১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


মোসাদ ও আত্মপ্রতারণা

-

বাংলাদেশের সাথে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের মানুষ ইসরাইল ও ইহুদিবাদকে সাধারণভাবে ঘৃণা করে। এই ঘৃণার ক্ষেত্রে বিএনপি-আওয়ামী লীগ তফাত নেই। বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী সতত স্বাভাবিকভাবে ফিলিস্তিনি ভাইদের পক্ষে রয়েছে। সব দল ও মতের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার পর থেকে এই মনোভাবের ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। কিন্তু রাজনীতি জটিল ও কুটিল বিষয়। পলিটিক্সকে অনেকে পলিট্রিক্স বলে।

তার মানে রাজনীতি হচ্ছে কারসাজি। দৃশ্যত এক অবস্থা অদৃশ্যত আরেক অবস্থা। ইসরাইল ও ইহুদিদের প্রতি স্বাভাবিক ঘৃণা, বিদ্বেষ ও ক্ষোভের কারণে কোনো রাজনৈতিক দল প্রকাশ্য ইসরাইলের পক্ষে কথা বলে না। অবশ্য কয়েক বছর আগে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী নামের কয়েকজন কুলাঙ্গার ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার উকালতি করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। তা এই আমলেই। আওয়ামী লীগ সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ‘দরদ বিগলিত প্রাণ’। কিন্তু মুখে শেখ ফরিদ বগলে ইট। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা পারে না এমন কিছু নেই।

যে ইসরাইলের বিরোধিতার কথা তারা তার স্বরে বলছে সেই ইসরাইলকে একরকম স্বীকৃতি দিয়েছে এই আওয়ামী লীগ সরকার। গেল দুই-এক বছর আগে যখন পাসপোর্ট সংস্কার করা হয় তখন একটি বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আগে পাসপোর্টে লেখা ছিল- ‘এই পাসপোর্ট পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য, কেবল ইসরাইল বাদে।’ অর্থাৎ বাংলাদেশ ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে না। গোটা মুসলিম বিশ্বের এই সাধারণ অনুভূতির সাথে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ একাত্ম যে ইসরাইল শুধু ফিলিস্তিনি জনগণের শত্রুই নয়, তারা মানবতার শত্রু। কিন্তু পরিবর্তিত পাসপোর্টে ‘ইসরাইল ভ্রমণ করা যাবে না’ এই বাক্যটি প্রত্যাহার করা হয়। কিভাবে কোন অদৃশ্য কারণে এই পরিবর্তন আনা হয় তা স্বাভাবিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকার স্বীকার না করলেও এর পেছনে যে অস্বাভাবিক ঘটনাবলি রয়েছে তা কূটনীতি অভিজ্ঞ মানুষ জানে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ইসরাইল সরাসরি অস্থায়ী সরকারের সাথে যোগাযোগ করে। তারা অস্ত্র ও অর্থ দিতে চায়। লন্ডনে স্বাধীনতার সপক্ষে যে আন্দোলন সূচিত হয় সেখানেও তারা অর্থ ও অস্ত্র ঢেলে দিতে চায়। কিন্তু অস্থায়ী সরকার ও লন্ডনের প্রবাসী নেতারা ইসরাইলের ওই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। যদিও কোনো কোনো সূত্রে জানা যায়, ভারতের মাধ্যমে অস্ত্র ও অর্থ ইসরাইল দিয়েছে। তবে প্রকাশ্যত সব আন্তর্জাতিক ফোরামে অযাচিতভাবে ইসরাইল পাকিস্তানের শত্রুতাবশত বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন দেয়। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির প্রশ্ন নয়; বরং তাদের সে সমর্থন ছিল শত্রুতার প্রতি শত্রুতার অংশবিশেষ। যাই হোক, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সব সরকারই সবসময়ই দৃশ্যত ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি দ্ব্যর্থ সমর্থন দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধে অবতীর্ণ, তখন ইসরাইল বাংলাদেশে তথাকথিত সন্ত্রাসী তৎপরতা সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তথ্য-প্রমাণাদি দেয়। স্মরণ করা যেতে পারে, ২০০৬ সালের ওয়ান-ইলেভেনের আগে ও পরে আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপি-জামায়াত জোটকে সন্ত্রাসীদের সহযোগী হিসেবে প্রমাণ করার প্রয়াস পায়। সেভাবেই তারা আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করে। গত বছর বিএনপি-জামায়াতের লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে যে বিতর্কটি দেখা যায়, সে পরিপ্রেক্ষিতে ওইসব তথ্য ফিরে আসে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে একটি বিশেষ থিংক ট্যাংকের মাধ্যমে প্রমাণ করার প্রয়াস পায়, বাংলাদেশের বিএনপি-জামায়াত সরকার সন্ত্রাসের সহযোগী। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আওয়ামী প্রচারণা এতই প্রাধান্য পায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তি সরকার বদলের সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশকে এভাবে সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার দেশ বলে চিহ্নিত করার বিরুদ্ধে জীবনের শেষ আর্টিক্যালটি লিখেন এ জেড এম এনায়েতুল্লাহ খান। প্রফেসর আহরার আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একইভাবে প্রতিবাদ জানান। আওয়ামী লবির পরিপ্রেক্ষিতেই ওয়ান-ইলেভেনের ঘটনাবলি ঘটে। একটি অসাংবিধানিক সামরিক সরকারকে প্রতিবেশী সার্টিফিকেট দেয় যে- They are crafting democracy. আর অশ্বমেধযজ্ঞ বা ছয়টি ঘোড়া উপহারের ঘটনা সচেতন মানুষ মাত্রই জানে। বাংলাদেশকে এভাবে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র প্রমাণ করার ধারাবাহিকতায় ইসরাইলের মোসাদ ও ভারতের ‘র’-এর কথা বিশেষজ্ঞরা বলেন।

গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে ইসরাইল ও মোসাদ প্রসঙ্গটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। গণঅধিকার পরিষদের ‘তরুণ তুর্কি’ নুরুল হক নূরকে রাজনৈতিকভাবে কুপোকাত করার একটি ষড়যন্ত্র লক্ষ করা যায়। এতে বলা হয়, নূর বিদেশে ইসরাইলি প্রতিনিধির সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করেছেন। বাংলাদেশে বিষয়টি বিশেষভাবে ফলাও করে প্রচার করা হয়, সম্ভবত সরকারি মদদে। নূর যতই অস্বীকার করুক, মানুষকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করা হয় যে, আসলেই সে এসব করেছে। বিদেশে হোটেলে বা সম্মেলনে নানাজনের সাথে দেখা হয়, কথা হয়। কোনো মানুষের গায়ে তো লেখা নেই যে, সে মোসাদ বা ‘র’-এর লোক। গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা নানাবেশে ছলে কলে তাদের উদ্দেশ্য সফল করে। নূরের মতো সম্ভাবনাময় দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে শেষ করে দেয়ার জন্য হয়তো বা এটি ছিল ষড়যন্ত্র। জেনে অথবা না জেনে নূর এর ভিকটিম হয়েছেন। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতকে ব্যবহার করে এর বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। এভাবে ইসরাইল ও মোসাদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনুঘটকের কাজ করছে।

স্মরণ করা যেতে পারে, এরকম ফাঁদে পড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ২০১৬ সালের ৩০ মে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, সজীব ওয়াজেদ জয় ইসরাইলের লিকুদ পার্টির নেতা মান্দি এন সাফাদির সাথে বৈঠক করেছেন। অভিযোগটি উত্থাপন করেন তৎকালীন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক রাজনীতিবিদ আসলাম চৌধুরী। অভিযোগটিকে মিথ্যা ও বোকামিপূর্ণ বলে প্রতিবাদ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। একটি যৌথ অ্যাকাউন্টে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘বিএনপি এমনই বোকার দল, এমনকি তারা যখন মিথ্যা বলে তখনো বোকামিপূর্ণ ভুল করে। আমি চাই বিএনপি এবং সাফাদি একটি প্রশ্নের জবাব দিক। ওয়াশিংটনের ঠিক কোথায় সে আমার সাক্ষাৎ পেয়েছে? কোন অনুষ্ঠানে? অন্য কার অফিসে? প্রথম বোকামিপূর্ণ ভুল তারা করেছে কারণ, আমি গত তিন-চার বছরে ওয়াশিংটনে কোনো অনুষ্ঠান বা কারো অফিসে যাইনি। যে মিটিংগুলো আমার হয়েছে সবই সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে এবং একান্ত ব্যক্তিগত। তাহলে কোথায় তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতে পারে? আমার সাথে সাফাদির কোনো সময়ই সাক্ষাৎ হয়নি, এটি ওয়াশিংটনে বা অন্য কোনো জায়গায়ও নয়। সে (আসলাম চৌধুরী) মিথ্যা বলেছে। সে যে বিএনপির জন্য মিথ্যা বলতে সম্মত হয়েছে তা দিয়ে এও প্রমাণ হচ্ছে, বিএনপির সাথে ষড়যন্ত্রে জড়িত। না হলে আর কী কারণে সে বিএনপির হয়ে মিথ্যা বলবে? এটিও খুবই লজ্জাজনক যে, বিবিসি বাংলা আসলেই সেই ভুয়া ইন্টারভিউটি ঘটনার সত্যতা যাচাই ছাড়াই প্রচার করেছে। এ ঘটনা সংবাদের উৎস হিসেবে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্ন করেছে।’

নূর এবং জয়ের ঘটনা অথবা রটনা প্রমাণ করে, বাংলাদেশে প্রবল ইসরাইলবিরোধী সেন্টিমেন্ট রয়েছে। সেটিকে ক অথবা খ রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়। ওই সময়ে অর্থাৎ ২৩ মে আসলাম চৌধুরীকে ঢাকায় আটক করে পুলিশ। এবার উল্টো তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত মার্চে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ইসরাইলের লিকুদ পার্টির নেতা মান্দি এন সাফাদির সাথে বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশের পুলিশ দাবি করেছে, সাফাদি ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে যুক্ত। সাফাদির সাথে বৈঠক করে আসলাম চৌধুরী বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনা করেছিল। আসলাম চৌধুরীকে প্রথম দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। সেই মামলায় পুলিশ আবারো রিমান্ড চেয়েছিল। সাফাদি এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়ে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন। তার ভাষায় ‘আমরা দুজনই বিজেপির আমন্ত্রণে দিল্লি গিয়েছিলাম এবং আমাদের আলোচনা ছিল মানবাধিকার নিয়ে। কোনো রাজনৈতিক বিষয় আলোচনায় স্থান পায়নি।’ ওই বিবৃতির পরপরই একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিবিসিসহ বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাথে সাফাদির ওয়াশিংটনে আরেকটি বৈঠকের খবর ছাপা হয়েছে। জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় বরাবরই এসব বিষয় অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে সর্বশেষ আলোচিত বিতর্কিত বিবৃতিটি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে বিএনপির গোপন আঁতাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ৯ জুলাই এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন। ইসরাইল ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে বিএনপির আঁতাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি ওই অভিযোগ করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির এক সিনিয়র নেতার সাথে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার বৈঠক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। এ ধরনের দেশবিরোধী অপতৎপরতার সাথে বিএনপি সর্বদা জড়িত থাকে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য ইসরাইলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের ফোন হ্যাক করার কাল্পনিক বক্তব্য দিয়েছেন। একজন রাজনৈতিক নেতার এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য অত্যন্ত লজ্জার। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফোন হ্যাকের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। কার কার ফোন হ্যাক করা হয়েছে, তথ্য-প্রমাণসহ তা উল্লেখ না করেই এ রকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে ঢালাও মন্তব্য করা বেআইনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মনগড়া এই বক্তব্য তাদের চলমান অপপ্রচার ও গুজব-সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতা। ভুয়া ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে দেশের জনগণ ও বিদেশীদের প্রভাবিত করার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা ষড়যন্ত্রমূলক এ অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।’

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারি সব সংস্থা সুনির্দিষ্ট আইনে পরিচালিত হয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের সাহসী ও বলিষ্ঠ ভূমিকা দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। দেশবিরোধী নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড দমন ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সরকারি সংস্থাগুলো সর্বদা তৎপর। সরকার সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’ তিনি বলেন, ‘সুদীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে এ দেশের জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। জনগণের ভোটেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এবং ভবিষ্যতেও সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’ জনগণের ভোট দেয়ার সুযোগ ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপিসহ সব অপশক্তির যেকোনো ধরনের অপতৎপরতা প্রতিহত করা হবে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। জনাব কাদেরের বিবৃতির ভাষা ও সত্যতা সম্পর্কে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। তবে গণমাধ্যমে নাগরিকরা লিখেছেন, ‘ইহা সত্য! ইহা সত্য!! ইহা সত্য!!!’ এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। আমাদের বিষয় বাংলাদেশে ইসরাইল ও মোসাদের অবস্থান।

বাংলাদেশ এক অসম্ভবের দেশ। এ দেশে সরকারি ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাট হয়ে যায়। এখন শুনছি সরকারের ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে। এর ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ওয়েবসাইটে দেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যগুলো ছিল অরক্ষিত। এ বিষয়টি বিএনপি মহাসচিব উত্থাপন করেছেন। অভিযোগ করেছেন, বিএনপিসহ বিরোধী নেতাদের তথ্য ফাঁস করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে তারা ইসরাইল প্রদত্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। স্মরণ করা যেতে পারে, বিখ্যাত বা কুখ্যাত সেই আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল- বাংলাদেশ সরকার পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ থেকে ইসরাইলের ওই প্রযুক্তি ক্রয় করেছে। বোধগম্য কারণেই ইসরাইলের সাথে সরাসরি দেনা-পাওনা হয়নি।

এখন প্রশ্ন হতে পারে, যে সরকারের ক্ষমতাসীন হওয়ার পেছনে কথিত মোসাদের ভূমিকা রয়েছে, তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যে মোসাদ আওয়ামী লীগ সরকারকে গোপন তথ্য সরবরাহ করেছে, তাদেরকে টিকিয়ে রাখার জন্য, যে সরকার পাসপোর্টে ইসরাইলের বৈধতা দিতে চেয়েছে এবং অবশেষে আল-জাজিরার অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে তারা কি স্বচ্ছতার দাবি করতে পারে! তারা কি ওইসব কাজের মাধ্যমে অন্যকে দোষী করতে চেয়ে আত্মপ্রতারণার কাজটি করছে না?

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
নিক্সন চৌধুরীরর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্লে-অফের ১টি জায়গার জন্য লড়াইয়ে ৩ দল, ধোনি, কোহলি, রাহুলদের কে পাবেন টিকিট? ফরিদগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ২ জনের আত্মহত্যা মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৫২ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে কেন? মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন কুয়েতে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত রাফা অভিযান : ইসরাইলকে সতর্কবার্তা ১৩ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘অজানা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের’ পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্র আবা‌রো ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই নির্বাচনের পরেও সে কথাই বলেছে যুক্তরাষ্ট্র : ড. মঈন খান ভালুকায় বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ সর্বোচ্চ আয় করা খেলোয়াড় রোনালদো, মেসির অবস্থান কোথায়?

সকল