১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


মোদিকে আম্বানিদের দালাল বললেন রাহুল

সংবাদ সম্মেলনে ই-মেইলের কপি হাতে রাহুল গান্ধি - ছবি : সংগৃহীত

রাফাল দুর্নীতিতে এতদিন মোদীকে ‘চোর’ বলে উল্লেখ করতেন রাহুল গান্ধি। এ বার তাকে ‘আম্বানিদের দালাল’ বলে সমলোচনা করেন রাহুল। সোমবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাফাল দুর্নীতি কোনো সাধারণ দুর্নীতি নয়, এটি দেশদ্রোহের অপরাধের সমান।


গত সোমবার দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন রাহুল গান্ধি। সেখানে একটি ইমেইলের কপি তুলে ধরেন তিনি। কংগ্রেস নেতা কপিল সিবলও পরে টুইটারে সেটি আপলোড করেন। বিমান নির্মাণ সংস্থা এয়ারবাসের এক কর্মকর্তার ইমেইল আইডি থেকে ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ চিঠিটি লেখা হয়েছিল।


তাতে ওই কর্মকর্তা লিখেছিলেন, এক সহযোগী মারফত ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে অনিল আম্বানির গোপন সাক্ষাতের কথা জানতে পেরেছেন তিনি। বাণিজ্যিক ও প্রতিরক্ষা বিমান নির্মাণে কাজ করতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন আম্বানি। খুব শীঘ্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফ্রান্স সফরে আসবেন। তখন দুই দেশের মধ্যে সে সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও জানান আম্বানি।


২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফ্রান্স সফরের দুই সপ্তাহ আগে তৎকালীন ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জঁ-ইভস লে দ্রিয়ানের প্যারিস দফতরে উপস্থিত হন অনিল আম্বানি। জঁ-ইভস লে দ্রিয়ানের উপদেষ্টা জঁ ক্লঁ মলেতও হাজির ছিলেন সেখানে। বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রাক্তন ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা ক্রিস্তফ সলোমন, প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা জিওফ্রে বুকোতও।


একরকম তড়িঘড়ি করেই বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল বলে পরবর্তীকালে এয়ারবাস সংস্থার এক কর্মকর্তাকে জানান সলোমন। সেই প্রেক্ষিতেই ইমেইলটি লেখা হয়।


সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে বিষয়টি সামনে এসেছে। তাই নিয়েই আবারো ঝাঁপিয়ে পড়েছে কংগ্রেস। ওই চিঠিকে হাতিয়ার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন রাহুল গান্ধি। তিনি বলেন, ‘গোপনীয়তা রক্ষার শপথ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো রকম আপস করা উচিত নয় তার।


কিন্তু সে সব উপেক্ষা করে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার আগেই প্রতিরক্ষা চুক্তির গোপন তথ্য অনিল আম্বানির হাতে তুলে দিয়েছেন। রাফাল চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রী আম্বানিদের দালালের ভূমিকা পালন করেছেন মোদি। গুপ্তচররা এই ধরনের আচরণ করে।


দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব জানলেন না, অথচ চুক্তির খুঁটিনাটি জেনে গেলেন অনিল আম্বানি। প্রধানমন্ত্রীকে এর জবাব দিতেই হবে।’ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে রাফাল দুর্নীতির তদন্ত হবে এবং কাউকে রেয়াত করা হবে না বলেও জানান রাহুল।


রাফাল দুর্নীতি নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি দাম দিয়ে ৩৬টি রাফাল বিমান কেনার চুক্তি করেছে মোদী সরকার। সেই চুক্তির অংশীদারী আবার পাইয়ে দেয়া হয়েছে অনিল আম্বানির সংস্থাকে, যুদ্ধবিমান তৈরিতে যাদের পূর্ব অভিজ্ঞতাই নেই।


এর আগে, সোমবার রাফাল চুক্তি থেকে দুর্নীতি বিরোধী জরিমানার শর্ত বাদ দেয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। তা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন রাহুল গান্ধি। মোদী নিজেই অনিল আম্বানিকে ৩০ হাজার কোটি টাকা চুরি করার রাস্তা করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।


সূত্র : এনডি টিভি, ইকোনমিক টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement

সকল