে দিন আতঙ্কে সিঁটিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
শিল্পী-সাংবাদিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যশোর কারাগারে হাজতিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক আতঙ্ক চিকিৎসার জন্য ঢাকা ছাড়লেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

সকল