২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণকর পরিবর্তন

-

দেশের সর্বত্র যেসব ঘটনা ঘটছে তার কিয়দংশ দেশীয় বিভিন্ন টিভি, জাতীয় পত্র-পত্রিকা, নেটওয়ার্ক, বিদেশী অনুসন্ধানী রিপোর্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। বলতে গেলে প্রায় পুরো সমাজ আজ নানা ধরনের অবৈধ কাজকর্মে লিপ্ত। আমরা প্রত্যক্ষ করছি চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, শিক্ষাঙ্গনে অপকর্ম (সীমাহীন নৈরাজ্য যেমন- দলবাজি, নিয়োগবাণিজ্য, হলে সিটবাণিজ্য, ছিনতাই, চাঁদা-টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজি, মারপিট, ছাত্রছাত্রী নির্যাতন, ভিন্নমত দলন, গুণ্ডামি, ধর্ষণ ইত্যাদি), ঘুষ, দুর্নীতি, শেয়ার লুটপাট। সুস্থ ধারার রাজনীতির বিচ্যুতির ফলে দুর্নীতির যে প্রসার ঘটে তার মধ্যে আছে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, ব্যবসায়-বাণিজ্যে দুর্নীতি, টেন্ডারের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ, ঘুষ, চাঁদাবাজি, চাটুকারিতা, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, সঙ্কীর্ণতা, পৃষ্ঠপোষকতা, প্রভাব বিস্তার, হাটবাজার, নদী-নালা, টোল আদায় ইত্যাদিতে নিজেদের লোককে ইজারা দান, চোরাচালানি, কালোবাজারি, সরকারি ভূমি দখল, রাজনৈতিক যোগাযোগভিত্তিক সুবিধা লাভ এবং অর্থ আত্মসাৎ। এ ছাড়া বেশির ভাগ দায়িত্ববানের কর্মকাণ্ডে শপথ ভঙ্গ, নিরপেক্ষতার অভাব, সুশাসনের অনুপস্থিতি, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা, আইনের অপপ্রয়োগ ও গাফিলতি, আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু সদস্যের আইনবহির্ভূত আচরণ (চাঁদাবাজি, গায়েবি মামলাসহ নানাধরণের কার্যক্রম), ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা ও মাদকের ব্যবহার, নারী নির্যাতন, অন্যায় অত্যাচার আর মিথ্যাচার, দখলদারিত্ব প্রভৃৃতি কার্যকলাপসহ অসংখ্য অপরাধ আজ দৃশ্যমান। ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে সমাজের কেউ আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেলে প্রায়শই তাকে কেউ সন্দেহের চোখে বা অসম্মানের দৃষ্টিতে দেখে না; বরং অবৈধ অর্থ সম্পদ বাড়ার সাথে সাথে সমাজে তার সম্মানও সমানতালে বেড়ে যায়। সংবাদপত্রের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে উন্নয়ন কার্যক্রমেও দুর্নীতির বিস্তার অপ্রতিরোধ্য হওয়ায় রাষ্ট্রীয় অর্থের হরিলুট চলছে। এ থেকে সমাজ ও জাতির বাঁচার উপায় কী?
মানুষ কোনো না কোনো ক্ষেত্রে অবশ্যই দায়িত্বশীল, কেউ বা শিক্ষাক্ষেত্রে, কেউ সমাজ, গ্রাম, ইউনিয়ন বা থানা পর্যায়ে। অন্যদিকে জেলা-বিভাগ ছাড়াও বৃহত্তর রাষ্ট্রীয় পরিসরে বিচার, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি ও কর্ণধারের ওপর এই দায়িত্ব বর্তায়। দায়িত্বে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদেরকে নিরপেক্ষভাবে বিধি মোতাবেক তাদের অধীনস্থদের জবাবদিহি করাটা জরুরি।
মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ দিন দিন লোপ পাওয়ার ফলে সামাজিক সঙ্কট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। পরিবার বা সমাজে মানব শিশু যা দেখে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার আচার আচরণে- এভাবেই তারা বড় হতে থাকে। এটি অনস্বীকার্য যে, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণকর পরিবর্তনে ব্যক্তিচরিত্র মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কারণ কোনো রাষ্ট্র কল্যাণমুখী হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্ণধাররা সৎ, চরিত্রবান ও নীতি-নৈতিকতার ধারক-বাহক হন। প্রায়োগিক জীবনে সততা, ন্যায়পরায়ণতার চর্চা ও অনুসৃত না হওয়ায় নানাবিধ সঙ্কট এবং দুর্নীতি মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় পর্যায়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর জীবনযাপনের চালিকাশক্তি হচ্ছে তাকওয়া। তাই এ ক্ষেত্রে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তিচরিত্র বা মনুষ্যত্ব অর্জনে রোজা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তাকওয়ার মর্ম অনুধাবনের শিক্ষা অনুপস্থিত: মানবিক নৈতিকতাপূর্ণ শিক্ষা মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে। শুধু প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে মনুষ্যত্ব নিয়ে গড়ে উঠতে সহায়তা করে না। ইসলামী শিক্ষা মানুষের মনে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে মনের চোখকে দেখতে সাহায্য করে। মানুষের চিন্তায় প্রভব রাখে। আর এভাবে মানুষের আচরণ পরিশীলিত করে। মানুষকে যে শিক্ষা দেয়া হয় সেই জ্ঞানের আলো হৃদয়ে জ্বালানোই শিক্ষার কাজ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইসলামী শিক্ষা তথা তাকওয়া বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ খুবই সীমিত। জনসংখ্যার শতাংশ হিসাবে অল্প সংখ্যক মাত্র মাদরাসার শিক্ষায় এ বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারছে। দেশের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। এভাবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এ বিষয়ে একেবারে অজ্ঞ। অথচ তাকওয়া সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা ও জ্ঞান থাকলেই কেবল রোজার মাধ্যমে মানুষ সৎ ও পুণ্যবান হতে পারে। আর তা না হলে সমাজের প্রতিনিধি, এমপি, মন্ত্রী, কর্ণধার ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় নিযুক্ত বিচারিক, প্রশাসনিক, আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক ব্যক্তিবর্গসহ আমরা রোজা রাখব ঠিকই; কিন্তু রোজায় উপবাস করা ছাড়া আর কিছুই লাভ হবে না।
জ্ঞানার্জন যে প্রতিটি মুসলমান নর-নারীর ওপর ফরজ সেটি যেন মুসলিমদেরকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ‘বয়ফ্রেন্ড না ব্যভিচার’ শীর্ষক নিবন্ধে (ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, উপসম্পাদকীয়, নয়া দিগন্ত, ১৫ আগস্ট-২০২২) বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক পর্যায় থেকে যে নৈতিক শিক্ষা দেয়ার কথা কিংবা পাঠ্যপুস্তকে নৈতিকতার বিকাশে যেসব বিষয় পড়ার কথা সেগুলো তুলে দেয়া হয়েছে। এখন আস্তে আস্তে গোল্লায় যাচ্ছে সমাজ ও আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি। সমাজের উপরের স্তর থেকে শুরু করে একেবারে নিম্নস্তর পর্যস্ত নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে ক্রমেই পরকীয়ার প্রকোপ বাড়ছে। সেটি রাষ্ট্রদূত থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা পর্যস্ত বিস্তৃত।’ ফলে প্রচণ্ড ভ্রষ্টতা বেড়েছে ব্যক্তি জীবন ও ইবাদতে। রোজা রেখে দোকানে বসে যে ব্যক্তিটি দ্রব্যমূল্য বাড়ায় বা পণ্যে ভেজাল মেশায় বা অফিসে বসে ঘুষ খায় বা যে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসক কিংবা রাষ্ট্রীয় পদধারী মিথ্যার আশ্রয়ে জনগণকে প্রতারণা করে এমন ব্যক্তি যে তাকওয়াশূন্য এবং রোজা থেকে কোনো কিছুই লাভ করেনি তা নিয়ে কি কোনো সন্দেহ আছে? এ ধরনের সবাই তো পথভ্রষ্টতার পথ বেছে নিয়েছে। এখানে কাজ করছে তাদের তাকওয়া নিয়ে অজ্ঞতা। রোজা তাদের কাছে নিছক উপবাস ছাড়া কি অন্য কিছু উপহার দিয়েছে? অথচ তাকওয়াসম্পন্ন ব্যক্তির অদম্য অনুপ্রেরণা হলো, প্রতি মুহূর্তে সৎপথে চলার। তাদের সতর্কতা হলো সর্বপ্রকার হারাম কাজ থেকে দূরে থাকার। যারা সতর্ক নয়, বুঝতে হবে তাদের মনে তাকওয়াও নেই।

আদর্শ সমাজ গঠনের প্রধান শর্ত মানুষের আত্মশুদ্ধি। মানুষের অন্তরাত্মা যখন কালিমামুক্ত হবে তখনই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। খোদাভীতিসম্পন্ন কোনও মানুষ অপরাধ করতে পারে না। রোজা মানুষের মনে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করতে সহায়ক, কারণ রমজানের রোজাগুলো মানুষ একমাত্র আল্লাহর ভয়েই রাখে। যে কেউ ইচ্ছে করলেই লোকচক্ষুর অন্তরালে পানাহার করতে পারে এবং অন্য মানুষের সামনে নিজেকে রোজাদার বলে প্রকাশ করতে পারে; কিন্তু প্রকৃত রোজাদার তা করে না। কারণ তারা একমাত্র আল্লাহর ভয়েই রোজা রাখেন। রোজার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আল্লাহর প্রতি যে ভয় ও তাকওয়া অর্জিত হয়, তা যদি সারা বছর বিদ্যমান থাকে তাহলে তার পক্ষে কোনও অপরাধ ঘটানো অসম্ভব।
আমরা লক্ষ করি, রোজা রাখার পরও অনেকে আদর্শ, সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার ওপর জীবনের ভিত্তি রচনা করতে পারেন না, মাহে রমজানে অসত্য ও নিরর্থক কথাবার্তা পরিত্যাগ করতে পারেন না এবং রমজান মাসের বাইরে নিজের জীবনে সততা ও পবিত্রতা দেখাতে পারেন না। তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির চিন্তা করে দেখা উচিত, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস পালন করে তার কী লাভ হলো? তাই মাহে রমজানে শুধু রোজা রাখলে হবে না, অবশ্যই রোজাদারকে যাবতীয় পাপকাজ যথা পরচর্চা, পরনিন্দা, ঝগড়া-বিবাদ, সুদ-ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, হারাম, অশ্লীলতা, ব্যভিচার, বেহায়াপনা, অন্যায়-অত্যাচার, ওজনে কম দেয়া, খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেয়া প্রভৃতি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে। সুতরাং প্রত্যেক রোজাদার মুসলমান নর-নারীর জীবনের পাপকাজ থেকে মুক্ত থেকে মনুষ্যত্বের গুণাবলি অর্জনে নীতি-নৈতিকতা, সততা ও ন্যায়নিষ্ঠা প্রদর্শন করে রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য পরিপূর্ণ করার প্রত্যয়ে সজাগ থাকতে হবে। যদি এসব মানবিক গুণাবলি সৃষ্টি না করা যায়, তাহলে সে রোজা উপবাস ছাড়া আর কিছু নয়। রাসূলুল্লøাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, কেবল ক্ষুধা আর পিপাসা ছাড়া যাদের ভাগ্যে অন্য কিছুই জোটে না। তেমনি রাত্রিতে ইবাদতকারী অনেক মানুষও এমন আছে, যারা রাত্রি জাগরণ ছাড়া আর কিছুই লাভ করতে পারে না।’ (ইবনে মাজাহ) তাই রোজাদারকে রোজার আসল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্য তাকওয়ার মর্ম অনুধাবনের শিক্ষা আগে কোনো প্রতিষ্ঠানে না হয়ে থাকলে এখন তা একান্ত প্রয়োজন।
তাকওয়া অর্জনের মুবারক মাসে মুমিনদের ওপর অর্পিত হয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, সৃষ্টি হয় পুণ্য অর্জনের বিশাল সুযোগ এবং প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে মহান চরিত্র অর্জনের সুন্দর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এ অর্পিত দায়িত্ব পালন এবং সুবর্ণ সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আজ মুসলিমদের উচিত চারিত্রিক অধঃপতন থেকে নিজেদের রক্ষা করা, নেতিয়ে পড়া চেতনাকে জাগ্রত করা এবং সব প্রকার অনাহূত শক্তির বলয় থেকে মুক্ত হয়ে হক প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞা সুদৃঢ় করা, যাতে তারা রিসালাতের পবিত্র দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে এবং কুরআন নাজিলের মাসে কুরআনের মর্ম অনুধাবন করতে পারে, তা থেকে হিদায়াত লাভ করতে পারে এবং জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে এটিকে একমাত্র অনুসরণীয় মত ও পথরূপে গ্রহণ করতে পারে।

ব্যক্তিগত ও জাতীয় পর্যায়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর জীবনযাপনের চালিকাশক্তি হচ্ছে তাকওয়া। এটি এমন এক গুণ যা সমাজ জীবনে মানুষে মানুষে বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করে, সমাজে ইতিবাচক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে। তাকওয়ার অভাবে মানব চরিত্র পাপকর্মে লিপ্ত হয়ে সামাজিক জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। যার নজির বর্তমান বাংলাদেশে সর্বত্র বিরাজমান। তাই বর্তমান সমস্যাসঙ্কুল ব্যক্তিগত, পারিবারিক, রাষ্ট্রীয় এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাকওয়ার গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। মানুষের মধ্যে যতদিন ব্যাপকভাবে তাকওয়া সৃষ্টি না হবে, ততদিন সামগ্রিক কল্যাণ ও মঙ্গল আশা করা যায় না। তাই বলা যায়, তাকওয়া হলো মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনে নাজাতের মূল চাবিকাঠি।
ভালো মানুষ হওয়ার জন্য আত্মশুদ্ধি অপরিহার্য্য। সমাজের সব স্তরে শুদ্ধ মানুষই নিরাপদ ও কল্যাণ সমাজ নির্মাণ করতে পারে। বিশেষত সমাজের দায়িত্বশীল, ক্ষমতাশীল ও প্রভাব-প্রতিপত্তিসম্পন্ন লোক যারা সমাজ পরিচালনা করেন, তাদের আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। কারণ, তাদের ভালো-মন্দের প্রভাব পুরো সমাজে ছড়ায় বা প্রভাবিত করে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘শপথ মানুষের-নফসের এবং যিনি তা স্থাপিত করেছেন। অতঃপর তাকে সৎকর্ম ও মন্দকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। প্রকৃত তারাই সফল হলো যারা আত্মশুদ্ধি অর্জন করল, তারা ধ্বংস হলো যারা আত্মাকে কলুষিত করল।’ (সূরা শামস : ৭-১০)
হারাম স্পর্শ না করার শপথ করতে হবে। এক হাদিসে মহানবী সা: অনুরূপ নির্দেশনা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন দেখবে মানুষ কৃপণতা করছে, প্রবৃত্তির পেছনে ছুটছে, পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, প্রত্যেকে নিজের মতামতে মুগ্ধ, এমন পরিস্থিতিতে সংশোধনে বিশেষ মনোযোগ দাও। সাধারণ মানুষের পথ পরিহার করো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-৪৩৪১)
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয় ওহির আলোকে ভালো কাজ করা এবং শাস্তির ভয়ে খারাপ কাজ বর্জন করা। সুতরাং আত্মসচেতনতা ও আল্লাহর ভয়ই পারে মানুষকে সত্য, সঠিক ও সুন্দর পথে পরিচালিত করতে। মহান প্রভুর ভয় অন্তরে লালন করার মাধ্যমেই বান্দার বিপদসঙ্কুল পথ থেকে পরিত্রাণ সম্ভব।
সুশাসন ও ন্যায়বিচার সব নাগরিকের অধিকার, রাষ্ট্র ও সমাজের স্থিতিশীলতার জন্য এটি অপরিহার্য্য। জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা, ইনসাফভিত্তিক সমাজ বা কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বার্থে সর্বস্তরে তাকওয়া ও আত্মশুদ্ধি নিশ্চিত করা, শুদ্ধাচারের চর্চা এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসার সময়ের দাবি, যা ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরণেই সম্ভব।
লেখক : প্রফেসর ইমেরিটাস ও সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর, আইআইইউসি


আরো সংবাদ



premium cement
মুজিবনগরে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩ বাগেরহাটের রামপালে ট্রাকের চাপায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল পূর্ব আফ্রিকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা, কমপক্ষে ১৫৫ জনের প্রাণহানি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন উগ্র ইসরাইলি মন্ত্রী শেরে বাংলার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন হাত কাটা বন্দীর নেতানিয়াহুর সমালোচনা ইসরাইলের আলটিমেটাম, যা বলল হামাস রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের বিরুদ্ধে ব্লিংকেনের হুঁশিয়ারি ইতিহাস গড়া জয় পেল পাঞ্জাব

সকল