১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


দেশ জাতি রাষ্ট্র

প্রফেসর ইউনূসের বিবৃতি ভিক্ষা!

ড. মুহাম্মদ ইউনূস - ফাইল ছবি

নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতি ভিক্ষার অভিযোগ এনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী গত সপ্তাহে গণভবনে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার একটু অবাক লাগছে, ভদ্রলোকের যদি এতটুকু আত্মবিশ্বাস থাকত যে, তিনি কোনো অপরাধ করেননি, তাহলে ওই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।’ প্রধানমন্ত্রী ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচার বন্ধের কথা না বলে বিবৃতিদাতা বিশ্বনেতাদের বাংলাদেশে আইনগত এক্সপার্ট পাঠানোর আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, ‘যদি এতই দরদ থাকে তাহলে তারা এক্সপার্ট পাঠাক এবং যার বিরুদ্ধে মামলা তার সব দলিল দস্তাবেজ খতিয়ে দেখুক, তারাই এসে দেখুক কোনো অন্যায় আছে কি না।’ ওই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিককের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আমাদের দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তা ছাড়া সব কিছু একটা আইন মতো চলে। কেউ যদি ট্যাক্স না দেয়, শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে আর শ্রমিকরা যদি মামলা করে, লেবার কোর্টে যদি মামলা হয়- আমাদের কি সেই হাত আছে যে, আমরা মামলা বন্ধ করে দেবো? একটি চলমান মামলা, আমাদের দেশে চলমান মামলা নিয়ে আলোচনাও করি না। আর বাইরে থেকে বিবৃতি দিয়ে মামলা বন্ধ করার কথা বলেন! আমার কি অধিকার আছে মামলা বন্ধ করার?’

তিনি আরো বলেন, ‘লেবারের অধিকার নিয়ে তো আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়, আইএলওতে শুধু নালিশ আর নালিশ। অথচ লেবারের অর্থ কোম্পানি আইন অনুযায়ী ৫ শতাংশ ওয়েলফেয়ারে দিতে হবে। এখন যদি সেটি কেউই না দেয়, আর লেবাররা মামলা করে, আর মামলা করার ফলে যদি তাদের চাকরিচ্যুতি করা হয় তার জন্য তারা যদি আবার মামলা করে এ জন্য সেই দায়-দায়িত্ব তো আমাদের না।’ প্রধানমন্ত্রী মামলা করার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এখন স্বাভাবিকভাবে সারা দেশে মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক একটি চাপ যেখানে সরকারের অর্থ পাওনা সেখান থেকে তো অর্থ আদায় করতে হবে।’ সরকারপ্রধান বলেন, ‘যদি আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইউরোপসহ তাদের দেশে কেউ ট্যাক্স ফাঁকি দিলে কি তাকে কোলে তুলে নাচে তারা? আমি মনে করি, তারা যদি একবার এক্সপার্ট পাঠায় তাহলে আরো অনেক কিছু বেরুবে যেটি হয়তো আমরা কখনো হাতও দেইনি। এ রকম বহু কিছু বেরুবে সেখানে তাদের কথা দরকার। বিবৃতি না দিয়ে আপনারা যাচাই-বাছাই করে দেখেন। নয়তো আমাদের দেশে আইন আছে, আদালত আছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে- এটি সাফ কথা।’

এর আগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি পাঠান বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেল বিজয়ী রয়েছেন। গত ২৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক গণসংযোগ প্রতিষ্ঠান সিজিয়ন পিআর নিউজওয়েয়ার তাদের ওয়েবসাইটে এই বিবৃতি প্রকাশ করে। চিঠিদাতাদের মধ্যে বারাক ওবামা, শিরিন এবাদি, আলগোর, তাওয়াক্কুল কারমান, নাদিয়া মুরাদ, মারিয়া রেসা, হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোষসহ ১৪ জন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী রয়েছেন। আরো রয়েছেন ওরহান পামুক, জেড এম কোয়েটজিসহ চারজন সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী। জোসেফ স্টিগলিৎজসহ অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী সাতজন অর্থনীতিবিদও রয়েছেন। এ ছাড়া বিবৃতিদাতাদের তালিকায় রয়েছেন জাতিসঙ্ঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, যুক্তরাজ্যের ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের স্যার রিচার্ড ব্র্যানসনসহ শতাধিক ব্যক্তি।

এদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, সামরিক ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখিত বিবৃতির ভাষা এরকম : নোবেল বিজয়ী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সুশীলসমাজের নেতৃত্বস্থানীয় এবং বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে আমরা আপনার কাছে লিখছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে আপনার দেশ যেভাবে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা আমরা স্বীকার করছি। অবশ্য সম্প্রতি বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি যে হুমকি দেখা গেছে, তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু এবং দেশের প্রথম সারির দলগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিগত দু’টি নির্বাচনের বৈধতার ঘাটতি রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মানবাধিকারের প্রতি যেসব হুমকি রয়েছে, তার মধ্যে একটি আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। সেটি হলো- শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা। আমরা এ কারণে শঙ্কিত যে, সম্প্রতি তাকে নিশানা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি ধারাবাহিক বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে আমরা মনে করি।

তার নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ৪০ জন বিশ্বনেতা আপনার কাছে যে চিঠি লিখেছিলেন, তার ওপর ভিত্তি করেই এই চিঠি লেখা হয়েছে। আমরা সম্মানের সাথে আপনার প্রতি অবিলম্বে অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিতের আহ্বান জানাচ্ছি। এরপর আন্তর্জাতিকভাবে আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ বিচারক প্যানেলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হোক। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, তার বিরুদ্ধে দুদক ও শ্রম আইনে যেসব মামলা চলছে, সেগুলো পর্যালোচনা করলে তার দোষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আপনি জানেন, অধ্যাপক ইউনূস যে কাজ করেন, তা আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। সামাজিক ব্যবসায় কীভাবে আন্তর্জাতিক অগ্রগতি আনতে পারে, তা তিনি দেখিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে শতভাগ দারিদ্র্যবিমোচন, বেকারত্ব দূর করা এবং কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতির বিষয় রয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশীরা কীভাবে বৈশ্বিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে, তার নেতৃত্বস্থানীয় দৃষ্টান্ত তিনি। কোনো ধরনের নিপীড়ন ও হয়রানি ছাড়া স্বাধীনভাবে তিনি তার পথ প্রদর্শনমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে পারবেন বলে আমরা আশা করছি। আমরা আশা করি, আপনি এসব আইনগত বিষয়ের যথাযথ, নিরপেক্ষ ও ন্যায্যতা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবেন। পাশাপাশি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করবেন। একই সাথে সব ধরনের মানবাধিকার রক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো নিশ্চিত করবেন। আগামী দিনগুলোতে এসব বিষয়ের সুরাহা কীভাবে হবে, তা দেখার জন্য বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ নজর রাখছে। আমরাও সেসব মানুষের কাতারে রয়েছি। উল্লেখ্য, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর বাইরে আরো ১৮টি মামলা করা হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকমের ১৮ জন কর্মচারী ঢাকা তৃতীয় শ্রম আদালতে ২৮ আগস্ট এসব মামলা করেন।

আদালত সমন দিয়ে আগামী ১৮ অক্টোবরের মধ্যে এর জবাব দিতে বলেছে। ড. ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ করেন, হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই এসব মামলা করানো হচ্ছে। এর আগে ২২ আগস্ট শ্রম আইন লঙ্ঘনের আরেক মামলায় চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রফেসর ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করে সরকারি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক অধিদফতর। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের কর্মকর্তারা প্রফেসর ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ীকরণের কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। এ দিকে গত ৩০ মে প্রফেসর ইউনূসকে প্রধান আসামি করে আরো ১২ জনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

প্রফেসর ইউনূস যেহেতু বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্ব সেহেতু তার বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা দায়ের বিশ্ব সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ দিকে প্রধানমন্ত্রী প্রফেসর ইউনূসের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় দেশে বিবৃতির ঝড় বয়ে যায়। প্রথম বিবৃতিটি যায় প্রফেসর ইউনূসের সপক্ষে। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা তাদের বিবৃতিতে বলেন, শ্রম আইন ভঙ্গের অভিযোগে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের ও ‘সরকারি বিভিন্ন সংস্থা’র মাধ্যমে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। মামলাগুলোকে তারা উদ্দেশ্যমূলক উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সাথে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিতের আহ্বান জানান এই বুদ্ধিজীবীরা। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ড. ইউনূসকে জাতির সূর্যসন্তান অভিহিত করে তাকে হেনস্তা করা বন্ধের আহ্বান জানান। বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ড. ইউনূস এমন একজন মানুষ যাকে শত বছর পরও এই জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তারা এই ভেবে লজ্জিত হবে যে, এরকম একজন বরেণ্য মানুষের সাথে এই দেশের সরকার কী রকমের আচরণ করেছিল।

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা সব মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘ওনাকে যারা ছোট করতে চান, অপমান করতে চান, তারা ওনার সমান উচ্চতায় যেতে পারবেন না।’ এই অনিবার্য সত্যকে ধারণ করে তার বিরুদ্ধে মামলাবাজি বন্ধের আহ্বান জানান এই শীর্ষ নেতা। প্রফেসর ইউনূসের পক্ষে এরকম বিবৃতি আসার পর দেখা যায় বিপক্ষে ব্যক্তিত্ব, প্রতিষ্ঠান, পরিষদ ও রাজনৈতিক বিবৃতি আসছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা নিয়ে শতাধিক নোবেল বিজয়ীর খোলা চিঠির ঘটনাকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ বলে অভিহিত করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবীসহ দেশের ১৭১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিদাতাদের মতে, এই চিঠি দেশের সার্বভৌমত্ব ও বিচার বিভাগের ওপর হুমকি। এই ‘অযাচিত হস্তক্ষেপে’ উদ্বেগ জানিয়েছেন তারা।

বিস্ময়ের ব্যাপার এই, সরকারি বুদ্ধিজীবীদের এই দীর্ঘ তালিকায় এমন সব স্বনামধন্য ব্যক্তি রয়েছেন যারা প্রগতিশীল বলে দাবি করেন। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রগতিশীলদেরই একজন। ব্যক্তিগত আদর্শে প্রফেসর ইউনূস একজন শতভাগ ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি। তিনি মনেপ্রাণে অসাম্প্রদায়িকও বটে। তিনি বিএনপি বা ইসলামী দলগুলোকে সমর্থন করেন এমন প্রমাণ নেই। পৃথিবীজুড়ে যার সুনাম, যার নামে এই সময়ের বাংলাদেশ কুড়িয়েছে অশেষ সম্মান, তার প্রতি এই বৈরিতার কারণ কি?

আশু কারণ জানা যায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, ‘আন্দোলন করে শেখ হাসিনাকে হটাতে পারেনি, তাই ড. ইউনূসকে নিয়ে নতুন খেলা শুরু করেছে বিএনপি। বাংলাদেশের মাটিতে তাদের এই অশুভ খেলা খেলতে দেয়া হবে না। বিএনপির আন্দোলন এখন আর জমে না। ওয়ান-ইলেভেনের মতো ইউনূসের নেতৃত্বে একটি নতুন সরকার এমন কথাবার্তা বাজারে এসেছে। সেই দুঃস্বপ্ন দেখছেন কি না জানি না। ইউনূস সাহেবের খায়েশ ছিল, সে খায়েশ এখনো পূর্ণ হয়নি।’ আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতার বক্তব্য থেকে ইউনূস বিরোধিতার আসল কারণটি জানা যায়।

আওয়ামী লীগের এই ইউনূসভীতি আদিকালের। তিনি যখন নোবেল পুরস্কার লাভ করেন জাতি আনন্দিত হলেও আওয়ামী লীগ আনন্দিত হয়নি। গুজব ছিল এরকম যে, তাদের প্রাপ্যটি স্বজনপ্রীতি করে পশ্চিমারা প্রফেসর ইউনূসকে দিয়েছে। সেই সময় থেকে সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা ইউনূসবিরোধী বিষোদগার করে আসছেন। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন না করার জন্য কোনোরকম প্রমাণ ছাড়াই তারা প্রফেসর ইউনূসকে দায়ী করছেন। অথচ প্রফেসর ইউনূস এই জাতির সৌভাগ্যের প্রসূতি। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- ‘A prophet is not honored in his own village’ ‘গায়ের হুজুর ইজ্জত পায় না’ বাংলায় এ রকম বলা যায়। এটি কী প্রফেসর ইউনূসের ক্ষেত্রে সত্য, নাকি অন্য কিছু? রাজনৈতিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসবে যে সব কিছুর পেছনে রয়েছে ক্ষমতার রাজনীতি, অন্য কিছু নয়, আর কিছু নয়।

দেশে ও বিদেশে দৃশ্যমান বিবৃতিযুদ্ধের পার্থক্য এই যে, একটি মানবিক অপরটি অমানবিক। একটি সুবিচারের আশায় অপরটি অন্যায়-অবিচারের দুরাশায়। প্রথমটি যদি ভিক্ষা হয়, তাহলে অন্যটি অন্যরকম হবে কেন?

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
নিক্সন চৌধুরীরর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্লে-অফের ১টি জায়গার জন্য লড়াইয়ে ৩ দল, ধোনি, কোহলি, রাহুলদের কে পাবেন টিকিট? ফরিদগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ২ জনের আত্মহত্যা মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৫২ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে কেন? মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন কুয়েতে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত রাফা অভিযান : ইসরাইলকে সতর্কবার্তা ১৩ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘অজানা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের’ পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্র আবা‌রো ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই নির্বাচনের পরেও সে কথাই বলেছে যুক্তরাষ্ট্র : ড. মঈন খান ভালুকায় বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ সর্বোচ্চ আয় করা খেলোয়াড় রোনালদো, মেসির অবস্থান কোথায়?

সকল