২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘বিডিআর বিদ্রোহ’ ও কিছু কথা

-

পুরাতন দুঃখ ও শোকের করুণ বার্তা নিয়ে আসছে আমাদের জাতীয় জীবনে ঘটে যাওয়া দু’টি ঘটনার সাক্ষী ফেব্রুয়ারি মাস। এর একটি হলো ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার এবং অপরটি হলো ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধ ও বৃহস্পতিবার। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে দীর্ঘ ৬৯ বছর ধরে বহু বই, নিবন্ধ, গল্প, কবিতা ও গান লেখা হয়েছে। দেশ-বিদেশের কোটি কোটি সম্মানিত পাঠক তা পাঠ করেছেন, মতামত উপস্থাপন করেছেন কিন্তু তা থেকে আমরা কতটুকু শিক্ষা গ্রহণ করতে পেরেছি? আমার এ লেখাটি ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ ও ২৬ তারিখ সম্পর্কে।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির দূরত্ব সাতান্ন বছর চার দিন। কাকতালীয়ভাবে দু’টি ট্র্যাজেডির মাস ও দিনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল বৃহস্পতিবার আর ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দিনটিও ছিল বৃহস্পতিবার। ‘বিডিআর বিদ্রোহ’ নিয়েও বহু লেখালেখি হয়েছে। আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক পক্ষে-বিপক্ষে বহু মন্তব্য করা হয়েছে। কত পাঠকের মনে কত প্রশ্ন জেগেছে, কত দেশপ্রেমিক হায় হায় করে বুক চাপড়িয়েছে, তার হিসাব রাখে কে? সংবাদ শোনামাত্র প্রধানমন্ত্রী কেন হস্তক্ষেপ করলেন না, সেনাপ্রধান কেন ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন না, রাজনৈতিক দলের নেতারা হাতে যথেষ্ট সময় পেয়েও কেন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারলেন না, এ সব প্রশ্নের উত্তর কারো কাছে চাই না। কারণ যা ঘটে গেছে তা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে কতদূর পৌঁছা যেতে পারে? তবে সৈনিক হিসেবে আমার অন্তরে একটি প্রশ্ন। এত বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটার পর সময় পেয়েও যখন দেশপ্রেমিক ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে আমরা রক্ষা করতে পারলাম না, তখন বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে আমরা কী করতে পারব? এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে আমরা তখন কী করব? রাজনৈতিক দলের দেশপ্রেমিক ভাইয়েরা তখন যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন বা পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তবে দেশবাসী কী করবেন? এরূপ পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণ কী ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে, তার একটি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা আমাদের স্কুল কলেজের বা মাদরাসা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না দেখা দরকার। যদিও আকস্মিক আপৎকালে সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্রবাহিনীর করণীয় সম্পর্কে ঝ.ঙ.চ (ংঃধহফরহম ড়ঢ়ধৎবঃরহম ঢ়ৎড়পবফঁৎব) বা স্থায়ী আদেশনামা দেয়া আছে, তথাপি কী কারণে তৎকালীন সেনাপ্রধান সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন না, তা আজো দেশ ও জাতির কাছে রহস্যাবৃত। তখন অনেকে ঠাট্টা উপহাস বা দুঃখ করে বলাবলি করেছেন, বন্ধুরাষ্ট্র সেনাপ্রধানকে যে ঘোড়া উপহার দিয়েছিল তার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটেছে, সেনাপ্রধান সেগুলোর পরিচর্যায় ব্যস্ততার কারণে এ দিকে লক্ষ করতে পারেননি।
আমার প্রশ্নের জবাব হয়তো আজ কেউ দেবে না, তাই এ প্রশ্ন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে রেখে গেলাম। সে দিন হয়তো আমরা কেউ থাকব না। কিন্তু আমার দৃঢ়বিশ্বাস দেশের দামাল ছেলেরা একদিন এ প্রশ্নের উত্তরটাই শুধু দেবে না, বিশ্বাসঘাতকদের শিকড় এ দেশ থেকে চিরতরে উপড়ে ফেলবে ইনশা-আল্লাহ। নানা দুশ্চিন্তা ও প্রশ্ন মনে এসে আঘাত করে, এ দেশের ভবিষ্যৎ আমাদের কোনো অজানা ঠিকানায় নিয়ে নিপতিত করে তা দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। নিজের কান্না ও মনোবেদনায় তাই শোকসঙ্গীত নিজে নিজে গুন গুন করে গেয়ে অবুঝ মনটাকে প্রবোধ দিচ্ছি। হ
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা


আরো সংবাদ



premium cement
ঈশ্বরদীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড ‘মুক্ত সাংবাদিকতা চরম সঙ্কটে’ ‘রাফা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা’ ৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের

সকল