ইরানের ওপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সর্বাত্মক অর্থনৈতিক অবরোধ ৪ নভেম্বরে শুরু হয়েছে। ইরানের তেল ও গ্যাস ত্রেকে ল্য করে এই নিষেধাজ্ঞা। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির পর ওবামা সময়ের নিষেধাজ্ঞা তিরোহিত হয়েছিল, ইরানিরা তখন রাস্তায় রাস্তায় আনন্দ উৎসব করেছিল, ইরানের অর্থনীতিও চাঙা হয়ে উঠে। কিন্তু কয়েক মাস আগে চুক্তি থেকে ট্রাম্প সরে যাওয়ার পর ইরানকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু ও পরনির্ভরশীল করার ল্েয আবার অবরোধ শুরু করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের পররাষ্ট্র কার্যক্রমে খুবই নাখোশ। সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, আফগানিস্তানে ইরানের কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র বিরক্ত, উদ্বিগ্ন। ইরানের বর্তমান প্রশাসনকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিদায় করার জন্য পম্পেও প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন। ইরান বলেছে, এ ধরনের কথাবার্তা ‘অশোভনীয় ও নীতিবহির্ভূত’। ইরান তো আর উত্তর কোরিয়া নয়। উত্তর কোরিয়ার মতো কোনো পরমাণু বোমার বোতাম ইরানের নেই। উত্তর কোরিয়া বলেছিল, আমেরিকার কয়েকটি শহরকে ধূলিসাৎ করে দেবে। ইরানের তেমন মতা নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র যেমন ইচ্ছা তেমন বলতে কোনো শঙ্কা বোধ করছে না। ট্রাম্প মনে করছেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপের মাধ্যমে ইরানকে আলোচনার টেবিলে টেনে এনে নতুন একটি চুক্তি করতে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ ঘোষণা করেছেন ‘যারা চুক্তি একতরফা বাতিল করতে পারে, তারা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থাপনার পরিপ্রেেিত ইরানে আমেরিকার অবরোধ কতটুকু ফলপ্রসূ হয় তা বলা কঠিন। ওয়াশিংটন চেয়েছে, ইরানের তেল রফতানি শূন্যে নিয়ে আসার জন্য। এই ইচ্ছা আগেও পূরণ হয়নি, এখনো পূরণ হবে কি-না সন্দেহ রয়েছে। ইরান প্রতিদিন ২৫ লাখ ব্যারেল তেল রফতানি করে। এখানে কোনো ঘাটতি হলে সৌদি আরব তা পূরণ করে দিয়ে বিশ্ববাজার ভারসাম্য রাখবে বলেছে। যদি সত্যিই ইরান কোনো তেল রফতানি করতে না পারে, তখন সৌদি আরব ও সাথী তেল উৎপাদনকারীরা এত বড় ঘাটতি পূরণ করতে সম হবে না। তেলের বিশ্ব বাজার ব্যারেল প্রতি ৮০-১০০ ডলার বা আরো বেশি হয়ে যেতে পারে। তখন বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে, বিশ্ব বাজারে তেল ও তেলের দামের এই অস্থিরতার জন্য ওয়াশিংটন দায়ী থাকবে, সাথে রিয়াদও।
ট্রাম্প সবেমাত্র চীন ও রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছেন। এটি এক বিশাল কর্মকাণ্ড। ওয়াশিংটনের এ নিষেধাজ্ঞার কারণে চীন ও রাশিয়া ট্রাম্পের ইরান অবরোধের সাথে তাল মেলাবে এমন মনে করার কোনো যুক্তি নেই। ইতোমধ্যে তুরস্ক, চীন, রাশিয়া ও আজারবাইজান সরাসরি অবরোধ মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও ইরানকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ফ্রান্স এমন ঘোষণা দিয়েছে, অবিলম্বে ইউরোপ তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোকে স্বাধীন ও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে। পরমুখাপেী না হয়ে স্বাধীনভাবে বাাণিজ্য ও আর্থিক কর্মকাণ্ড চালাতে এখন ইইউ বদ্ধপরিকর। শুধু তাই নয়, গত ৭ নভেম্বর প্যারিসে ইউরোপীয় দেশগুলো সামরিক জোটও গঠন করেছে। আমেরিকার এখন মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়া বাকি। যদি ইইউ মুদ্রাবাজার সংহত করতে পারে, তবে বিশ্বে শক্তিশালী ডলারের অবস্থান ভেঙে পড়বে এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তর্জাতিক প্রতিপত্তি ও নিয়ন্ত্রণ মতা হারানোর জন্য ট্রাম্প প্রশাসন দায়ী থাকবে।
অবরোধের কারণে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ঐতিহাসিক পরিবর্তন আসবে। কয়েক দশক ধরে আমেরিকার ডলার বিশ্ব অর্থনীতির শক্ত ভিত হিসেবে কাজ করছে। অবরোধ ও বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে রাশিয়া, চীন, ভারত ও তুরস্ক তাদের দেশীয় মুদ্রায় ইরানের সাথে বাণিজ্য শুরু করবে বলে জানিয়েছে। তুরস্ক ডলার বাদ দিয়ে স্বর্ণকে বা ক্রিপটো কারেন্সি ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ইউরো ব্যবহার হলেও মার্কিন প্রতিপত্তি ভেঙে যাবে।
অবরোধ দেয়ার পর বেলজিয়ামের অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো ইরানি ব্যাংকগুলোকে সিস্টেমে ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে। সুইফট বেলজিয়াম অবস্থিত এবং বিশ্বব্যাংক এটি পরিচালনা করে থাকে। ইরানি ব্যাংকের সাথে ‘সুইফট’ নিয়ম ভঙ্গ করলে সাজা পেতে হবে মর্মে আমেরিকার ট্রেজারি সেক্রেটারি সতর্ক করে দিয়েছেন। সুইফট (SWIFT) আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের মেরুদণ্ড। দ্রুত ও নিরাপদ তহবিল স্থানান্তর বা লেনদেনের জন্য সুইফট কোড এক প্লাটফর্ম। বিশ্বের ২০০ দেশে ১১ হাজার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সুইফট কাজ করে। সুইফট বন্ধ করে দিলে ইরান আন্তর্জাতিক কোনো লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করতে পারবে না। ফলে ইরানের বাণিজ্য চরম তিগ্রস্ত হবে। ভিন্ন পন্থায় লেনদেন সময়সাপে, ঝুঁঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক। তবে ক’টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক নিয়ম মানবে তা ভিন্ন বিষয়।
জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুসরণে ইরানের সাথে ছয় জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু চুক্তি সম্পন্ন হয়েছিল। চুক্তির পর আমেরিকার এখন এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার অবশিষ্ট নেই। অধিকন্তু আমেরিকার সিদ্ধান্ত অন্যদেরও মানতে এখন চাপ দেয়া হচ্ছে। ইরানবিষয়ক আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় অনেক দেশ ট্রাম্পের সাথে ঐকমত্য পোষণ করে না। অন্য দেশগুলো আমেরিকাকে বাদ দিয়ে পরমাণু চুক্তি বলবৎ রাখতে চায়। ফলে শুধু এ বিষয়টিই আরেক মারাত্মক বৈশ্বিক সমস্যার জন্ম দিয়েছে।
অথচ আমেরিকার মিত্র ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপান পরমাণু চুক্তির প।ে কিছু আঞ্চলিক দেশ সৌদি আরব, আরব আমিরাত, বাহরাইন ও ইসরাইলে এর বিরোধিতা করছে। অপর দিকে তুরস্ক, ওমান, কাতার ও ইরাক চুক্তির প।ে এমন এক আঞ্চলিক অবস্থানে একতরফা অবরোধ কিছুটা বাধার মুখোমুখি হবে বৈকি।
আমেরিকার ট্রেজারি শাখা গত ১৬ অক্টোবর ইরানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও কোম্পানির বিরাট এক কালো তালিকা বানিয়ে বিভিন্ন দেশের সাথে আলোচনায় বসে। তেমন কোনো সাড়া না পাওয়ায় আমেরিকা যেন আরো একঘরে হয়ে পড়েছে। এই পলিসির পেছনে বোল্টন ও পম্পেও হাওয়া দিচ্ছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া সংবাদ দিয়েছে, ভারত ডলার ও সুইফট ঝামেলা এড়াতে ভারতীয় রুপিতে ইরানের তেলের মূল্য পরিশোধ করবে এ বিষয়ে চুক্তিও হয়েছে। ভারত ইরানের তেল ক্রেতা দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। অন্যান্য অনেক দেশ সাফ বলে দিয়েছে, তাদের তেলের ঘাটতি পূরণে তৃতীয় কোনো দেশ এগিয়ে না এলে অর্থনীতির বিরুদ্ধে কোনো ঝুঁঁকি নিতে পারবে না। পাঁচটি বৃহৎ শক্তি অর্থনীতির চালিকার জন্য ‘স্পেশাল পার্পাস ভেহিকল’ চালু করবে, যাকে বার্টার সিস্টেমও বলা হচ্ছে।
ইরান বলেছে নতুন অবরোধ কাজ করবে না। এ অবরোধ আন্তর্জাতিক যেকোনো আইনের পরিপন্থী ও অমানবিক। ইরানি জনগণের প্রতি অন্ধ শত্রুতার বশবর্তী হয়ে ট্রাম্প এ অবরোধ দিয়েছেন। ইরান এই অবরোধকে ইরানের বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক ও মানবিক যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছে। ইরান আরো জানায়, আন্তর্জাতিক আদালত অবরোধকে বেআইনি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল, ওয়াশিংটন সে দিকে ভ্রƒপে করেনি।
আমেরিকা হঠাৎ করেই ইরানের বিরুদ্ধে তার সব তুরুপের তাস টেবিলে ছুড়ে দিয়েছে, যাতে ইরান অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়, জনগণের সেবাগুলো পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়। এতে জনরোষে গণবিােভ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং অভ্যুত্থানে সরকারের পতন হতে পারে। এ জনরোষ সৃষ্টির জন্য পম্পেও গত মাসে মিডিয়ায় প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বৈধতা অর্জন করেছেন! বোল্টন এই কঠিন কাজের আঞ্জাম দিচ্ছেন। তিনি ইরানে নয়া সরকার, আমেরিকাপন্থী প্রশাসন সৃষ্টির জন্য পরিশ্রম করছেন এবং ইরান সরকারবিরোধী মুজাহেদিনে খালকের সাথে প্রকাশ্যেই কাজ করছে। অথচ বোল্টন বলে বেড়ান, ‘সরকার পরিবর্তন আমেরিকার কোনো পলিসি হতে পারে না’!
আমেরিকা ইরানে মূলত সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান ঠিক করার জন্য ইরানবিরোধী মোর্চা গঠনে তৎপর। ইরান কোনো প্রস্তুতি যেন নিতে না পারে, সে জন্য এসব অবরোধ তৈরি করে ইরানকে ব্যস্ত রাখছে আর বিশ্বব্যাপী আবহ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই পথচলার শেষ বৈঠক হলো বাহরাইনের ’মানামা ডায়লগ’। এখানে বৈঠকে ছিলেন জেমস মেটিস। মেটিসের প্রধান কাজ হলো ‘আরব ন্যাটো’কে প্রতিষ্ঠিত করা। আরবের সুন্নি দেশগুলোকে এককাতারে আনা। শিয়া-সুন্নি বিরোধকে প্রজ্বলিত রাখা। আমেরিকার ইন্টেলিজেন্স ছাড়াও ইসরাইলি গোয়েন্দারা উল্লিখিত বিষয়ে তথ্য ও করণীয় নির্দেশিকা দিয়ে অপারেশনের মাঠে সক্রিয় থেকে সহায়তা করে চলেছে। মিশন ফলপ্রসূ করার জন্য আমেরিকাকে ব্রিটেন ও ফ্রান্স সহায়তা করছে, যেন এরা এক অভিন্ন দেশ। এ অবস্থায় যুদ্ধ শুরু হলে ওই অঞ্চলে অপূরণীয় ও হিসাববহির্ভূত মানবতার তি হবে, যা এখন কারো হিসাবে আসছে না। এমন এক চরম যুদ্ধ মুসলিম সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থার সমাধি রচনা করবে।
ট্রাম্প মনে করেছিলেন, সুইফট কোডের কারণে ইরানি অবরোধে সবাই সমর্থন দেবে। কার্যত দেখা গেল, বৃহৎ শক্তিগুলো ব্যবসাবাণিজ্য রায় ভিন্নপথ অনুসরণ করছে। জেরুসালেমে রাজধানী স্থানান্তর করার সময় বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া ট্রাম্প মনে রাখলে ভালো করতেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মাত্র সাত ভোট দিয়েছিল রাজধানী স্থানান্তরের পে এবং ১২৮ রাষ্ট্র এর বিপে ছিল। এভাবে অগ্রসর হলে আমেরিকার সাথে অনেক মিত্র দেশের নিশ্চিত ভাঙন শুরু হবে।
সাম্প্রতিক বিশ্ব ইতিহাসে দেখা গেছে, আর্থিক সমতা অনেক েেত্র সামরিক সমতাকেও হার মানায়। আমেরিকা নিজেই তার উদাহরণ। আমেরিকা রিজার্ভ কারেন্সি ব্যবহার করে শত্রুদের দমনের জন্য। সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন গোষ্ঠী এর মধ্যে রয়েছে। ব্যবসায়ী ট্রাম্প তাই বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছেন চীনের ও ইরানের বিরুদ্ধে। ইরানের সাথে অর্থনৈতিক যুদ্ধে যদি ট্রাম্প পরাজিত হন, তবে পররাষ্ট্রনীতিতে অস্ত্র হিসেবে ডলারের প্রয়োগের সমাধি হবে। পম্পেও ও ট্রেজারি সচিবের সাম্প্রতিক মিডিয়ায় বক্তব্যগুলোতে তাদের এই উদ্বেগ ফুটে উঠেছে। এই যুদ্ধে সফল না হলে যুক্তরাষ্ট্র তার একটি মো হাতিয়ার হারিয়ে ফেলবে। অর্থনৈতিক যুদ্ধের যে পরিস্থিতি এখন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় না ট্রাম্প জিতে বাহবা কুড়াবেন। তখন এটা প্রমাণিত হবে, আমেরিকা আসলে একটি কাগুজে বাঘ। সুয়েজ খাল নিয়ে ব্রিটেন ৬০ বছর আগে যে শক্তিমত্তা দেখিয়েছিল, ট্রাম্পও এখন তেমন একটি কৌশলগত অস্ত্র প্রয়োগ করলেন। আমরা দেখতে পেলাম আমেরিকার অর্থনৈতিক চাপে কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রতিযোগী অর্থনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াল। এর আরো পরিণতি হতে পারে জি-৭ ভেঙে যাওয়ার মধ্য দিয়ে অথবা জি-৭ এক আনুষ্ঠানিক বিশ্রাম যাপন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার মাধ্যমে।
বৈশ্বিক নিরাপত্তা-স্থিতিশীলতার জন্য বিভিন্ন নিয়ামকের কারণে আমেরিকাকে একটি শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ট্রাম্প প্রশাসন সেখানে প্রচণ্ড ঝাঁকি দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক আক্রমণ, কুর্দিদের আইএসেরে মতো একটি টেরর গোষ্ঠীতে পরিণত করার কর্মসূচি, ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসা, অসহায় ফিলিস্তিনিদের সব সুযোগ-সুবিধা ও অনুদান বন্ধ করে ইসরাইলকে পাগলা কুকুরের মতো ছেড়ে দেয়ার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের অন্তরের ভরসাস্থল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।
সৌদি আরবকে বহু বছর ধরে জিহাদি সংগঠনগুলোকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেয়ার জন্য পশ্চিমা দেশগুলো অভিযুক্ত করে আসছে। এখন সৌদি আরব ও তার সহযোগী দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য চোখ বন্ধ করে সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে আসছে। এদের কারণেই ইয়েমেনে মানবতার মহাদুর্যোগ নেমে এসেছে। এক কোটি মানুষ এখন একবেলা খেতে পারছে না। মহিলারা বিক্রি হচ্ছে জর্দান ও ফিলিস্তিনের আশ্রয় শিবিরগুলোতে। যারা দিনে পাঁচবার মসজিদের আজানের ডাকে সালাতের জন্য ব্যস্ত থেকেছে, এখন তারা একবেলা আহারের জন্য বিদেশীদের সঙ্গ দেয়ার অপোয় থাকছে। এখন জানা যাচ্ছে, ইয়েমেনের ভয়ঙ্কর মহাপরিকল্পনার তথ্য প্রকাশের ভয়ে জামাল খাশোগিকে খুন করা হয়েছে।
ইরান তিন হাজার বছর ধরে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে ইতিহাসে প্রতিভাত হয়ে আছে। ইরান আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে এই ভয়ে ইরাককে লেলিয়ে দেয়া হয়েছিল। ইরান সবসময় আক্রান্ত হয়েছে আক্রমণকারীর ভূমিকা পালন করেনি। ইরানের জনতার বিােভ, অর্থনৈতিক মন্দা ও বিশৃঙ্খলার জন্য পশ্চিমা বিশ্ব ও ইসরাইলকে দায়ী করা হয়। ইরানকে ট্রাম্প পথহারা করতে রাস্তার কিছু দূর এগিয়ে গেছেন। কিন্তু ইরানের আগেই যুক্তরাষ্ট্র একঘরে হওয়ার পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। হ
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা