০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক - ছবি : সংগৃহীত

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জেরে শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেলের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেনকে দেখতে গিয়ে শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আমি যখনই দেশে ফিরেছি, আমি মনে করেছি আমার দ্রুত আসা দরকার। আমার কর্মী দেলোয়ারের পাশে থাকা দরকার এবং স্পষ্ট বার্তাটা সবার কাছে দেয়া দরকার। সে আমার দলের নেতাকর্মী হোক, সে আমার আত্মীয় হোক, যেই হোক, আমি নিশ্চিত করতে চাই, এখানে কোনো ব্যক্তিগত কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ব্যবহার করে বাড়তি কোনো সুবিধা নেয়ার সুযোগ নেই। এই পরিচয় যদি কেউ ব্যবহার করতে চায়, তাহলে আরো কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। সে রকম বার্তাই আমাদের নেত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে।

পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন এবং তিনি কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যারা এই হামলার সাথে জড়িত, তারা যারাই হোক, পরিচয় যাই হোক, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর আইন প্রয়োগ করা হয়। ইতোমধ্যে দুজন গ্রেফতার হয়েছে। আরো বাকি যারা জড়িত আছে, তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান এবং তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। আহত দেলোয়ার হোসেন পাশার চিকিৎসার জন্য আমি দেশের বাইরে থেকেই হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী একটি উন্মুক্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে দেলোয়ার রাজনৈতিক কারণে হামলার শিকার হয়েছেন, সে কারণে আমার দ্রুত আসাটা দায়িত্ব মনে করেছি। যারা এই হামলার সাথে সরাসরি জড়িত এবং পেছনে যারা আছে, তাদের যেন দ্রুত গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সাথেও কথা বলেছি। আমাদের আওয়ামী লীগের উপজেলা কিংবা পৌর শাখার যদি কেউ জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে যেন সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। যারা অন্য সহযোগী সংগঠনের আছে, তাদেরও যেন বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।

এই অপহরণ ও নির্যাতনের সাথে শ্যালক রুবেলের নাম ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বলা হলেও মামলায় আসামি হিসেবে তার নাম না থাকার বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে পলক বলেন, যিনি হামলার শিকার, তার আপন ভাই মামলার বাদি। তার সাথে আমার দল বা ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করা হয়নি। বাধা দেয়া হয়নি। তারা মামলাটা করেছে। পুলিশের কাছে মামলাটা তদন্তাধীন। কারা জড়িত তা আপনারা দেখেছেন। আদালতে দুজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। প্রাথমিক যে তথ্য-প্রমাণ, ভিডিও ফুটেজ আছে, যারাই ঘটনার সাথে জড়িত থাকুক, পুলিশ প্রভাবমুক্ত-নিরপেক্ষভাবে ব্যবস্থা নেবে।

আগামী ৮ মে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। সেখানে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ আসনের এমপি জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গত সোমবার জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে আরেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। নির্যাতনের পর বিকেলে একটি মাইক্রোবাসে তুলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর দেলোয়ারকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওই রাতে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।

শুক্রবার সকালে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেলোয়ারের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন প্রতিমন্ত্রী পলক। তখন দেলোয়ার হোসেন ঘুমাচ্ছিলেন। প্রতিমন্ত্রীর সাথে তার কোনো কথা হয়নি। এ সময় পলকের সাথে উপস্থিত ছিলেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এফ এম শামীম আহম্মদসহ চিকিৎসক ও দলীয় নেতাকর্মীরা।


আরো সংবাদ



premium cement