২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বৈশ্বিক সঙ্কট উত্তরণে ইসলামী অর্থব্যবস্থা

বৈশ্বিক সঙ্কট উত্তরণে ইসলামী অর্থব্যবস্থা - নয়া দিগন্ত

আদিম যুগ থেকে দীর্ঘকাল ট্র্যাডিশনাল অর্থনীতি প্রচলিত থাকলেও গত শত বছর ধরে সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক মতবাদ বিশ্ব অর্থনীতিকে শাসন করছে। এই দুই অর্থনৈতিক মতবাদের মধ্যে পুঁজিবাদী অর্থনীতি মানুষকে বল্গাহীন স্বাধীন, নিপীড়ক, স্বার্থপর ও স্বেচ্ছাচারী করে তুলছিল। পুঁজিবাদের এই সমস্যা থেকে মানুষের মুক্তির স্লোগান নিয়ে সমাজতন্ত্রের আবির্ভাব। সেই সমাজতন্ত্র স্বাধীন মানুষকে পরাধীন, যান্ত্রিক ও মানবেতর বস্তুতে পরিণত করে। আর এই দুই মেরুর অর্থব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন করে ইসলামী অর্থনীতি, যা সমৃদ্ধশালী, সর্বজনীন কল্যাণকামী সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা পালন করে।

বস্তুত মানবরচিত কোনো অর্থব্যবস্থা সর্বজনীন হতে পারে না; বরং অর্থনৈতিক সফলতা ও মুক্তি একমাত্র আল্লাহ প্রেরিত অভ্রান্ত সত্যের উৎস কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক ইসলামী অর্থনীতির মধ্যেই নিহিত। উল্লিখিত তিনটি অর্থনৈতিক মতবাদের তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ব অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় ইসলামী অর্থনীতির করণীয় নিয়ে আজকের আলোচনা।

পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা
পুঁজিবাদী অর্থনীতির ভিত্তি হলো ব্যক্তি মালিকানার সীমাহীন অধিকার। কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নয় বরং সব রকম উৎপাদনের উপকরণ এবং যন্ত্রপাতি ইচ্ছেমতো ব্যবহার ও প্রয়োগেরও পূর্ণ সুযোগ লাভ করা যায়। ব্যক্তি নিজ ইচ্ছেমতো কারখানা স্থাপন, যতদূর ইচ্ছে মুনাফা অর্জন, যেকোনো পন্থায় অর্থোপার্জন, ব্যয় ও ব্যবহারও করতে পারে। ইচ্ছেমতো শ্রমিক নিয়োগের যেমন সুযোগ রয়েছে, তাদেরকে শোষণ করে মুনাফা লুণ্ঠনের পথেও কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। ব্যক্তি বা গোটা সমাজ মিলিত হয়েও কাউকে কোনো প্রকার কাজ হতে বিরত রাখতে পারে না। এই অর্থব্যবস্থা সুদখোর, মহাজন, শোষক, কারখানা মালিক ও জালেম ধনিক শ্রেণী সৃষ্টি করে। পাশাপাশি মজুর-কৃষকদের এক সর্বহারা বুভুক্ষুর দল তৈরি করে। এই অর্থব্যবস্থায় সহানুভূতি, সহৃদয়তা, মায়া-মমতা, পারস্পরিক সাহায্য প্রভৃতি মানবীয় ভাবধারার লেশমাত্র নেই।

পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সর্বপ্রথম ব্রিটেনে আত্মপ্রকাশ করে। পরবর্তীতে তা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যবস্থায় জনসাধারণের কল্যাণ ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের প্রশ্নই ছিল না। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ন্যূনতম মজুরিতে সর্বাধিক উৎপাদন এবং ব্যক্তিস্বার্থের নীতিতে উৎপাদন করা হতো। ফলে উৎপাদিত পণ্যে গুদামগুলো ভরে গেল। অন্যদিকে রফতানির পথ সীমিত হওয়ায় এসব পণ্য গুদামে নষ্ট হতে লাগল। কিন্তু শ্রমিক ও গরিবরা এসব পণ্যের কোনো উপকার পেল না।

অনেক দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলাবদ্ধ করার জন্য পুঁজিবাদীরা ‘আরো চাই’ ধ্বনি দিয়ে এগিয়ে চলে। নিজ দেশের স্বাধীন ব্যবসায়ীদের দাসে পরিণত করে দুর্বল দেশ ও জাতিগুলোর সার্বভৌমত্ব হরণ করে উপনিবেশ গড়ে তোলে। শিল্প বিপ্লবের ফলে উপনিবেশবাদ আরো জেঁকে বসে। বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের আবিষ্কার ও শিল্প উৎপাদনের ক্রমবিকাশমান কলাকৌশলকে বেনিয়ারা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে শুরু করে। এরই ফসল শিল্প বিপ্লব। একই সাথে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হয় ভোগবাদী দর্শন দিয়ে। এরই সাথে পরবর্তীকালে যুক্ত হলো সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবাদ। পুঁজিবাদ এভাবেই তার শক্তিমত্তা ও দাপট বৃদ্ধি করে চলল।
সর্বোপরি পুঁজিবাদের সীমাবদ্ধতাগুলো হলো অপচয়মূলক প্রতিযোগিতা; অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও বেকারত্বের সৃষ্টি; সম্পদের ত্রুটিপূর্ণ বণ্টন; একচেটিয়া ব্যবসায়ীর উদ্ভব ও তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা সংহতকরণ। এর ফলে চরম নৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। এর ফলে বিশ্বে একক পরাশক্তির আত্মপ্রকাশ, চরম অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি, বিশ্বায়ন ও উদারীকরণের ছলে বিশ্বকে শোষণের কৌশল গ্রহণ, চরম দারিদ্র্য ও ভোগ-বিলাসপূর্ণ জীবন যাপন ইত্যাদি নিত্যকার দৃশ্য। গণতন্ত্রের ধোঁকা দিয়ে মুষ্টিমেয় বিত্তশালী লোকের শাসন প্রতিষ্ঠা; স্যাটেলাইট ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রবাহ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পুঁজিবাদী জীবনাদর্শ; আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও সা¤্রাজ্যবাদের মোড়ল তৈরি হয়।

সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা
সমাজতন্ত্র মূলত পুঁজিবাদের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ একটি অর্থব্যবস্থার আত্মপ্রকাশ। পুঁজিবাদী সমাজের মজলুম শোষিত মানুষকে বুঝ দেয়া হয়েছে যে, ব্যক্তিগত মালিকানাই সব রকম বিপর্যয়ের কারণ। এর উচ্ছেদেই সব অশান্তি ও শোষণ-নির্যাতনের চির অবসান ঘটার মূলমন্ত্রে কমিউনিজমের অর্থনীতির প্রতিষ্ঠা। সমাজতন্ত্রের প্রথম পদক্ষেপই হলো ব্যক্তিমালিকানার অধিকার অস্বীকার করা এবং অর্থ উৎপাদনের সব উপায়-উপাদান ও যন্ত্রপাতি জাতীয় মালিকানায় থাকা। ফলে কমিউনিস্ট সমাজে জাতীয় অর্থোৎপাদনের উপায়-উপাদানের উপর রাষ্ট্র পরিচালক মুষ্টিমেয় শাসকগোষ্ঠীর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়েছে। তারা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিশেষ প্ল্যান-প্রোগ্রাম ও পরিকল্পনা অনুযায়ী সব উপায়-উপাদান ব্যবহার করে থাকে। তাদের নির্ধারিত নীতি অবনত মস্তকে মেনে নিতে একান্তভাবে বাধ্য হয় সে সমাজের কোটি কোটি মানুষ। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে সমাজতান্ত্রিক মতবাদ তাদের প্রতি সমর্থন জানানো শুরু করে। বিংশ শতাব্দীতে সোভিয়েত রাশিয়ার মতো বিরাট দেশে মেহনতি মানুষের বিপ্লব সংঘটিত হয়। এরপর কার্ল মার্কসের সমাজতান্ত্রিক মতবাদ অনুযায়ী আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও কায়েম করা হয়। সমাজতন্ত্র ইতোমধ্যে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। যেমনি তার আকস্মিক আবির্ভাব, তেমনি আকস্মিক তিরোধান। যেসব দেশ এখনো সমাজতন্ত্রের দাবিদার তারা বহুবার পরিবর্তন, সংযোজন, সঙ্কোচন ও সংশোধনের মাধ্যমে প্রকারান্তরে পুঁজিবাদের নামাবলি গায়ে জড়িয়ে নিয়েছে।

ইসলামী অর্থব্যবস্থা ও তার প্রয়োগ
ইসলামী অর্থনীতি হলো বিশ্ব-প্রতিপালন নীতির অনুসরণে আল্লাহ তার সৃষ্টির লালন-পালনের জন্য সমুদয় জাগতিক সম্পদের সামগ্রিক এবং কল্যাণধর্মী ব্যবস্থাপনা। সৃষ্টজীবের কল্যাণের জন্য সম্পদের সর্বাধিক উৎপাদন, সুষ্ঠু বণ্টন, ন্যায়সঙ্গত ভোগ বিশ্লেষণ রয়েছে এ ব্যবস্থায়। এ ব্যবস্থায় শরিয়তের বিধি-নির্দেশ সম্বন্ধীয় জ্ঞান ও তার প্রয়োগ যা বস্তুগত সম্পদ আহরণ ও বিতরণের ক্ষেত্রে অবিচার প্রতিরোধে সমর্থ হয়। ফলে আল্লাহ ও সমাজের প্রতি তারা দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সক্ষম হবে।

ইসলামী অর্থনীতি ন্যায়পরায়ণতা কায়েম করে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়স্বজনকে দান করার নির্দেশ দেন এবং অশ্লীলতা, অন্যায় কাজ ও অবাধ্যতা হতে নিষেধ করেন।’ (সূরা নাহল-৯০) অর্থনীতিতে সুনীতি প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি উৎখাত করাও ইসলামী অর্থনীতির অন্যতম উদ্দেশ্য। এই ব্যবস্থায় নির্যাতিত ও বঞ্চিতদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছে। মানুষ তার সম্পদের একচেটিয়া মালিক নয়; বরং সম্পদশালীদের সম্পদে দুস্থ-গরিব, নির্যাতিত ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তাদের সম্পদে সাহায্যপ্রার্থী ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ (সূরা জারিয়াত-১৯) এ ব্যবস্থায় জনগণের স্বার্থে স্বাস্থ্যসম্মত দ্রব্যের পর্যাপ্ত উৎপাদন নিশ্চিত করা ও সব অকল্যাণকর, অস্বাস্থ্যকর দ্রব্যের উৎপাদন, আমদানি-রফতানি ও ব্যবসায়-বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, বেদি ও শুভাশুভ নির্ণয়ের তীরসমূহ নাপাক ও শয়তানি কাজ। অতএব তোমরা এসব থেকে বিরত থাকো যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।’ (সূরা মায়িদা : ৯০-৯১) ইসলাম সম্পদের সুষম বণ্টনের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘ধনৈশ্বর্য যেন কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়।’ (সূরা হাশর-৭) ইসলাম জনকল্যাণের জন্য সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার চায়। এ জন্যই ইসলাম পতিত জমি ফেলে রাখা সমর্থন করেনি; বরং এই জমিতে যিনি ফসল উৎপন্ন করবেন, তিনিই তা ভোগ করবেন।

সুদ পুঁজিবাদের সৃষ্ট সমাজ শোষণের অন্যতম হাতিয়ার। সুদি কারবারের ফলে সমাজের বিত্তশালীরা অসহায়, নিঃস্ব, দরিদ্রের সম্পদ চুষে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে, অথচ হতদরিদ্র মানুষগুলো দিন দিন অর্থশূন্য হয়ে ধুঁকে মরে। তাই ইসলাম সুদ চিরতরে নিষিদ্ধ করে ব্যবসায়-বাণিজ্য, জাকাত, দান-সাদকা ও কর্জে হাসানাভিত্তিক অর্থনীতি প্রবর্তন করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের পাওনা যা বাকি রয়েছে, তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা সত্যিকারের মুমিন হয়ে থাকো।’ (সূরা বাকারা-২৭৮) ঘুষের ব্যাপারে আল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।’ (সূরা নিসা-২৯) ইসলাম ব্যবসায়-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ধোঁকা দিয়ে অর্থোপার্জন নিষিদ্ধ করেছে।

সুদ-ঘুষকে তিরোহিত করে ইসলাম ব্যবসাভিত্তিক অর্থব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। ইসলামে অপব্যয় ও অপচয় দোষণীয় অপরাধ। আল্লাহ বলেন, ‘যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই, আর শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।’ (সূরা আল-ইসরা : ২৬-২৭)
জাকাতব্যবস্থা ইসলামী অর্থনীতির অন্যতম বাধ্যতামূলক বিধান। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো ও জাকাত আদায় করো, তোমরা নিজের জন্য পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে তা আল্লাহর কাছে পাবে।’ (সূরা বাকারা-১১০) ওশর, জিজিয়া, কর্জে হাসানাহ ইত্যাদি ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং সব রকম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইসলামী শরিয়তের পূর্ণ বাস্তবায়নই হচ্ছে ইসলামী অর্থনীতির অন্যতম লক্ষ্য। পরের সম্পদ গ্রাস করা ও ন্যায্য অধিকার প্রদান না করা, ঋণ পরিশোধ না করা, চুরি-সন্ত্রাস করা, রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথার্থ ব্যবহার না করা ইত্যাদি বিষয় কঠোরভাবে তদারকি করা গেলে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক সঙ্কট থাকার কথা নয়। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।’ (সূরা নিসা-২৯) ‘অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি বা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে মানুষ। সে জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খাদ্যশস্য বা ধন-সম্পদের কিছুটা সংরক্ষণ দরকার। ইউসুফ আ: মিসরের খাদ্যভাণ্ডারের দায়িত্ব নিয়ে এমনটিই করেছিলেন।’ (সূরা ইউসুফ-৪৮)

মোট কথা আল্লাহ মানবজাতি সৃষ্টি করে তার জীবিকা নির্বাহের জন্য পরিপূর্ণ একটি ইসলামী অর্থব্যবস্থার দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু মানুষ আল্লাহর দেয়া ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে মনগড়া মতবাদ তৈরি করে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অব্যবস্থা সৃষ্টি করছে। ফলে গত কয় দশকে পৃথিবীতে সক্ষমতার বিকাশ ঘটলেও তা জনস্বার্থে তেমন কাজে আসেনি। মুনাফার আগ্রাসন, ডিজিটাল নজরদারি সম্প্রসারণ, গোয়েন্দা সংস্থার খবরদারি, রাষ্ট্রযন্ত্রের নিপীড়ন ব্যবস্থা, মিডিয়া-আদালত নিয়ন্ত্রণ এ সবই পুঁজিবাদ বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। সম্পদ মুষ্টিমেয়র হাতে কুক্ষিগত হচ্ছে অথচ কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। ধনিক গোষ্ঠীর সম্পদে প্রবৃদ্ধি, চোরাই সম্পদ বৃদ্ধি, বৈষম্য বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য-শিক্ষা ব্যবস্থার করুণ দশা ও পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে উদ্বাস্তু সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনীতির প্রায় সব সেক্টর পুঁজিপতিরা গিলে ফেলে মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত এবং গরিবদের রাস্তায় ঠেলে দিচ্ছে। পরিণতিতে সমাজতন্ত্র বিদায় নিয়েছে; পুঁজিবাদও বিদায়ের রাস্তা খুঁজছে।

প্রকৃত অর্থে অর্থনীতির সব সমস্যার সমাধান রয়েছে ইসলামী অর্থনীতিতে। পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য ইসলামী অর্থব্যবস্থার বাস্তবায়নের মধ্যেই রয়েছে সমাধান।

লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
Mizan12bd@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement