২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসলামোফোবিয়া বন্ধে মুসলিম দেশগুলো কিছুই করতে পারেনি : ইমরান খান

ওআইসি সদস্যদেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বক্তব্য রাখছেন ইমরান খান - ছবি : এপিপি

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন. বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ইসলামোফোবিয়া বন্ধে মুসলিম দেশগুলো কিছুই করতে পারেনি।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে শুরু হওয়া বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্যদেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে দেয়া ভাষণে এই কথা বলেন তিনি।

ইমরান খান বলেন, নাইন-ইলেভেনের ঘটনার পর সারাবিশ্বেই মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভুল ধারণা ছড়িয়েছে যে মুসলমানরা সন্ত্রাসী।

তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমরা ইসলামোফোবিয়ার এই ভুল ধারণা প্রতিরোধের জন্য কোনো চেষ্টাই করিনি এবং ফলে পশ্চিমের সাধারণ মানুষ তা বিশ্বাস করেছে।’

গত ১৬ মার্চ জাতিসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রতিবছর ১৫ মার্চ আন্তর্জাতিক ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব পাস করা হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এর জন্য ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ‘১৫ মার্চকে জাতিসঙ্ঘে ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাস হওয়ায় আমি বিশেষ করে আমাদের ওআইসি সদস্যদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

ইমরান খান বলেন, বিশ্ব বর্তমানে ইসলামোফোবিয়ার বাস্তবতা উপলব্ধি করেছে পেরেছে এবং তা প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বিশ্ব মুসলমানদের ভুলভাবে সন্ত্রাসের সাথে যুক্ত করেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওআইসির অন্যতম উদ্দেশ্য ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষা করা। কিন্তু ইসলামি মূল্যবোধ বর্তমানে যে হুমকির মুখে রয়েছে, তা আর কখনোই হয়নি।

তিনি বলেন, ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি পরিবার ব্যবস্থা সংরক্ষণ করেছে। বাবা-মা ও শিক্ষকদের সম্মান করার মতো মূল্যবোধ এর আছে।

ইমরান খান বলেন, ‘কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সূত্রে বর্তমানে যে সংস্কৃতি আসছে, আমাদের আবশ্যিকভাবে উচিত চিন্তা করা যে কিভাবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আমরা রক্ষা করবো।’

ওআইসি সদস্যদেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আরো বলেন, ফিলিস্তিন ও কাশ্মিরের জনগণের অধিকার রক্ষায় মুসলিম দেশগুলো ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখের সাথে বলছি এর ওপর আমরা কোনো প্রভাবই ফেলতে পারছি না। আমরা এক শ’ ৫০ কোটি লোক কিন্তু এই স্থূল অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা কোনো আওয়াজই তুলতে পারিনি।’

ইমরান খান বলেন, ওআইসির দেশগুলোকে হয় একতাবদ্ধ হয়ে আওয়াজ তুলতে হবে না হয় এই অন্যায় চলতেই থাকবে।

ইমরান খান আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘৪০ বছরের সংঘাতে আফগানিস্তানের মতো দুর্ভোগে কোনো দেশই পড়েনি। সর্বশেষে সেখানে এখন কোনো সংঘাত চলছে না।’

বর্তমানে দেশটি শুধু অবরোধ ও স্বীকৃতি না পাওয়ার বিপদেই রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ইমরান খান বলেন, ‘স্থিতিশীল আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠাই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বন্ধের একমাত্র উপায়।’

এর আগে মঙ্গলবার ইসলামাবাদে পার্লামেন্ট হাউজে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সম্মেলন শুরু হয়।

এই বছর ‘একতা, ন্যায়বিচার ও উন্নতির জন্য সহযোগিতা গড়া’ প্রতিপাদ্যে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

২২ ও ২৩ মার্চ দুই দিনের এই সম্মেলনে এক শ’র বেশি প্রস্তাব আলোচনার জন্য বিবেচিত হয়েছে।

সম্মেলনে ৫৭ সদস্যের সংগঠনটির ৪৬টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংশ গ্রহণ করছেন। অপর দেশগুলোর প্রতিনিধি দল ওই দেশগুলোর পররাষ্ট্র বিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অংশ নেননি। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নিয়েছে।

সূত্র : ডন, দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল ও জিও নিউজ


আরো সংবাদ



premium cement