০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


দৃষ্টিপাত : ধর্মনিরপেক্ষতা মানে কী?

-

ধর্মনিরপেক্ষতা বহুল আলোচিত ও সমালোচিত একটি শব্দ। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে লেখালেখি হয়েছে/হচ্ছে প্রচুর। তা চলতে থাকবে বোধ করি ভবিষ্যতেও। ছেদ পড়বে না। মীমাংসাও হবে না। কারণ নিজেদের স্বার্থকে সামনে রেখে করা হয় এর আলোচনা ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। মূলে কেউ হাত দেয় না। হয়তো এর সমাপ্তি চায় না স্বার্থান্বেষী মহল। ধর্মনিরপেক্ষতা এক ধরনের পুঁজি। যা কেউ খোয়াতে চায় না। ধর্মনিরপেক্ষতার আভিধানিক একটা অর্থ আছে। সেটাকেই ইনিয়ে বিনিয়ে নিজেদের মতো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়।
দু’একটি নজির দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা বুঝানোর চেষ্টা করব। এক, তিনি নিরপেক্ষ ব্যক্তি। এর মানে, তিনি কারো পক্ষে নন। নন ওর পক্ষে। তিনি ব্যক্তি-নিরপেক্ষ। এই কিসিমের ব্যক্তির অস্তিত্ব মর্ত্যলোকে নেই। দুই, তিনি দল নিরপেক্ষ। এর অর্থ তিনি কোনো দলের নন। না আওয়ামী লীগের। না বিএনপির। না জাতীয় পার্টির। না জামায়াতের। না বাম ঘরানার। না ডান ঘরানার। অর্থাৎ তার দল নেই।
তাই তো একদা আওয়াজ উঠেছিল এবং তা কার্যকরও ছিল কিছুদিন। দল নিরপেক্ষ ব্যক্তি সমন্বয়ে সরকার যাকে অভিহিত করা হয় ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ তা নির্বাচন কর। সেটা হয়েছিল সর্বদলের মতামতের ভিত্তিতে। ক্ষমতাসীন হয়ে এবং অভিযোগমতে, আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকার আকাক্সক্ষায়, ক্ষমতাসীনরা একক সিদ্ধান্তে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে, এ ব্যবস্থা বাতিল করেছেন ২০১১ সালে। তিন, এবার নজর দেয়া যাক বিচারক/বিচারপতিদের দিকে। তারা নিরপেক্ষ। কারো নন। না আসামির। না বাদির। না উকিলের। বিচারকের আসনে বসলে তিনি হয়ে যান ‘কারো নন’। নিরপেক্ষ মানসিকতায় বিবেক ও আইনের আলোকে ফায়সালা (রায়) করে থাকেন। দাঁড়াল কী এর অর্থটা?
বিচারক/বিচারপতিগণ সব দল মত ধর্ম বর্ণের ব্যক্তির ঊর্ধ্বে। এর সহজ সরল মানে, তিনি কারো নন। চার, এবার আসা যাক ধর্ম নিরপেক্ষতায়। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ। এর অর্থ, তিনি কোনো ধর্মের নন। না ইসলাম আর না হিন্দু ধর্মের। না বৌদ্ধ ধর্মের। না খ্রিষ্টান ধর্মের। না অন্য কোনো ধর্মের। তা হলে তার ধর্ম থাকল কী? তার কোনো ধর্ম নেই? এর পরও যদি বলেন ধর্ম আছে, তা হলে কোন ধর্ম সেটা? ‘ধর্ম নিয়ে নিরপেক্ষ মানে, তিনি কোনো ধর্ম লালন করেন না। তিনি ধর্মহীন এক ব্যক্তি। তাহলে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে দাঁড়ায় শেষ পর্যন্ত ধর্মহীনতা। হ
শাহজাহান সামিরী


আরো সংবাদ



premium cement