পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে বিল পাশ হয়েছে ভারতীয় পার্লামেন্ট লোকসভায়। অমুসলিম শরণার্থীদের তালিকায় রাখা হয়েছে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের। এই বিল আইনে পরিণত হলে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে কেউ ভারতবর্ষে থাকার আবেদন করলে মিলবে ভারতের নাগরিকত্ব। এই বিল পাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রের কড়া বিরোধিতায় সরব হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো।
সোমবার এই বিতর্কিত বিল নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় এনডিএ ছেড়েছে আসামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল আসাম গণ পরিষদ (অগপ)। যদিও সেই বাধা অগ্রাহ্য করেই মঙ্গলবার লোকসভায় এই বিলটি পাশ করাল মোদি সরকার। আসামের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি, এই বিল পাশ হওয়ার ফলে বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ পার্শ্ববর্তী আসাম-সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে আশ্রয় নেবেন। অর্থাৎ, ১৯৭১ সালের মার্চের পরে ভারতে এলেও শরণার্থীরা পেয়ে যাবেন ভারতীয় নাগরিকত্ব। সে কারণেই ওই রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি, এই বিল ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ডের বিরোধী। সে কারণেই বিলটি শুরু থেকেই আসামের ওই রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সংবেদনশীল। আসামের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বহিরাগতদের নিজস্ব এলাকায় আশ্রয় দিতে বরাবরই নিজেদের বিরোধিতার কথা বলেছে প্রকাশ্যেই। মঙ্গলবার এই বিলের বিরুদ্ধে অসমের রাস্তায় নামে অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, আসাম গণ পরিষদ, এআইইউডিএফসহ আরো বেশ কয়েকটি দল। তাদের বিক্ষোভে প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায় আসামের জনজীবন।
বিলটি নিয়ে বিতর্কের সময় লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, ‘‘সারা দেশের কথা মাথায় রেখেই এই বিল। উত্তর-পূর্ব ভারত এবং আসামের কথাও ভাবা হয়েছে।’’
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (২০১৬) আইনে পরিণত হলে বদলে যাবে ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন। সে ক্ষেত্রে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে কেউ ভারতে পালিয়ে এলে আশ্রয় দেবে ভারত। মিলবে ভারতের নাগরিকত্বও। যদিও এই সুবিধা পাবেন শুধু মাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ এবং পার্সি ধর্মের মানুষেরা।
বিষয়টি নিয়ে লোকসভায় সরব হন কংগ্রেস ও বাম সাংসদেরা। তাদের দাবি, এই বিল আইনে পরিণত হলে ভারতীয় নাগরিকত্বের সঙ্গে ধর্মের যোগ তৈরি হবে, যা দেশের সাংবিধানিক কাঠামোর বিরোধী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা