১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
চোখের আলোয়

পুরানের দিন নেই, সুধা লুটে অমরত্ব মেলে না

-

বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের একজন অর্থমন্ত্রী ছিলেন যিনি তার অপছন্দের যেকোনো বিষয়কেই বোগাস ও রাবিশ বলতেন। ব্যাংকের চার হাজার কোটি টাকা লোপাট করার কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, অঙ্কটা এমন কিছু বড় নয়। বছর দশেক আগের ঘটনাটা অনেকের মনে থাকতে পারে। কেউ হয়তো ভুলেছেন। ভুয়া ঋণ ও এলসির মাধ্যমে ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ওটাই সম্ভবত প্রথম দিককার ঘটনা। এর পর আর কেলেঙ্কারির আর কোনো শেষ থাকেনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে হলমার্কসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে মামলাও হয়নি। গ্রেফতারও না। বলা হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বলেছেন ওই অর্থমন্ত্রীই। তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে আইনি ব্যবস্থা ইত্যাদি নেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। বলেছেন, ওই বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত। ওই বক্তব্য থেকে এটি মনে হতে পারে যে, দুর্নীতিপরায়ণদের উৎসাহ দেয়া বা সহায়তা করার জন্য এটি বলা হয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় অপরাধীদের প্রসঙ্গে এমনো বলেছিলেন, ‘এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা দুষ্টু।’
শব্দটি লক্ষ করার মতো, ‘দুষ্টু’। যেন মা তার দুরন্ত ছেলের প্রসঙ্গে বলছেন, বাবাটা এমন দুষ্টু হয়েছে, ওর দস্যিপনায় আর পারা যায় না! এমন প্রশ্রয়ের বাণীতে আশ^স্ত হয়ে, নাকি চার হাজার কোটি টাকা কোনো ব্যাপার না শুনে আশকারা পেয়ে, আমাদের জানা নেই, অনতি পরেই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাণ্ডার লুট হয়ে যায়। ‘দুষ্টু’রা এবার আর ঋণ বা এলসির মতো জটিল তরিকায় যায়নি। অনলাইনে কাজ সেরে নিয়েছে।
এ ঘটনায় গভর্নরকে বলি হতে হয়েছে, কিন্তু মন্ত্রী বহাল থেকেছেন। তিনি তদন্ত করেছেন। বলেছেন, ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লোকজন জড়িত। কিন্তু তিনি অন্তত গোটা ছয়েক দেশী-বিদেশী তদন্ত রিপোর্টের একটিও প্রকাশ করেননি বা করতে দেননি। কাকে কী শাস্তি দিয়েছেন তা-ও অজানা। এসব ঘটনার ফল হয়েছে সুদূরপ্রসারী। দুর্বৃত্তদের কাছে বার্তা গেছে, ম্যানেজ করতে পারলে কোনো অপরাধই শাস্তিযোগ্য নয়। অতএব....
এই বার্তা যে ভুল ছিল না তা পরবর্তী বাংলাদেশের আর্থিক খাতের ঘটনাবলি সম্পর্কে যারা সামান্যও খোঁজখবর রাখেন তাদের জানতে বাকি নেই। একের পর এক প্রকাশ পেতে থাকে ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা নানা কায়দায় লোপাটের ঘটনা। ঘটতে থাকে বিপুল পরিমাণ টাকা তসরুফ ও বিভিন্ন কায়দায় নয়ছয় করার ঘটনা। নয়ছয় চলে সরকারি কেনাকাটায়, প্রকল্পে এবং প্রকল্পের বাইরে। বালিশকাণ্ডের মতো হাজার হাজার কাণ্ড-কারখানা আমাদের জানা। এসবের পেছনে আছেন সরকারি বড় ছোট নানা মাপের আমলা অফিসাররা। কত টাকা এভাবে লোপাট হয়েছে, কত টাকা সাহেব সুবার পকেটে গেছে তার কোনো হিসাব নেই। ব্যাংকের ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করাও অর্থ লোপাটের আরেক বড় কায়দা। তাতেও সরকারের প্রশ্রয়দানের ব্যাপারটি স্পষ্ট হয় ঋণখেলাপিদের বারবার বিশেষ সুবিধা দেবার ঘটনায়।

গত ১৪ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে ‘মাত্র’ সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকা। এই তথ্য কতটা যথার্থ বা অতিরঞ্জিত আমাদের জানা নেই। তবে দায়িত্ব নিয়ে কথা বলার অনেক সূত্রেই দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশের ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এমনটাই বলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউট (জিএফআই) বলেছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে সাত দশমিক ছয় বিলিয়ন (৭.৫৩) ডলারের সমান টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে ২০১৬ থেকে পরবর্তী সময়ে।
এই অর্থ পাচার কিন্তু আমাদের বিবেচনায় অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। একেকজন মন্ত্রী, নেতা, পাতিনেতার যদি এত বেশি টাকা হয়ে যায় যে, দেশের ব্যাংকে বা অন্য কোথাও রাখতে গেলে মন্দ লোকের নজর এড়ানোর উপায় থাকে না; তখন তাকে টাকাটা বিদেশে নিতেই হয়। না নিয়ে, উপায় কী!
বাংলাদেশে এখন তো আর টাকা চুরি হয় না। যা হয় সেটাকে চুরি বলার উপায় নেই। কারণ পুরোটাই প্রায় প্রকাশ্যে ঘটছে। পত্র-পত্রিকায় খবর বেরুচ্ছে, লোকে জানছে। ফলে পুকুরচুরি ইত্যাদি পুরনো শব্দ এখানে মানানসই নয়। এখনকার চুরি এতই বড় মাপের যে, পুকুরের উপমায় ঠিকঠাক ধরছে না। আমরা বরং এটিকে সাগর মহাসাগর লোপাটের সাথে তুলনা করতে পারি। বলতে পারি সাগর, মহাসাগর চুরি।

কিন্তু এখানেও একটি সমস্যা আছে। পুকুরের সাথে চুরি শব্দটা গেলেও, সাগরের সাথে ঠিক যেন খাপ খায় না। যারা সাগরচুরি করতে পারে তাদের সক্ষমতা এতই বিশাল যে, এর জন্য তাদের রীতিমতো মর্যাদা দিয়ে, সমীহ করে কথা বলতে হয়। বহু বছর আগে বিজ্ঞ ভাবুকেরা তেমনটাই বলে গেছেন। তারা বলেছেন, সমুদ্রের সুধা আহরণ করতে হলে তাকে মন্থন করতে হয়। আর সেটা করবেন দেবতা অসুর সবাই মিলে। সমুদ্র মন্থনে সুধা বা অমৃতসহ যা কিছু পাওয়া যাবে সবাই ভাগ করে নেবে। সমুদ্র মন্থনে পাওয়া অমৃতের ভাগ থেকে অসুরদের বঞ্চিত করার কুমতলব যে নারায়ণের ছিল সেটা সবাই জানত না। এদিক থেকে বাংলাদেশের নারায়ণেরা ভালো। তারা কাউকেই বঞ্চিত করতে চান না। শুধু নিজেরা বাঁচলেই খুশি।
আজকের বাংলাদেশ সম্ভবত একটি অরক্ষিত পৌরাণিক সমুদ্রই। দেবতা আর অসুরেরা মিলে সেই সমুদ্র মন্থনে লেগেছে। যত সুধা আছে, সব তুলে নিচ্ছে যার যেমন ইচ্ছা।
জবাবদিহির তেমন বালাই নেই। সরকারি প্রকল্প নাও, গাড়ি কেনো, টাকা বানাও। এটাই এখন দস্তুর। একটি প্রকল্প নিয়ে তার মেয়াদ বাড়ালেই ব্যয়ও কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব। আর তাতে আরো বেশি অর্থের নয়ছয় করার সুযোগ পাওয়া সম্ভব। এটিই এখন প্রায় শতভাগ সরকারি প্রকল্পের ভাগ্য। মেগা প্রকল্প তো বটেই, ছোটখাটো প্রকল্পের ভাগ্যেও একই পরিণতি ঘটছে।
সরাসরি সরকারি প্রকল্পে এমন উদাহরণ অসংখ্য যেখানে সন্দেহ করার কারণ আছে যে, জনস্বার্থে নয় বরং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের স্বার্থে সেটি গ্রহণ করা হয়েছে কিনা। যেমন, এক হাজার ২২৪ কোটি টাকায় সারা দেশে যে ৪৭০টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে জনস্বার্থ কতটা জড়িত, সংশয় জাগে। কেন সংশয়?
৪৭০টির মধ্যে এখন পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে ৪০৬টি। কিন্তু একটি ভবনও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কাছে হস্তান্তর করা যায়নি। দেশের কোথাও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচিত কমিটিই নেই। কোটি কোটি টাকায় নির্মিত ভবনগুলো তালাবদ্ধ পরিত্যক্ত স্থাপনার মতো পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। কোনো কোনো ভবনে সন্ধ্যার পর সমাজবিরোধীদের আড্ডা বসে, এমন খবরও জানা যায় গণমাধ্যমের সূত্রে। মুক্তিযুদ্ধের অগ্রনায়ক দলের সরকার ক্ষমতায় থাকতে দেশের কোথাও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচিত কমিটি না থাকা বিস্ময়কর। তার চেয়েও বিস্ময়কর হলো, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যকর করায় উদ্যোগহীনতা।

জনগণের বিপুল অর্থ পানিতে ফেলার এই আয়োজন দেখা যায় অনেক প্রকল্পেই। প্রকল্প নিয়ে কোটি কোটি টাকায় ভবন বা কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে। বাইরে থেকে দেখলে সেগুলো উন্নয়নের চোখ ধাঁধানো দৃষ্টান্ত বলে মনে হবে। কিন্তু ভেতরে শূন্য, ফাঁপা। উদাহরণ, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রায় ১৩০ কোটি টাকার সুইমিংপুল প্রকল্প। একটি সহযোগী দৈনিকের রিপোর্ট অনুযায়ী, এরই মধ্যে নির্মিত ২২টি সুইমিংপুলের ১২টিই নানা কারণে বন্ধ এবং অব্যবহৃত। ১০টি কোনোরকমে চালু আছে। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের প্রকল্প ছাড়াও বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে একই প্রবণতা কাজ করেছে বলে মনে হয়। নির্মাণ ও উদ্বোধনের পর একদিনও চালু করা যায়নি এমন সুইমিংপুলের সংখ্যাও অনেক। অনেক সুইমিংপুলেই পানি নেই, কোথাও পানি থাকলেও তা ব্যবহার উপযোগী নয়। কোথাওবা পুল চালু রাখার ব্যয় বহনের সমস্যা। মোট কথা, প্রত্যেকটি সুইমিংপুলের নির্মাণ কাজে কোনো না কোনো বড় সমস্যা আছে এবং এসব সমস্যার জন্য ঠিকাদারের বিল পরিশোধ আটকে থাকেনি। দলীয় ঠিকাদারদের সুবিধা দিতে এই প্রকল্প নেয়া হয়, এমন যদি কেউ সন্দেহ করেন, খুব কি অমূলক হবে?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রকল্পেও এমন ঘটনা কম নয়। অনেক এমন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে যেগুলো সময়মতো সম্পন্ন হবার পরও অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে বছরের পর বছর। ফলে কোটি কোটি টাকার অপচয় ঘটছে। জনগণের অর্থ পানিতে ফেলা হচ্ছে।
একটি দৃষ্টান্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের জন্য নির্মিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। প্রায় দেড় বছর আগে হলের নির্মাণকাজ শেষ হয়। দুই দফায় কেনা হয় প্রায় ৪০ লাখ টাকার আসবাবপত্র। কিন্তু হলটি চালু করা যায়নি। কারণ কর্তৃপক্ষ এখনো হলের নীতিমালাই ঠিক করতে পারেননি। কারা এখানে থাকবে, কিভাবে থাকবে, ঠিক করা হয়নি। তাই ১৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলটি অব্যবহৃত পড়ে আছে। অথচ বিশ^বিদ্যালয়ের অন্তত ছয় হাজার ছাত্রী আবাসন সুবিধার বাইরে। তাদের বেশির ভাগই ক্যাম্পাসের আশপাশে ও শহরে মেস বা কটেজ ভাড়া করে থাকেন। তাদের গুনতে হয় বাড়তি খরচ। সেই চাপটা পড়ে অভিভাবকের ওপর। এখানে দুর্নীতি হয়েছে বা অর্থের অপচয় হয়েছে সেটি বলা উদ্দেশ্য নয়। এটি হলো অপরিকল্পিত প্রকল্পের দৃষ্টান্ত।

এমন দৃষ্টান্ত একটি নয়, ভূরি ভূরি। বগুড়ার সরকারি আযীযুল হক কলেজে ছাত্রীদের আবাসন সুবিধা বাড়াতে নতুন একটি হল নির্মাণ করা হয় ২০১৮ সালে। পাঁচ কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই হলটিও পড়ে আছে। ছাত্রীরা নয়, ভবনের বিভিন্ন কক্ষে সপরিবারে বসবাস করছেন কলেজের কর্মচারীরা। এখানেও একই কারণ। হল চালু করতে আরো যা যা দরকার কর্তৃপক্ষ সেগুলো সম্পন্ন করে উঠতে পারেননি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ে একটি প্রশাসনিক ভবন থাকার পরও নতুন করে আরেকটি ভবন তৈরির প্রকল্প নেয়ার কী কারণ থাকতে পারে তা সম্ভবত পাঠক বুঝতে অপারগ নন।
গত কয়েক বছরে দেশে এমন অসংখ্য প্রকল্পের উদাহরণ তৈরি হয়েছে যেগুলো অপরিকল্পিতভাবে, কোনো রকম সমীক্ষা ছাড়াই নেয়া হয়েছে এবং প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত অকার্যকর অথবা পরিত্যক্ত হয়েছে। এর কারণ, প্রকল্প গ্রহণের সময় কর্তাদের মাথায় এর উপকারভোগীদের স্বার্থের বিষয়টি থাকে না। থাকে প্রকল্প বাস্তবায়নকারীদের স্বার্থচিন্তা। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলীয় ঠিকাদার, দলীয় সরবরাহকারী এদের কথাও মনে রাখতে হয় বড় কর্তাদের। সবাই বাঁচলে তবেই না দল বাঁচবে!
বর্তমানে দেশ যে বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সঙ্কটে পড়েছে, অর্থনীতির গতি যেভাবে মন্থর হয়ে আসছে তা কিন্তু স্বস্তিকর নয়। উন্নয়নের নামে অনাবশ্যক অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার এখনই সময়।
আবারও মহাভারতের কথা তথা সমুদ্র মন্থনের প্রসঙ্গে আসি। অসুরদের সাথে যুদ্ধে হেরে দেবতারা যখন স্বর্গরাজ্য থেকে বিতাড়িত হন, তখনই বাঁচার উপায় বাতলেছিলেন নারায়ণ। কী সেই উপায়? সেটি হলো- দেবতারা যদি অমর হতে পারেন তবেই তারা স্বর্গরাজ্য পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবেন। আর অমর হবার জন্য দরকার সুধা বা অমৃত, যা আছে সমুদ্রগর্ভে। কিন্তু এখন মহাভারতের যুগ নয়, গণতন্ত্রের যুগ। সুধা যতই খান, অমরত্ব অধরাই থাকবে। কারণ, এ যুগে অমরত্বের অন্য দাওয়াই আছে।
ই-মেল : [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement