০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ফাঁদ পেতে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

রংপুরে ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতার

অনামিকা সরকার ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট - ছবি : সংগৃহীত

বিমানে পরিচয়ের সূত্র ধরে একজন সাবেক জেল কর্মকর্তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ভর্তির ফাঁদ পেতে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আনিকা তাসনিম ওরফে অনামিকা সরকার নামের ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। তিনি ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট সেজে ওই সাবেক সরকারি কর্মকর্তার সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই-এর রংপুর পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ২ আগস্ট রংপুর মহানগরীর সিও বাজারের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রংপুর কারাগারের সাবেক সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর আনজু মিয়া (৫১)। এ ঘটনায় আনজুর স্ত্রী রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই ডায়েরির সূত্র ধরে ৩ আগস্ট পিবিআই আনজু মিয়াকে নগরীর ডিসির মোড়ের ‘সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্র’ থেকে উদ্ধার করে। তাকে উদ্ধারের পর তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকাকে দিনাজপুরে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, আনজুকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট আনিকা তাসনিম ওরফে অনামিকা ও তার চক্রের বিষয়ে নানা তথ্য। বিমানে ভ্রমনের সময় ছয় মাস আগে অনামিকার সাথে পরিচয় হয় সাবেক সরকারি কর্মকর্তা আনজুর। এ সময় আনজু তাকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। এরপর মোবাইল ফোন লেনদেনের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত পরিচয় হয়। ওই পরিচয়ের সূত্র ধরেই ঘটনার দিন ২ আগস্ট সকালে অনামিকা ফোনে আনজু মিয়াকে জেলা স্কুলের গেটে ডেকে পাঠান।

তার কথা মতো আনজু মিয়া জেলা স্কুলের সামনে এসে দেখতে পান অনামিকা একটি নোহা গাড়িতে বসে আছে। এরই মধ্যে আনুজ অনামিকার দিকে এগিয়ে আসলে দুই থেকে তিনজন লোক আনজুকে জোড় করে গাড়িতে তোলেন। এরপর তাকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী ‘সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে’। এরপর তারা আনজুর দেহ তল্লাশী করে নগদ ৪৪ হাজার ২৫০ টাকা, হাতঘড়ি, স্বর্ণের আংটি, ড্রাইভিং লাইসেন্স খুলে নেয়। কেন এসব খুলে নেয়া হচ্ছে জনতে চাইলে তারা বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকার অনুরোধে আপনাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্র আনা হয়েছে। এরপর তারা টাকা ও জিনিসপত্র অনামিকার হাতে তুলে দেন এবং তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠান। এরই মধ্যে গাড়ি নিয়ে লাপাত্বা হয়ে যান অনামিকাসহ বাকিরা।

পুলিশ কর্মকর্তা জাকির আরো জানান, বিষয়টি পরে আমাদের নলেজে এলে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আনজু মিয়াকে উদ্ধার ও ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে গ্রেফতার করি। ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়দানকারী প্রতারক অনামিকা সরকার ও অন্যান্য সদস্যরা ছদ্মবেশে এভাবে মানুষকে প্রতারণা করে আসছে। এদের নামে বিভিন্ন থানায় প্রতারণার মামলাও আছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অনামিকাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement