২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যশোরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন

-

আমি পেশায় একজন শিক্ষক। যদিও নিজেকে এখনো একজন ছাত্রই মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স প্রথম বর্ষে ডবংঃবৎহ চড়ষরঃরপধষ ঞযড়ঁমযঃ কোর্সটি পড়াতেন সরদার ফজলুল করিম স্যার। তিনি ছিলেন বন্ধুসুলভ মনের একজন শিক্ষক। কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের সাথে স্যারের একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠল। নির্দ্বিধায় আমরা ক্লাসে স্যারকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতাম। একদিন তিনি ক্লাসে এলে কে যেন তাকে জিজ্ঞেস করলÑ স্যার, আজ আমাদের কী পড়াবেন? তিনি তার স্বভাবসুলভ বললেন, আজ আমাদের আলোচ্য বিষয়Ñ আমরা নব্বইয়ের সন্তান। সরদার স্যার ছিলেন প্রথিতযশা শিক্ষক ও দার্শনিক। তার কিছু কথা ও চিন্তাভাবনা আমাদের অনেকেরই অনুপ্রেরণা জোগায়। ‘আমরা নব্বইয়ের সন্তান’Ñ বাক্যটির ছোট কিন্তু অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
আমরা ভাগ্যবান। কারণ আমরা ‘নব্বইয়ের সন্তান’। আমরা নব্বইয়ের ডাকসু নির্বাচন, সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যজোটের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, পাঁচ দল, সাত দল ও ১৫ দলের জোটের ‘এরশাদ হঠাও’ আন্দোলন ও তাদের তিন জোটের রূপরেখা তৈরি, এরশাদের পতন, অস্থায়ী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, একানব্বইয়ের সংসদ নির্বাচন, বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সরকার গঠন, সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন প্রভৃতি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। সব আন্দোলন ও সংগ্রামের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে এসব দেখেছি। মিছিলেও অংশ নিয়েছি। প্রিয় পাঠক, আগেই উল্লেখ করেছি, স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। ১০ বছর পর সবেমাত্র গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছে। সরকারের কাছেও জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা বহুগুণ বেড়ে গেল। বিশেষ করে রংপুর, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ অঞ্চলের জনগণের দাবি, তারা বিভাগ চায়। অন্যরা কেউ পদ্মা সেতু, বিশ্ববিদ্যালয় বা সিটি করপোরেশন কিংবা স্বতন্ত্র জেলা। আমাদের যশোর জেলার অধিবাসীরাও বসে নেই। তারা বিভাগের দাবি তুলেছে। ঢাকাস্থ যশোর সমিতিও (বর্তমানে বৃহত্তর যশোর সমিতি) বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ দাবি আমন্ত্রিত মন্ত্রীদের কাছে উপস্থাপন করছে। আমাদের অনেকের সাথে যশোর সমিতির যোগাযোগ ছিল। ছাত্রদের একটি সংগঠন ছিল বৃহত্তর যশোর ছাত্রকল্যাণ সংসদ। এ সংগঠনটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলাম। যশোর সমিতির মতোই এ সংগঠনটি যশোরের বিভিন্ন দাবির ব্যাপারে বেশ সোচ্চার ভূমিকা রাখত। সবসময় মনে হতোÑ যশোরের অধিকার ও দাবি আদায়ে ভিন্ন প্লাটফর্ম দরকার। যাদের কাজ হবে সংশ্লিষ্ট দাবিতে আন্দোলন ও সংগ্রাম করা। এ ব্যাপারে আমি রুমমেট ও বৃহত্তর যশোর ছাত্রকল্যাণ সংসদের সমাজকল্যাণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম তারেকের সাথে একদিন আলাপ করলাম। আমার যতদূর মনে পড়ে, সেই আলোচনায় কয়েকটি বিষয় স্থান পায়। ১. আমরা যেহেতু ছাত্র সেহেতু শিক্ষাবিষয়ক দাবিকে আমাদের প্রাধান্য দিতে হবে; ২. আমরা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছি, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ গঠিত হবে। যশোরের পার্শ্ববর্তী খুলনা বিভাগ। তাই বিভাগের আন্দোলন আপাতত আমাদের না করাই উত্তম; ৩. সাধারণ শিক্ষার বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব দিন দিন কমে যাওয়ায় টেকনিক্যাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর জোর দিলাম; ৪. পাকিস্তান আমলে পূর্ব বাংলায় চারটি অঞ্চলে চারটি কৃষি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়েছিলাম এবং তার মধ্যে যশোরও ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর যশোরে তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির উন্নতি মানেই দেশের উন্নতি। সরকার কৃষির ওপর বেশি গুরুত্ব দেবে। যশোরের জলবায়ু ও মাটি কৃষিকাজের উপযোগী। বৃহত্তর যশোর নব্য শস্যভাণ্ডারের পরিচিতি লাভ করেছে। সবজি, ফুল ও মাছের পোনা উৎপাদনে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্থানীয় জনগণ বেশি লাভবান হবে। দেশে তখন একটিমাত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম, সরকার আরো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেবে এবং আমাদের আন্দোলন সফল হবে; ৫. এর আগেও সরকার যশোরে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।
অবশেষে দু’জনই ঐকমত্যে পৌঁছলাম, বৃহত্তর যশোরে মেডিক্যাল কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। এরপর অন্যদের সাথে আলোচনা করলাম। তারাও একমত পোষণ করল। ১৯৯৩ সালের শেষে কিংবা ১৯৯৪ সালের প্রথমে দিকের কথা। গঠিত হলো ‘বৃহত্তর যশোর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ বাস্তবায়ন পরিষদ, ঢাকা’। তরিকুল ইসলাম তারেককে আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক যথাক্রমে বি এম ইউসুফ আলী (নিবন্ধকার) ও তানভীরুল ইসলাম তানভীর এবং মিজান তেহেরী একাকে সদস্যসচিব করে ১৭-১৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। বৃহত্তর যশোরের ছাত্রনেতা, সিনিয়র ভাই ও বন্ধুরা আমাদের সহযোগিতা করতেন। বিশেষ করে ডাকসুর পরিবহন সম্পাদক জাহাঙ্গীর ভাইসহ কয়েকজন। আমাদের রুমটি হয়ে গেল অস্থায়ী কার্যালয়। প্রফেসর নুর মোহাম্মদ স্যার, প্রফেসর ড. শমশের আলী স্যার প্রমুখ ব্যক্তির দিকনির্দেশনা আমাদের অনুপ্রাণিত করত। ঢাবির ১৪টি হলে নিয়মিত সভা এবং রাজনৈতিক নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছিলাম। তারই অংশ হিসেবে ১৯৯৪ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন কৃষি, সেচ, পানি উন্নয়ন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী এম মজিদ-উল হকের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেন, আগামীতে দেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেটি হবে যশোরেই। একই বছরের ১৬ নভেম্বর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে যশোরের কৃতী সন্তান বিষয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। যশোরের আরেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের সাথেও আমরা বেশ কয়েকবার আলাপ করেছিলাম। তৎকালীন যশোর-৬ আসনের এমপি খান টিপু সুলতান (মরহুম) সংসদে যশোরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী যশোরবাসীও এ দাবির প্রতি একাত্ম প্রকাশ করে দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আমাদের সংগঠনের কার্যক্রমের সংবাদ প্রকাশে দৈনিক ভোরের ডাকের সম্পাদক বেলায়েত ভাই এবং দিনকালের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ জাফর ভাই সহযোগিতা করতেন।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমরা সবার মধ্যে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছিলাম। লাভ করেছিলাম কিছু নির্দেশনা। এখনো এটি যশোরবাসীর অন্যতম প্রধান দাবি। যশোরে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি এখনো পূরণ হয়নি। যশোরের উন্নয়নে বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠন কাজ করছে। এমনই একটি সংগঠন ‘বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদ’। তাদের ঘোষিত ১১ দফার অন্যতম দাবি হচ্ছেÑ বৃহত্তর যশোরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। দশম সংসদের যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম জাতীয় সংসদে ১৩১ বিধিতে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব এবং ৭১ বিধিতে নোটিশ দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেÑ ‘যশোরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চাই’। তার ‘সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের’ ওপর আরো ১০ জন সংসদ সদস্য প্রস্তাবকে সমর্থন করে সংশোধনী দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
এ দিকে গত বছর ২৭ জুলাই যশোর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মে. জে. (অব:) ডা: নাসির উদ্দিন জানিয়েছিলেন, যশোরের চৌগাছা উপজেলার জগদীশপুরে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি কী অবস্থায় আছে তা আমরা অনেকেই জানি না।
১৭৮১ সালে যশোর একটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এটিই বাংলাদেশের প্রথম জেলা। ১৮৬৪ সালে ঘোষিত হয় যশোর পৌরসভা। ১৮৩৮ সালে যশোর জিলা স্কুল, ১৮৫১ সালে পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে রয়েছে একটি বড় সেনানিবাস। বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স একাডেমি যশোরের মতিউর রহমান এয়ার ফোর্স বেস-এ অবস্থিত। বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ ও সামরিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এটি। বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা হতে যারা প্রস্তুত, তাদের এই প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, নীল বিদ্রোহ, তেভাগা আন্দোলন, কৃষক সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা যুদ্ধসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে যশোরবাসী। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা যশোর এবং প্রথম ডিজিটাল জেলাও যশোর। আর বহু কবি-সাহিত্যিকের জন্মভূমি যশোর। পাগলা কানাই, লালন শাহ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, গোলাম মোস্তফা, দীনবন্ধু মিত্র, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ নওশের আলী, মনোজ বসু, ডা: লুৎফর রহমান, উদয় শঙ্কর, রবি শঙ্কর, কেপি বোস, কবি ফররুখ আহমদ, এস এম সুলতান, প্রফেসর নুর মোহাম্মদ মিয়া, সৈয়দ আলী আহসান, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সৈয়দ আকরম হোসেন, ড. শমসের আলী, সুচন্দা, ববিতা প্রমুখ কীর্তিমান এ যশোরেরই সন্তান। যশোরের বেনাপোল বন্দর থেকে প্রতি বছর পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পাচ্ছে সরকার। এ ছাড়া কৃষি ও শিল্প খাত থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। সমগ্র দেশের উন্নয়নে যশোরের অবদান অনস্বীকার্য।
অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যবাহী এ জেলার গর্ব, সুনাম আর যশ সারা দেশে ছড়িয়ে আছে। এই অঞ্চলে রয়েছে শত শত মাছের খামার, মাছের পোনা উৎপাদনের খামার, রয়েছে হাঁস-মুরগির খামার। যশোরের গদখালী ও নাভারন এলাকায় রকমারি ফুলের চাষ হচ্ছে। এর বেশির ভাগই চলে আসে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এবং সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের চাহিদা মেটায়। সারা দেশে উৎপাদিত ফুলের ৮০ শতাংশই এ অঞ্চলে উৎপাদিত হয়। এখানকার চাষিরা সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগ ও চেষ্টায় ফুলচাষ শুরু করে প্রসার ঘটিয়েছেন। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সরকারি সহায়তা পেলে এখানকার ফুলচাষ জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সবজি চাষে শ্রেষ্ঠ এ অঞ্চল। তৈরি হয়েছে শস্যভাণ্ডার। খেজুরের গুড়-পাটালিতে বিখ্যাত। ধান, পাট, গম, তুলা চাষের উপযোগী এখানকার মাটি। এর পাশাপাশি কলা, কুল, পেঁপে ও আলু চাষ হচ্ছে ব্যাপক আকারে। কৃষক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসব চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হচ্ছে সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের অভাব। উৎপাদনকারীরা আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ, বিক্রি ও অন্যান্য সুবিধা পেলে কৃষি ক্ষেত্রে আরো বড় অবদান রাখতে পারতেন। সারা দেশের মোট চাহিদার ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ রেণুপোনা উৎপাদন হয় যশোরের চাঁচড়া এলাকায়। এর সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষ। এ ক্ষেত্রকে আরো সম্প্রসারিত করা গেলে যশোরের ‘মাছ চাষ’ রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত হতো। সৃষ্টি হতো কর্মসংস্থান। কৃষির এসব সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ। এ কারণে জাতীয় স্বার্থে যশোরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন জরুরি। আমাদের যে রিসোর্সগুলো রয়েছে সেগুলো নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা ও এর মাধ্যমে উন্নত জাত উদ্ভাবন এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল নিয়ে সরাসরি কাজ করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন।
কৃষিই সমৃদ্ধি, কৃষিই মুক্তি। কৃষিনির্ভর দেশ বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখতে কৃষিতে গবেষণা বাড়াতে হবে। বর্তমান সরকার কৃষির ওপর জোর দেয়ার পাশাপাশি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরও দিচ্ছে বিশেষ নজর। দেশে অনেকগুলো পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আরো অনেকগুলো রয়েছে অনুমোদনের অপেক্ষায়। যশোরের মতো জায়গায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা অনেক বেশি যুক্তিসঙ্গত।
অনেকেই জানেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসাইন্স (ঋগই) এবং অমৎড় চৎড়ফঁপঃ চৎড়পবংংরহম ঞবপযহড়ষড়মু (অচচঞ) ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। কিন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ থেকে ৪০টি ডিপার্টমেন্ট থাকে। এই দু-চারটি ডিপার্টমেন্ট আমাদের সম্পূর্ণ কৃষির উন্নয়নের জন্য কখনোই যথেষ্ট নয়। আর তাই উন্নত গবেষণার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় খুবই জরুরি।
বৃহত্তর যশোরের ঐতিহ্য, অবদান, প্রশাসনিক অবকাঠামো, ভৌগোলিক অবস্থান, প্রকৃতিক, পরিবেশ এবং প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবি, যশোরে অবিলম্বে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হোক।
লেখক : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক
bmyusuf01@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল