ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় বৃহস্পতিবার আরডিএক্স বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ‘সেন্ট্রাল রির্জার্ভ পুলিশ ফোর্স’র গাড়িবহরে আত্মঘাতি হামলা চালায়। ওই আত্মঘাতি হামলার পর রিজার্ভ পুলিশের ৪৪ সদস্য নিহত হওয়ায় সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। এই হামলার ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সাথে বিষয়টির ওপর তিনি নজর রেখেছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের এ কথা জানান। টাইমস অব ইন্ডিয়া খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমি বিষয়টির খেয়াল রাখছি, প্রতিনিয়ত এই ঘটনার খবর পাচ্ছি আমি। এ হামলা নিয়ে উপযুক্ত সময়েই বিবৃতি দেয়া হবে।
‘এই হামলার ঘটনায় এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা চলছে। তবে ‘চমৎকার’ হবে যদি প্রতিবেশী দুই এক হয়ে সস্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করে’।
ট্রাম্প বলেন, ‘এটা (পুলওমা হামলা) ছিলো একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা। আমরা নিয়মিতই খবরাখবর রাখছি। এ নিয়ে আমরা বিবৃতি দেবো।’
এদিকে ভয়াবহ এ সন্ত্রাসী হামলার পর ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনও ভারতের ‘আত্মরক্ষা’ নীতিকে সমর্থন করেছেন।
হামলার ঘটনায় বোল্টন ছাড়াও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি সারা স্যান্ডার্স পৃথক বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তানকে জইশ-ই-মোহম্মদ (জেইএম) ও এর নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তিপুরা এলাকায় সৈন্যবহরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভড পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়।
ঘটনার পরপরই এ হামলার দায় স্বীকার করেছে জেইএম। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা। ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে ‘দেখে’ নেয়ার কথা বলা হয়।
পাল্টা পাকিস্তানও ‘বসে থাকবে না’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
এদিকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে পাকিস্তান-ইরান সীমান্তের কাছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের ওপর জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-আল আদ আত্মঘাতী হামলা চালায়। এতে ২৭ জনের প্রণহানি ঘটে।
এই দুই হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি। তবে এসব ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে ‘সন্ত্রাসের স্বর্গ রাজ্য’ খ্যাত পাকিস্তানকে।
আরো পড়ুন: ভারতীয় জেলে পাকিস্তানি বন্দীকে হত্যা
এনডিটিভি ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
ভারতের একটি জেলখানায় এক পাকিস্তানি বন্দীকে হত্যা করেছে অন্য কয়েদিরা। ঘটনা পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুর কেন্দ্রিয় জেলখানার। বুধবার কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিভির সাউন্ড নিয়ে বিতর্কের জের ধরে তাকে মারধর করে কয়েকজন ভারতীয় কয়েদি। এতে মৃত্যু হয় ওই পাকিস্তানি কয়েদির।
পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজ্য হওয়ায় রাজস্থানে পাকিস্তানিদের আগমন ঘটে প্রতিদিন। ব্যবসায় বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে প্রচুর পাকিস্তানি আসেন সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে। ৫০ বছর বয়সী শাকির উল্লাহ নামের ওই পাকিস্তানি বেআইনি কর্মকাণ্ডের কারণে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ৮ বছর ধরে আছেন ওই জেলখানায়। ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় হয়েছে।
কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চারজন বন্দী এক সাথে টিভি দেখছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লাগে। তিন ভারতীয় একটি বড় পাথর দিয়ে শাকির উল্লাহর ওপর হামলা চালায়। তারা শাকিরের মাথা গুড়িয়ে দেয় বলে জানিয়েছেন জয়পুরের অতিরিক্ত কমিশনার লক্ষণ গৌর।
তিনি জানান, বিষয়টি স্পষ্ট নয় যে তারা বড় পাথর কোথায় পেয়েছেন এবং ঘটনাস্থলের আশপাশে কোন পুলিশ ছিল না।
সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা, একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত জেল খানায় ছুটে যান খবর পেয়েছে। একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করবে।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই জয়পুর জেলে বন্দি ছিলেন অনুপ্রবেশ এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার পাক নাগরিক শাকিরুল্লাহ। জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, বুধবার সকালে তার উপর চড়াও হন জেলের অন্যান্য আবাসিকরা। মূলত সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামী তাঁকে মারধর শুরু করে। তার সঙ্গে যোগ দেন অন্য বন্দিরাও। শাকিরুল্লাকে বেধড়ক পেটানো হয়। জেলের একটি সূত্রে খবর, বাঁশ-লাঠি দিয়ে পেটানোর পাশাপাশি তাঁকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলেই নেতিয়ে পড়েন শাকিরুল্লাহ।
খবর পেয়েই জেলের বিপদ ঘণ্টি বাজানো হয়। সঙ্গে সঙ্গেই জেলের নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে যান। ক্ষিপ্ত বন্দিদের হাত থেকে শাকিরুল্লাহকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও খবর পাঠানো হয়। একটি মেডিক্যাল টিম এবং পুলিশ কর্মীরা গিয়ে শাকিরুল্লাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শাকিরুল্লার।
আনন্দবাজার বলছে, কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর ওপর আত্মঘাতি হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করা হচ্ছে ভারতের পক্ষ থেকে। ওই হামলার জেরেই পাকিস্তানি নাগরিককে হত্যা করলো ভারতীয়রা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা