কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে আরো একটি বছর। ২০১৮ সালের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে ফিরে দেখা যাক কেমন ছিল এ বছরের ফ্যাশন জগৎ। হতে পারে এ বছরের অনেক ট্রেন্ড আগামী বছরও প্রাধান্য পাবে। তাই একবার আপনার ওয়ারড্রবও মিলিয়ে নিতে পারেন এ বছরের কোনো বিশেষ ফ্যাশন আপনার সংগ্রহে রাখার মতো আছে কি না।
২০১৮ সাল অন্য বছরের মতোই অনেক নতুনত্ব, আভিজাত্য ও চমক নিয়ে সারা বছর ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিকে মাতিয়ে রেখেছিল। যেমন ছিল মেয়েদের পোশাকে বৈচিত্র্য, তেমনি ছেলেদের পোশাকেও এসেছে অনেক অভিনবত্ব। বিশেষ করে ছোটদের পোশাকে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া ছিল অনেক বেশি।
অনেক ধরনের ও অনেক ডিজাইনের পোশাক দেখা গেছে শিশুদের পোশাক ট্রেন্ডে।
২০১৮ সালে ফ্যাশন জগৎ কেমন ছিলÑ এ বিষয়ে কথা বলেছেন অঞ্জন’স-এর প্রধান ডিজাইনার ও নির্বাহী শাহীন আহমেদ। তিনি বলেন, এ বছরের ফ্যাশন জগৎ ছিল বৈচিত্র্যে ভরপুর। পোশাকের রঙ, প্যাটার্ন ও ডিজাইনে বেশ বৈচিত্র্য দেখা গেছে। বিশেষ করে প্যাটার্নের ক্ষেত্রে বহু প্যাটার্ন একসাথে বাজারে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। পোশাকের ডিজাইনের ক্ষেত্রেও একই বিষয় লক্ষ করা গেছে। মূলত কামিজের প্রাধান্য ছিল। তবে লেন্থ আগের মতো একস্ট্রা লার্জ থেকে কিছুটা কমে এসেছে। সামনে ছোট আর পেছনে বড় লেন্থের কামিজ মোটামুটি জনপ্রিয় ছিল। হাতার দিক থেকে ফুলস্লিভের প্রাধান্য দেখা গেছে। তবে পাশাপাশি স্লিভলেস ড্রেসও বেশ চলেছে। ভ্যালু এডিশনের প্রাধান্য ছিল। এমব্রয়ডারি মূলত বছরজুড়েই একচেটিয়া রাজত্ব করেছে। পাশাপাশি ব্লকও দেখা গেছে।
শাড়ির ক্ষেত্রেও ব্লক আর এমব্রয়ডারি মিডিয়াম হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। সুতির পাশাপাশি তাঁত, সিল্ক, কটন সিল্ক ও কাতানের প্রচলন বেশি দেখা গেছে। তবে তুলনামূলক শাড়ির ব্যবহার অনেকটাই ছিল কম।
ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রে স্লিমফিটের বদলে রেগুলার ফিটিং প্রাধান্য পেয়েছে। পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে ফেব্রিক গুরুত্ব পেয়েছে বেশি।
শিশুদের পোশাকের ক্ষেত্রে ভেরিয়েশন ছিল উল্লেখ করার মতো। শিশুদের জন্য অনেক ধরনের পোশাক দেখা গেছে। এসব ছাড়াও ছিল ফ্যামিলি ড্রেস। অর্থাৎ একই ডিজাইনের পোশাক পরিবারের সবার জন্য করাÑ এসব পোশাকের বেশ চাহিদা দেখা গেছে।
রঙের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রঙগুলোর ব্যবহার বেশি দেখা গেছে। একই সাথে মাল্টি কালারের ব্যবহারও ছিল উল্লেখ করার মতো।
এর বাইরে দেশী দশ এ বছর প্রত্যেকেই নিজস্ব একটি করে নতুন ব্র্যান্ড ওপেন করেছে। অঞ্জনসের এ ব্র্যান্ডটির নাম ‘আর্ট অব ব্লু’। মূলত তরুণদের পোশাকেই এসব ব্র্যান্ডে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি অন্যদের ড্রেসও রয়েছে।
ফ্যাশন হাউজের বাইরে শপিংমলগুলোতে লং ড্রেসের উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মতো। বিশেষ করে উৎসবের পোশাক হিসেবে অনেকেই লং ড্রেস বেছে নিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে জমকালো কাজ ও রঙের কন্ট্রাসের মাধ্যমে পোশাকগুলোতে নতুনত্ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
২০১৮ সালের ফ্যাশন বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। অন্য বছরের চেয়ে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে বলা যায়। এ অবস্থায় আনার জন্য ফ্যাশন হাউজগুলোকে প্রচুর শ্রম দিতে হয়েছে। প্রতিনিয়ত একটা নতুনত্ব দেয়ার জন্য আমরা কাজ করেছি। দেশীয় পোশাকের বাজারকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
সব দিক বিশ্লেষণ করলে দেশীয় ফ্যাশন জগতের জন্য ২০১৮ সাল ইতিবাচক বলা যায়। আগামী বছর আমাদের পোশাক শিল্প আরো সমৃদ্ধ হবে, এ আশাই রইল।